প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার প্রতিবাদে নিন্দা জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৪৫ অধ্যাপক। মঙ্গলবার (২৩ মে) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতি এ তথ্য জানা যায়। বিবৃতি দেয়া অধ্যাপকরা আওয়ামী-বামপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন হলুদ দলের সদস্য।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৯ মে রাজশাহীর পুঠিয়ায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ প্রকাশ্য জনসভায় বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘কবরস্থানে পাঠানোর’ যে হুমকি দিয়েছেন তা এক ধরনের মধ্যযুগীয় বর্বরতা ও সন্ত্রাসবাদ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ, (হলুদ দল) এর পক্ষে ৪৫ জন অধ্যাপক প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার এই বর্বরোচিত হুমকির তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা প্রকাশ করছেন। লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে প্রকাশ্যে কোন ব্যক্তি বা রাজনৈতিক নেতাকে হত্যার হুমকি একটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। যা সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য, রাজনৈতিকভাবে বিপজ্জনক এবং আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনা শুধু একজন ব্যক্তি নন, তিনি একটি স্বাধীন সার্বোভৌম দেশের প্রধানমন্ত্রী, অর্থনৈতিক উন্নয়নের রূপকার এবং আত্মর্যাদাশীল বাংলাদেশের বিশ্বস্বীকৃত রাষ্ট্রনায়ক।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রকাশ্যে রাজনৈতিক সমাবেশে তাকে হত্যার হুমকি মানে গণতন্ত্রকে হত্যার হুমকি, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেয়ার হুমকি, বাংলাদেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক মুক্তির আন্দোলনকে থামিয়ে দিয়ে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য সৃষ্টির হুমকি। জীবিত কোন ব্যক্তিকে ‘কবরস্থানে পাঠানোর’ হুমকি আমাদেরকে মধ্যযুগীয় বর্বরতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বাংলাদেশ আফগানিস্তান নয়! তালেবানি কায়দায় আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক সভ্য সমাজে মধ্যযুগীয় বর্বরতা ফিরিয়ে আনার এই অপচেষ্টা কোনভাবেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ এবং গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বাংলাদেশের সচেতন সমাজ মেনে নিতে পারে না। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার পরিবর্তে সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন করার যে অপচেষ্টা তা একটি রাজনৈতিক দলের দেউলিয়াপনা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে উসকে দেয়ার নীল নকশা। বিএনপি’র মত একটি রাজনৈতিক দলের কাছে জাতি কখনোই এটা আশা করতে পারে না। আমরা আশা করি বিএনপি এই ধরনের নেতিবাচক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিহার করে গণতান্ত্রিক পথে চলবে এবং ইতিবাচক রাজনীতি করবে। গঠনমূলক সমালোচনা ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদ পরিহার করে গণতন্তের পথে হাঁটবে এবং জাতি গঠনে শক্তিশালী ভুমিকা পালন করবে। আমরা আরও আশা করব বিএনপি’র পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে এই হত্যার হুমকির জন্য জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা হবে এবং উক্ত নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করবে। আমরা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানাবো অতি দ্রুত এই সন্ত্রাসী বক্তব্য নিয়ে প্রকাশ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেয়ার জন্য উক্ত নেতাকে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির বিধান করবে।
এই ৪৫ অধ্যাপক হলেন- প্রফেসর ড. আবদুল্লাহ মামুন, ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, প্রফেসর ড. মাহবুবুল হক, ডিন, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ, প্রফেসর ড. আবদুল্লাহ আল ফারুক, ডিন, আইন অনুষদ, প্রফেসর ড. রাহমান নাসির উদ্দিন, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, প্রফেসর ড. আবুল মনছুর, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, প্রফেসর মোঃ রুহুল আমিন, লোকপ্রশাসন বিভাগ, প্রফেসর ড. আনোয়ার সাঈদ, বাংলা বিভাগ, প্রফেসর ড. হেলাল উদ্দিন, ফলিত রসায়ন ও ক্যামিকৌশল বিভাগ, প্রফেসর ড. সজীব কুমার ঘোষ, মার্কেটিং বিভাগ, প্রফেসর ড. জামাল উদ্দিন, ফাইনান্স বিভাগ, প্রফেসর ড. মো. আফতাব উদ্দিন, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসান, সমাজতত্ত্ব বিভাগ, প্রফেসর ড. দানেশ মিয়া, ইন্সটিটিউট অব ফরেস্ট্রি ও এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, প্রফেসর ড. নাজনীন নাহার ইসলাম, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, প্রফেসর ড. আদনান মান্নান, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, প্রফেসর ড. অলক পাল, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, প্রফেসর ড. ফরিদুল আলম, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, প্রফেসর ড. বশির আহমেদ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, প্রফেসর নির্মল কুমার সাহা, আইন বিভাগ, প্রফেসর ড. রকিবা নবী, আইন বিভাগ, প্রফেসর ড. জ্ঞান রত্ন, পালি বিভাগ, প্রফেসর ড. এনায়েত হোসেন, দর্শন বিভাগ, প্রফেসর ড. শ্যামল রঞ্জন চক্রবর্তী, পদার্থবিদ্যা বিভাগ, প্রফেসর ড. এ এইচ এম সেলিমুল্লাহ, অর্থনীতি বিভাগ, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, প্রফেসর ড. দেবাশীষ পালিত, রসায়ন বিভাগ, প্রফেসর ড. উদিতি দাস, ইন্সটিটিউট অব ইডোকেশন এন্ড রিসার্চ, প্রফেসর ড. মহীউদ্দিন, ইন্সটিটিউট অব ইডোকেশন এন্ড রিসার্চ, প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র মজুমদার, একাউন্টিং বিভাগ, প্রফেসর ড. এস এম রফিকুল আলম, আরবি বিভাগ, প্রফেসর ড. মোহাম্মাদ সহিদ উল্যাহ, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, প্রফেসর ড. ইন্দ্রজিৎ কুন্ডু, সমাজতত্ত্ব বিভাগ, প্রফেসর ড. অনুপম দাস গুপ্ত, ফাইন্যান্স বিভাগ, প্রফেসর ড. ফারাহ জাহান, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, প্রফেসর ড. দ্বৈপায়ন সিকদার, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ, প্রফেসর ড. এ কে এম রেজাউর রহমান, পদার্থবিদ্যা বিভাগ, প্রফেসর ড. অঞ্জন কুমার চৌধুরী, জামাল নজরুল ইসলাম গণিত ও ভৌত বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র, প্রফেসর ড. সাইদুল ইসলাম সোহেল, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ ৩৯. প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জালাল আহাম্মদ, গণিত বিভাগ, প্রফেসর ড. শারমিন সুলতানা, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, প্রফেসর ড. সুপ্তিকনা মজুমদার, সংস্কৃত বিভাগ, প্রফেসর ড. ফয়সাল ইসলাম চৌধুরী, রসায়ন বিভাগ, প্রফেসর ড. মোস্তফা আলী, ফাইন্যান্স বিভাগ, প্রফেসর মোহাম্মদ ফয়সাল, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ ও প্রফেসর ড. ফারাহ জাহান, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ
পূর্বকোণ/রায়হান/রাজীব/পারভেজ