চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব উদ্যোগ ও অর্থায়নে কেনা কনটেইনার স্ক্যানার দুটি চীন থেকে আগামী আগস্ট মাসের শেষ দিকে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছাবে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের কাস্টমস মোড় সংলগ্ন ৪ নম্বর গেট ও সিপিএআর গেটে স্ক্যানার দুটি স্থাপনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বোথ ওয়ে স্ক্যানেবল অর্থাৎ আমদানি ও রপ্তানি উভয় কনটেইনার স্ক্যান করতে সক্ষম হলেও স্ক্যানার দুটি ওই দুই গেটে রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার স্ক্যান করতেই ব্যবহার করা হবে। মূলত রপ্তানি কনটেইনার স্ক্যান করে শিপমেন্ট হওয়ার মাধ্যমে এই প্রথা চালুর মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর আন্তর্জাতিক আইএসপিএস কোডের শর্ত পালনে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে।
প্রকল্পের সর্বশেষ অগ্রগতি জানিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক পূর্বকোণকে বলেন, বৈশ্বিক অর্থনীতির মন্দার কারণে দেশে ডলারের সংকট চলছে। তাই বন্দরের পর্যাপ্ত নিজস্ব অর্থ থাকলেও ব্যাংকগুলো কনটেইনার স্ক্যানার কেনার জন্য এতো পরিমাণ ডলারের এলসি দিতে পারছিলো না। তবে আমরা সংকট কাটিয়ে উঠেছি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা এলসি ওপেন করতে পারবো। এর পরপরই এই মাসের শেষের দিকে একটি টিম চীন গিয়ে স্ক্যানার দুটির পিএসআই ইন্সপেকশন করে আসবেন। মূলত দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী স্ক্যানার দুটি ঠিক আছে কিনা তা দেখে রিপোর্ট দেবেন। এরপর আগামী মাসের (আগস্ট) মাঝামাঝি চীন থেকে স্ক্যানারগুলো শিপমেন্ট হয়ে যাবে যা সব ঠিক থাকলে আগামী মাসের শেষের দিকে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে।
বন্দর সচিব আরো জানান, ইতিমধ্যে রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার স্ক্যান করার জন্য দুটি গেটে নতুন দুটি স্ক্যানার স্থাপনের অবকাঠামোর কাজ শুরু হয়ে গেছে। স্ক্যানার দুটি চালু হলে চট্টগ্রাম বন্দর আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে। কারণ আন্তর্জাতিক শর্ত থাকলেও এতোদিন চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রপ্তানি কনটেইনার স্ক্যান না হয়েই শিপমেন্ট হতো। তবে এখন থেকে রপ্তানি কনটেইনার স্ক্যান হয়ে তারপর জাহাজে উঠবে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের ১২টি গেটে স্ক্যানার আছে ৭টি। এরমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের জেনারেল কার্গো বার্থ (জিসিবি) ১ নম্বর গেট এবং নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ৩ নম্বর গেটে আছে এফএস ৬০০০ সিরিজের অত্যাধুনিক ফিক্সড কনটেইনার স্ক্যানার। চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি) ২, ৪ ও ৫ নম্বর গেটে আছে একটি করে এফএস ৩০০০ মডেলের ফিক্সড কনটেইনার স্ক্যানার। এ ছাড়া সিসিটি-২ ও জিসিবি-২ নম্বর গেটে রয়েছে একটি করে মোবাইল স্ক্যানার।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বন্দরে আরো ৪টি অত্যাধুনিক ফিক্সড কনটেইনার স্ক্যানার বসানোর কাজ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। প্রথম পর্যায়ে আগামী অক্টোবর নাগাদ দুটি কনটেনার স্ক্যানার আসতে পারে চট্টগ্রাম বন্দরে। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একটি টেকনিক্যাল টিমের চার কর্মকর্তা চীন যাবেন কনটেইনার স্ক্যানার দেখতে। ইতিমধ্যে স্ক্যানার ক্রয়ের জন্য ব্যাংক এলসি করাসহ কনটেইনার স্ক্যানার ক্রয়ের কাজের অগ্রগতি ৬০ শতাংশ হয়েছে বলে জানিয়েছে এনবিআর সূত্র।
পূর্বকোণ/মাহমুদ