প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আমাদের দেশে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। সঠিক চিকিৎসায় বাড়িতে থেকেই করে এই রোগের নিরাময় করা সম্ভব। শুধুমাত্র বিশেষ কিছু ক্ষেত্রেই রোগীকে হসপিটালে ভর্তির প্রয়োজন হয়। দুয়েক সপ্তাহের মধ্যে রোগী ভাল হয়ে যাওয়ার পূর্ণ সম্ভাবনা থাকে। সামান্য কিছু উপায় মেনে চললে ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে আমরা নিজেদের রক্ষা করেতে পারি।
ডেঙ্গু যেহেতু একটি মশা-বাহিত রোগ, তাই মশার কামড়ের হাত থেকে নিজেকে এবং পরিবারকে বাঁচিয়ে চলতে হবে। জমে থাকা জলেই যেহেতু এডিস মশা ডিম পাড়ে ও বংশবিস্তার করে, তাই কোন অবস্থাতেই বাড়ির চারপাশে জল জমে থাকতে দেয়া যাবে না। সপ্তাহে অন্তত একবার জল জমতে পারে এমন জায়গা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। গাছের টব, ফুলদানি, পড়ে থাকা গাড়ির টায়ার কিংবা ডাবের খোসায় জমে থাকা জল ফেলে দিতে হবে।
সিটি কর্পোরেশন জনগণকে সকল প্রকার সহায়তা প্রদান করতে সর্বদা প্রস্তুত। আমরা মশক নিধন কার্যক্রমের নিয়মিত কর্মসূচির পাশাপাশি এডিস মশার লাভা ধ্বংস করতে ও প্রজননক্ষেত্র নষ্ট করতে বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। নগরীতে মাইকিং, সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়ার সাথে সাথে ড্রোনের সাহায্যে ছাদ বাগানগুলোতে নিয়মিত নজর রাখা হচ্ছে। এতে সুফলও পাওয়া যাচ্ছে। মেমন হাসপাতাল-২ এ বিনামূল্যে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ডেঙ্গুর জীবাণু শনাক্ত করার ব্যবস্থা করেছি আমরা।
মশাবাহিত সকল রোগ প্রতিরোধে আরও কার্যকর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে এবং ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা সুবিধা বাড়াতে ও সহজীকরণ করতে সরকারি, বেসরকারি সকল সংস্থা, স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ ও সুধীজনদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছি। নগরীর সকল মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ কার্যকর ব্যবস্থা চালু করতে চাই। এছাড়াও ডেঙ্গু প্রতিরোধে পাড়া, মহল্লা প্রধানদের চিঠি প্রেরণ করেছি।
নগরবাসীর সহযোগিতা ছাড়া এ কার্যক্রম পরিচালনা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার। সকলকে নিজ নিজ বাড়ির আঙ্গিনা ও আশপাশ এবং বাড়ির ছাদ নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা অত্যন্ত জরুরি। বাড়ির ভেতরে ও গৃহকোণের পরিচ্ছন্নতা কিংবা ছাদ পরিষ্কারের কাজ বাসিন্দাদেরই সচেতনতার সাথে করতে হবে। প্রয়োজনে তারা কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের সাথে যোগাযোগ করে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের বিশেষ সহায়তা নিতে পারেন। এজন্য পরিচ্ছন্নতা বিভাগ হটলাইন চালু রেখেছে। ডেঙ্গু রোগীর সেবায় কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগও হট লাইন চালু রেখেছে।
আসুন সকলেই সচেতন হই, ডেঙ্গুকে সমূলে বিনাশ করি।
লেখক : মেয়র, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন
পূর্বকোণ/মাহমুদ