শিল্পের কাঁচামালে শুল্ক ছাড়, ব্যাংক ঋণ সহজ, ঝামেলাবিহীন ও ঝুঁকিমুক্ত করার নীতি চালু, অন্যান্য দেশের ন্যায় ব্যাংক ঋণের সুদ সিঙ্গেল ডিজিটে আনা, ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে শিল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া, আয়করের রেয়াত দেওয়া ও তরুণদের জাতীয় অর্থনীতিতে কাজে লাগানোর সুযোগ রেখে নতুন বাজেট প্রণয়নে গুচ্ছ প্রস্তাবনা দিয়েছেন মোস্তফা-হাকিম গ্রুপ পরিচালক মো. সরওয়ার আলম। পূর্বকোণ প্রতিনিধির সঙ্গে ‘বাজেট ভাবনা’ নিয়ে আলোচনায় তিনি এসব বিষয় তুলে ধরেন। সরওয়ার আলম বলেন, দেশীয় শিল্প রক্ষায় বিদ্যুৎ গ্যাস পানির সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন হওয়া উচিত। শিল্পের কাঁচামালের উপর শুল্ক ছাড়ের ব্যবস্থা করা দরকার। শিল্পবান্ধব আমদানি নীতি প্রণয়ন করা দরকার। একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আয়করের রেয়াত দেওয়া উচিত এবং ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে শিল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের শিল্পখাত এখনো অনেকাংশে প্রাথমিক ও মধ্যবর্তী পণ্য উৎপাদন করে। বাংলাদেশের শিল্পখাত একদিকে যেমন দেশের বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে, অন্যদিকে কৃষিখাতের উৎপন্ন পণ্য কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে দেশের সম্পদের সদব্যবহার নিশ্চিত করে। তবে এখানে শিল্পগুলো মূলত স্বল্প পুঁজিনির্ভর ও ততোটা আধুনিক প্রযুক্তি ভিত্তিক নয়।
ফলে এসব শিল্পসমূহের গড় উৎপাদন খরচ আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে প্রতিযোগিতা করার উপযুক্ত হয়ে উঠেনি। তাই এক্ষেত্রে সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষকতা ও সংরক্ষণমূলক নীতি একান্ত প্রয়োজন।
তরুণদের প্রসঙ্গে সরওয়ার আলম বলেন, তরুণ উদ্যোক্তা গড়ে তুলতে হলে যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। মার্কেটের ফিজিবিলিটি স্টাডি করে সে অনুযায়ী তরুণ উদ্যোক্তাদের চাহিদা সম্পন্ন পণ্য উৎপাদনের জন্য উৎসাহ যোগাতে হবে। প্রয়োজনে তরুণ উদ্যোক্তার উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতের জন্য সরকারি সংস্থা টিসিবিকে কাজে লাগাতে হবে। একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তরুণ উদ্যোক্তাদের শুন্য হারে ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য তরুণদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বাড়ানো, স্বল্পসুদে বা বিনা সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা ও তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে বিভিন্নরকম শুল্করেয়াত সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা করা জরুরি।
ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রসঙ্গে সরওয়ার আলম আরো বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাকা বেগবান করতে দেশের ঋণের প্রবাহ সহজ, বাধামুক্ত ও ঝুঁকিমুক্ত করাটা নীতিগত দিক থেকে সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে প্রাইভেট বিনিয়োগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তাই বেসরকারি ঋণের সুদের হার মিনিমাম ও প্রতিযোগিতা সহায়ক হবে- এটাই প্রত্যাশিত।
উন্নত দেশের ঋণে সুদের হার খুবই কম। এমনকি আমাদের আশেপাশের দেশগুলোতেও ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটের মধ্যে রয়েছে। তাই প্রতিযোগিতা ও সক্ষমতা বিবেচনায় দেশের ঋণের সুদের হার সবসময় সিঙ্গেল ডিজিট হওয়াটাই বাঞ্চনীয়।
পূর্বকোণ/পিআর