চট্টগ্রাম সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

সঙ্গীতের সুদিন ফেরাতে বাড়াতে হবে সরকারি-বেসরকারি সহায়তা

মরিয়ম জাহান মুন্নী

২১ জুন, ২০২৩ | ১২:০৮ অপরাহ্ণ

সঙ্গীতের আগের সেই ঐতিহ্য অনেকটা হারিয়ে গেছে। একটা সময় ছিল শিল্পীরা সঙ্গীতকে সাধনা হিসেবে নিতেন। মনের মধ্যে লালন করতেন। কিন্তু তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে তরুণ সঙ্গীত শিল্পীরা একে অর্থ আয়ের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে। যে কারণে মনের খোরাক মেঠানোর মত গান পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু নতুন নতুন গান আসছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে দিনে দিনে তারকা খেতাব অর্জন করছে। আবার কিছু দিনের মধ্যে তাদের নাম বিলীন হয়ে যাচ্ছে। সঙ্গীত জগতের বর্তমান অবস্থা নিয়ে এমন মন্তব্য করেন চট্টগ্রামের কয়েক জন সঙ্গীতশিল্পী।

 

চট্টগ্রাম শিল্পী সংসদের সভাপতি ও চট্টগ্রাম বেতারের নিয়মিত শিল্পী মো. সহিদুর রহমান বলেন, আগের সেই মৌলিক গানগুলো এখন আসছে না। তবে মাঝেমধ্যে কিছু ভালো গান যে একেবারে আসছে না তা কিন্তু না। এমন কিছু গান আমরা পাচ্ছি যেগুলো প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু এটি প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। মূলত প্রকৃত শিল্পী, সুরকার, গীতিকারের জন্ম হচ্ছে না। এর কারণ আমাদের দেশে শিল্পীদের মূল্যায়ন হয় না। তাই শিল্পীরাও আগ্রহ হারাচ্ছে। বর্তমান তরুণরা সততার সাথে সঙ্গীতের চর্চা করে না। সঙ্গীতকে আশ্রয় করে অর্থ আয়ের লালসায় লিপ্ত এ শ্রেণির শিল্পীরা। আবার আমাদের শিল্পীদেরও যে অর্থের প্রয়োজন আছে এটা সবার মাথায় রাখতে হবে। সে কারণে শিল্পীর মূল্যায়ন করতে হবে, এক্ষেত্রে বাড়াতে হবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। শিল্পের ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে, সৃজনশীল হতে হবে, চর্চা করতে হবে এবং মৌলিকতা থাকতে হবে। তবেই  আগের সুদিন ফিরবে সঙ্গীতাঙ্গনে।

 

সঙ্গীত শিল্পী শ্রেয়সী রায় বলেন, নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা সঙ্গীত প্রেমী ঠিকই। তবে তারা সঙ্গীতকে মনের মধ্যে ধারণ করে না। সঙ্গীত চর্চার বিষয়। তরুণরা ঠিক কতটা চর্চা করে এ পেশায় আসছে সেটা দেখার বিষয়। প্রকৃত অর্থে যারা সাধনার মাধ্যমে এ জগতে আসছে তারা টিকে থাকে। আবার আমাদের সঙ্গীতাঙ্গনের বড় দুর্বলতা হচ্ছে এ খাতে সরকারি-বেসরকারি কোনো বিনিয়োগ নেই। দেশে বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আছে ঠিকই, কিন্তু তাদের কোনো পৃষ্ঠপোষকতা নেই। নতুন শিল্পী যে উঠে আসবে সে সুযোগ বাংলাদেশে নেই। যে কারণে প্রকৃত শিল্পীর জন্ম হচ্ছে না। কিন্তু মৌসুমী শিল্পীর জন্ম হচ্ছে। যারা আয়ের জন্য বিয়ে বাড়ি কেন্দ্রিক গানের অনুষ্ঠানমুখী হয়ে আছে। আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কেন্দ্র করে রাতারাতি শিল্পির খেতাব অর্জন করছে, দু’দিন অর্থ আয় করছে। এতে দেখা যায় চর্চার জায়গাটা হারিয়ে যাচ্ছে।

 

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের প্রসঙ্গ টেনে শ্রেয়সী রায় আরো বলেন, আঞ্চলিক গানে চট্টগ্রামে শ্যাম সুন্দর বৈষ্ণব ও শেফালী ঘোষের মত শিল্পী আর দেখা যায় না। এতে চট্টগ্রামও সঙ্গীতের সেই আধিক্য হারিয়ে ফেলছে। সঙ্গীতের সুদিন ফেরাতে হলে সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়াতে হবে। শিল্পীদের মূল্যায়ন করতে হবে। চর্চার জায়গাটা সমৃদ্ধ করতে হবে।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট