চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

মোছলেম উদ্দিনের মৃত্যুতে দুই ‘সংকটে’ আ. লীগ

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন 

১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম-৮ আসনের (বোয়ালখালী, চান্দগাঁও, বায়েজিদ, পাঁচলাইশ) সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে শূন্য হচ্ছে জাতীয় সংসদের এই আসনটি। ৯০ দিনের মধ্যে উপ-নির্বাচনের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। একই সঙ্গে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদও শূন্য হয়ে পড়েছে। উপ-নির্বাচনে প্রার্থিতা মনোয়নন ও সভাপতি পদে নতুন নেতৃত্ব- দুই সংকটে পড়েছে আওয়ামী লীগ। ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি উপ-নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মোছলেম উদ্দিন আহমদ। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন মহাজোট প্রার্থী জাসদের মঈনউদ্দিন খান বাদল। ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর বাদলের মৃত্যুর পর এই আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান গতকাল পূর্বকোণকে বলেন, ‘৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার জন্য আইনি বিধান রয়েছে। জাতীয় সংসদের স্পিকার আসন শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করবেন। এরপর উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন নির্বাচন কমিশন।’ তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনের উদ্যোগ নেবেন বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম-৮ আসনে দ্বিতীয়বারের মতো উপ-নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে আওয়ামী লীগে সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। ইতিমধ্যে অনেকেই প্রার্থিতার জন্য দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন। এই আসনে এখন কে মনোনয়ন পাচ্ছেন, তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা ও হিসাব-নিকাশ। কারণ চলতি বছরের শেষ অথবা ২০২৪ সালের শুরু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে উপ-নির্বাচনে প্রার্থিতা নির্ধারণ করা হবে বলে জানান দলীয় সূত্র। এজন্য ডাকসাইটের নেতাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে বলে অভিমত আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের।
সংসদ সদস্য ছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন বর্ষীয়ান-প্রবীণ এ রাজনীতিবিদ। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের অভিভাবক বলা হয় তাঁকে। তাঁর মৃত্যুতে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদও শূন্য হয়ে পড়েছে। তাঁর স্থলাভিষিক্ত কে হচ্ছেন তা নিয়েও নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে।
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর সর্বশেষ দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সভাপতি পদে মোছলেম উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক পদে মফিজুর রহমান পুনরায় মনোনীত হন। মোছলেম উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকায় এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়নি। তবে প্রাথমিকভাবে কমিটি গঠনের খসড়া তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তবে সভাপতি পদে পূর্ণাঙ্গ সভাপতি নাকি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনোনীত করা হবে, সেই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উদ্যোগ নেওয়া হবে।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজুর রহমান পূর্বকোণকে বলেন, ‘মোছলেম ভাই বেঁচে থাকাকালীন দুই জনে বসে কমিটির খসড়া তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকায় তা চূড়ান্ত করা হয়নি। এখন কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মতো কমিটি গঠন প্রক্রিয়া করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সভাপতি পদে তাঁর (মোছলেম উদ্দিন আহমদ) নাম উল্লেখ করে কমিটি জমা দেওয়া হবে। তাতে তাঁর মৃত্যুবরণের কথাও উল্লেখ থাকবে। জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে সহ-সভাপতি মোতাহেরুল ইসলামকে সভাপতি মনোনীত করে কমিটি জমা দেওয়া হবে।’
ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান শেষে কমিটি গঠনের বিষয়ে এগোবেন বলে জানান সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। তিনি বলেন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের অভিভাবক হারিয়ে নেতাকর্মীরা এখনো শোকে মূহ্যমান। কমিটি গঠন ও উপ-নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে চিন্তা-ভাবনা করবে।

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট