চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

নদীকে বাঁচাতে হবে : অধ্যাপক ড. ইদ্রিস আলী

১৭ জুলাই, ২০২৩ | ১:৪২ অপরাহ্ণ

হাজার বছরের ঐতিহ্যের ধারক কর্ণফুলী হচ্ছে দেশের অন্যতম অর্থকরী নদী। এ অঞ্চলের সমৃদ্ধি ও ঐশ্বর্যের নদী। পর্তুগীজ, মগ ও ইংরেজ বেনিয়াদের দস্যুতা থেকে বাণিজ্যের নদী। গত শতকের ষাটের দশক থেকে শিল্পচর্চা, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, উন্নয়ন অগ্রগতির কারণে দুই পাড়ে জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধির কারণে নদীটি দূষিত হতে থাকে। উন্নয়ন বিশৃঙ্খলায় নদীর সত্তা বা প্রাণস্পন্দন হারাতে থাকে।

 

দ্রুত বর্ধনশীল মহানগরীর জনসংখ্যার বৃদ্ধি হাট-বাজার ব্যবসা-বাণিজ্য শিল্প প্রকৃতির চর্চা অপচর্চায় পরিণত হয়ে নদীটির ব্যাপক ক্ষতি করে। সকলের নির্লিপ্ততায় ৭০ বছর ধরে নদীটির প্রাণস্পন্দন নিঃশেষ হতে থাকে। সৌন্দর্য-সৌকর্য, বাস্তুতান্ত্রিকতা ও পানির মানদণ্ড হারিয়েছে। হারিয়েছে স্বাভাবিক নাব্যতা এবং স্বকীয়তা। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার নির্লিপ্ততা, নদীকেন্দ্রিক ব্যবসায়ীদের দস্যুতা, অপরাজনীতি ও অপেশাদার আমলাতন্ত্র এ জন্য অনেকটা দায়ী। নগরীর আবর্জনার ৪০ ভাগ এই নদীকে গিলতে হচ্ছে। আবর্জনা প্রক্রিয়াকরণের প্রকল্পের কথা শোনা গেলেও আলোর মুখ দেখছে না।

 

কর্ণফুলীর পানি পরিশুদ্ধ করে চট্টগ্রাম ওয়াসা জনগণের পানির চাহিদা মেটাচ্ছে। কিন্তু কর্ণফুলীর সুস্থতা নিয়ে, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে কোন পরিকল্পনা নেই। অথচ আগামীতে পানির উৎসের একমাত্র নির্ভরশীল হবে কর্ণফুলী। একইভাবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ভবন নির্মাণ ও অনুমোদনে লাভ-লোভের ব্যবসায় ব্যস্ত। কর্ণফুলীর প্রাণ প্রবাহ সুরক্ষায় পরিকল্পনা নেই।

 

কর্ণফুলীর প্রতি আমাদের সংবেদনশীল হওয়া একান্ত প্রয়োজন। দীর্ঘ এই নদীটির দুই পাড়ের মানুষের আন্তরিকতা ও সংবেদনশীলতা এবং কর্ণফুলীকে সুস্থ রাখতে সকলে এগিয়ে আসতে হবে। আজ এবং আগামীর জন্য কর্ণফুলীকে বাঁচাতে হবে।

পূর্বকোণ/মাহমুদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট