চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

চমেকের বার্ন ইউনিটে ১০৬৫ জনবলের চাহিদা, অপেক্ষা অনুমোদনের

ইমাম হোসাইন রাজু

১৭ জুন, ২০২৩ | ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের বিশেষায়িত বার্ন ইউনিটের জন্য চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ সহস্রাধিক জনবল চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া পোড়া রোগীদের বিশেষ সেবা নিশ্চিত করতে নির্মিতব্য ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ ডিপিপি তৈরি করে পাঠানো হয় অধিদপ্তরে। নিয়মানুযায়ী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পর্যালোচনা শেষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য এই প্রস্তাব পাঠানো হবে ।  এ তথ্য নিশ্চিত করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ২২ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষণা) বরাবরে প্রস্তাবিত ১৫০ শয্যার বিশেষায়িত বার্ন হাসপাতালের জন্য ডিপিপি প্রস্তুত করে প্রেরণ করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান।

 

ডিপিপিতে হাসপাতালের নকশা, যন্ত্রপাতির তালিকা, ফার্নিচারের তালিকা, যানবাহনের তালিকা, প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকা, স্টেশনারির তালিকা, প্রকল্পের জন্য প্রস্তাবিত জনবলসহ ১৯টি বিষয়ের তালিকা প্রেরণ করা হয়। এরমধ্যে যন্ত্রপাতি, ফার্নিচারসহ বেশ কিছু প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র চীনের পক্ষ থেকে দেয়া হবে। এছাড়া জনবলের তালিকায় ২ জন চিফ কনসালটেন্ট, ১০ জন সিনিয়র কনসালটেন্ট, ৮৭ জন কনসালটেন্ট, ১ জন সহকারী পরিচালক, ৪ জন আবাসিক সার্জন, ৯ জন রেজিস্ট্রার, ১৮ জন সহকারী রেজিস্ট্রার, ১১০ জন সহকারী সার্জন, ৩১০ জন নার্স, ৪ জন দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা, ৯২ জন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ও ৪১৮ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীসহ সর্বমোট ১ হাজার ৬৫ জন জনবলের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাহিদাকৃত জনবল পাওয়া গেলে চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে কোন ঘাটতি থাকবে না। বরং পোড়া রোগীদের চিকিৎসায় আধুনিক সেবা মিলবে এ চট্টগ্রামেই।

 

এর আগে গত ৩০ মার্চ চীন সরকারের সহায়তায় দেড়শ’ শয্যার বিশেষায়িত বার্ন ইউনিট স্থাপনে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। চুক্তির আওতায় চীন সরকারের সম্পূর্ণ অনুদান ও সহায়তায় চমেক হাসপাতালে ১৫০ শয্যার বার্ন এবং প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপিত হবে। বার্ন এবং প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের মেডিকেল যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র চীন সরকার অনুদান সহায়তা হিসেবে দেবে। তবে জনবলসহ পরিচালনা করবে বাংলাদেশ সরকার।

 

ডিপিপির বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চাহিদার প্রেক্ষিতে একটি পূর্ণাঙ্গ ডিপিপি তৈরি করে প্রেরণ করা হয়েছে। তাতে প্রয়োজনীয় জনবলসহ অন্যান্য সকল কিছুর তথ্য প্রদান করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এখন অনুমোদন মিললেই বাকি কার্যক্রম শুরু হবে।’

 

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে বিশেষায়িত বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতাল নির্মাণে ২০১৪ সালে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানোর পর বিনিয়োগে আগ্রহ দেখায় চীন। সে সময় চীনের একটি প্রতিনিধি দল স্থান নির্বাচনের জন্য চট্টগ্রামে এসেছিল। তবে জায়গা নিয়ে জটিলতাসহ নানান কারণে কয়েক দফায় এসেও ফিরে যেতে হয় চীনকে। এক প্রকার অনিশ্চিত হয়ে যায় এ প্রকল্প। এ নিয়ে কয়েক দফার রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন চীন- বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। সবশেষ ২০২০ সালের ২০ জুলাই এক বৈঠকে চীন সরকারের পক্ষ থেকে চট্টগ্রামে ‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ বার্ন হাসপাতাল’ নির্মাণের প্রস্তাব দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত। ফলে পুনরায় আশার আলোর দেখা মেলে। বর্তমানে চমেকের প্রধান ছাত্রাবাস সংলগ্ন হাসপাতালের আওতাধীন গোঁয়াছি বাগান এলাকাতেই এ হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। জায়গাটিতে ইতোমধ্যে হাসপাতাল নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট