ঈদের ছুটিতে নগরীর বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। ঈদের দিন বিকেল থেকে গতকাল রবিবার পর্যন্ত শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষের আনাগোনায় বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ঈদের দিন দর্শনার্থী কিছুটা কম হলেও শুক্রবার থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে।
অন্যদিকে, ঈদ আনন্দ বাড়িয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ফুল ডে ট্যুর সার্ভিস। যা গত শনিবার থেকে শুরু হয়েছে। গতকাল ঈদের চতুর্থদিনও নগরীর অন্যতম প্রধান বিনোদন কেন্দ্র চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, ফয়’স লেক, স্বাধীনতা কমপ্লেক্স (মিনি বাংলাদেশ), বাটারফ্লাই পার্ক, কাজির দেউড়ি শিশু পার্ক, জাম্বুরি পার্ক, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে হৈ চৈ করে ঈদের ছুটি উপভোগ করেন বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষ। প্রতিটি বিনোদনকেন্দ্রে শিশুদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রতিটি পার্কে শিশুদের রাইডের টিকেটের জন্য অভিভাবকদের রীতিমত দীর্ঘ লাইন ধরতে দেখা যায়।
স্বাধীনতা কমপ্লেক্সে তিন বছরের সন্তান আয়াসকে নিয়ে কিডস প্লে জোনের টিকেটের জন্য লাইন ধরেছেন বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আনিসুর রহমান। জানতে চাইলে আনিসুর রহমান বলেন, সময় ও সুযোগের অভাবে স্ত্রী ও বাচ্চাকে নিয়ে বাসা থেকে বের হওয়ায় সুযোগ পাই না। তাই ঈদের ছুটিতে স্ত্রী ও বাচ্চাকে নিয়ে স্বাধীনতা কমপ্লেক্সে (মিনি বাংলাদেশ) ঘুরতে এলাম। আয়াসও এখানে এসে অনেক উচ্ছ্বাসিত। বিভিন্ন বয়সীদের মধ্যে বাচ্চাদের বেশি এনজয় করতে দেখা যাচ্ছে এখানে।
জানতে চাইলে স্বাধীনতা কমপ্লেক্সের পরিচালক মো. হেলাল উদ্দীন বলেন, স্বাধীনতা কমপ্লেক্সটি অনেকের কাছে মিনি বাংলাদেশ নামেও পরিচিত। বাংলার চিরাচরিত শান্ত-সৌম্য প্রাকৃতিক নিসর্গ, রয়েছে স্বচ্ছ জলরাশির লেক ও সবুজের সমারোহ। একই সাথে সকল বয়সীদের চিত্তবিনোদনের জন্য রয়েছে আধুনিক সব রোমাঞ্চকর রাইড। এরমধ্যে কিডস প্লে জোন, পাইরেট শিপ, নাইন ডি ভার্চুয়াল মুভি, বাম্পার কার, রোলার কোস্টার, ডল বোটসহ আধুনিক সব রাইড রয়েছে।
ঈদের ছুটিতে বিভিন্ন বয়সী মানুষের পদচারণায় উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বরাবরের মতো চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় শিশুদের উচ্ছ্বাস দেখার মতো। গেট দিয়ে ঢুকেই বানরের খাঁচার সামনে ঢুঁ মারছে সবাই। এরপরে বাঘ, সিংহ দেখতে পাশের খাঁচায় ভিড় জমাচ্ছে তারা। অভিভাবকরা বলছেন, যান্ত্রিক জীবনে সন্তানদের খুব একটা সময় দেয়া হয় না। এই জন্য ঈদের ছুটিতে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছেন তারা।
ফয়’স লেক, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ঈদের দিন পর্যটকদের সংখ্যা কম হলেও শুক্রবার থেকে মানুষের ঢল নেমেছে। শুক্রবার থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজারের বেশি দর্শনার্থী চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করেছেন। বৃষ্টিপাত হলে এ সপ্তাহে প্রতিদিন ১০-১২ হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। চিড়িয়াখানায় বর্তমানে প্রায় ৭৩ প্রজাতির ছয় শতাধিক পশু-পাখি আছে।
নগরীর ফয়’স লেক কনকর্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্কে সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ও শহরের বাইরের এলাকা থেকে বিনোদনপ্রেমীরা ছুটে এসেছেন। লেকের শেষ প্রান্তে পানির রাজ্যে বিচরণের রোমাঞ্চকর স্থান ‘সি ওয়ার্ল্ড’ বিকালে হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া সার্কাস সুইং, বাম্পার কার, বাম্পার বোট, ফ্যামিলি রোলার কোস্টার, জায়ান্ট ফেরিস হুইল, ড্রাই স্লাইড, ফ্যামিলি ট্রেন, প্যাডেল বোট, ফ্লোটিং ওয়াটার প্লে, পাইরেট শিপের মতো মজাদার সব রাইড উপভোগ করছেন শিশুরা।
পূর্বকোণ/এসি