চট্টগ্রাম বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৪

সর্বশেষ:

‘সড়কে অবৈধ গাড়ি চললেই ব্যবস্থা, মে মাসেই আটক ৪৯৫টি’

নিজস্ব প্রতিবেদক

৬ জুন, ২০২৩ | ৯:৩০ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক-দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এন.এম নাসিরুদ্দিন বলেছেন, প্রচণ্ড গরমে সড়কে যানজট নিরসন, সড়ক নিরাপত্তা, সড়ক শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা স্বাভাবিক রাখতে ট্রাফিক পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গত মে মাসে বাকলিয়ার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. মনিরুজ্জামানের টিম শাহ আমানত সেতু (নতুন ব্রিজ) ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে রুটপারমিট, ফিটনেস ও কাগজপত্রবিহীন অবৈধ ৪৯৫টি বাস-ট্রাক, সিএনজি অটোরিকশা, টেম্পো, ম্যাক্সিমা, হিউম্যান হলার, পিকআপ ও গ্রাম সিএনজি আটক করেছে। এছাড়া বিভিন্ন অপরাধে ১৭৪টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে। এজন্য ট্রাফিক পুলিশের উপর ক্ষিপ্ত হওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে সিএমপি পুলিশ  কমিশনারের নির্দেশ অনুযায়ী সড়কে অবৈধ গাড়ি চলাচল করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মঙ্গলবার (৬ জুন) সকাল ১১টায় নগরীর আইস ফ্যাক্টরি রোডস্থ ট্রাফিক-দক্ষিণ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে  পরিবহন শ্রমিক সংগঠন নেতৃবৃন্দের সাথে ‘সড়ক নিরাপত্তা ও সড়ক শৃঙ্খলা’ বিষয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপ-পুলিশ কমিশনার এন.এম নাসিরুদ্দিন বলেন, সড়কে বৈধ গাড়ির আড়ালে ফিটনেস ও রুট পারমিটবিহীন গাড়ি অবৈধভাবে চলাচল করছে। পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে এসব গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মে মাসে ৪৯৫টি অবৈধ গাড়ি আটকের জের ধরে টিআই (বাকলিয়া) মো. মনিরুজ্জামানের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তার বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলনসহ নানান ধরনের ষড়যন্ত্র শুরুর পাশাপাশি আগামী ৮ জুন বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টা কর্মবিরতির আহবান করে চট্টগ্রাম অটো টেম্পু অটো রিক্সা শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ। সমন্বয় পরিষদের নেতাদের উদ্দেশ্যে ডিসি এন.এম নাসিরুদ্দিন বলেন, আপনারা অবেধ গাড়ি চালাবেন আমরা ট্রাফিক পুলিশ আটক করলেই ‘চাঁদাবাজ’ এটা ঠিক না। আপনারা আটক ৪৯৫টি গাড়ির মধ্যে একটি বৈধ গাড়ি দেখান যেটি অন্যায়ভাবে আটক করছে, তাহলে আমি যে ট্রাফিক পুলিশ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।

পরে ডিসির আপত্তির বিষয়ে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ তাদের ভুল বুঝতে পেরে আগামী বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টার কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন।

গাড়ির মামলার জরিমানা সংক্রান্ত বিষয়ে পরিবহন শ্রমিক নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের আলোকে ডিসি নাসিরুদ্দিন বলেন, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন এন্ড ফাইন পেমেন্ট সিস্টেমে অটো জরিমানা নির্ধারণ হয়। একই অপরাধে গাড়ির দ্বিতীয়বার মামলা হলে তার ফাইন ডাবল হয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানবিক বিবেচনায় সিঙ্গেল জরিমানা আদায় করা হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম বৈষম্য না রেখে প্রত্যেক বিভাগীয় শহরে জরিমানার বিষয়টি সমন্বয় করার জন্য পুলিশ কমিশনারের মাধ্যমে জানানো হবে।

কর্ণফুলী নতুন ব্রিজ এলাকায় টার্মিনাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গাড়ি বেড়েছে, কিন্তু রাস্তা বাড়েনি। এখানে নির্দিষ্ট কোন টার্মিনাল না থাকার কারণে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা গাড়িগুলোতে যাত্রী উঠা-নামার কারণে মাঝে মাঝে সড়ক শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়। টার্মিনাল গড়ার বিষয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে অবগত করতে পারেন। তবে নতুন ব্রিজ এলাকায় অবৈধ মাইক্রো স্ট্যান্ড দেখা গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।  সড়ক শৃঙ্খল, সড়ক নিরাপত্তা ও জনগণের নির্বিঘ্ন যাতায়াত নিশ্চিত করার জন্য ট্রাফিক বিভাগ খুবই আন্তরিক। সড়কে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যদি কোন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের টিআই (প্রশাসন) অনিল বিকাশ চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আকরামুল হাসান, সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ রানা, টিআই (বাকলিয়া) মো. মনিরুজ্জামান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন পূর্বাঞ্চল কমিটির সভাপতি মৃণাল চৌধুরী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রামের সভাপতি মোহাম্মদ মুছা, সাধারণ সম্পাদক অলি আহমদ, শ্রমিক নেতা জানে আলম, মো. জাহিদ হোসেন, মো. শফি, মো. হারুনুর রশিদ, আহমদ হোসেন, মো. খলিলুর রহমান প্রমুখ।

পূর্বকোণ/আরআর/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট