চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি, ২০২৫

সর্বশেষ:

৩ বছরে গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে ২০০ শতাংশ

১১ এপ্রিল, ২০২২ | ১২:২৯ অপরাহ্ণ

ইফতেখারুল ইসলাম

তিন বছরের ব্যবধানে গো-খাদ্যের প্রধান ৬টি আইটেমের দাম বেড়েছে প্রায় ২০০ শতাংশ। গো-খাদ্যের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধিতে দিশেহারা সাধারণ খামারিরা। গরু বিক্রি করে গো-খাদ্যের দাম পরিশোধ করতে গিয়ে অনেক খামারি নিঃস্ব। সাধারণ খামারিরা এই খাতে সরাসরি ভর্তুকি দাবি করে বলেন, কিছু মিল মালিক এবং মজুদদারদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ডেইরি শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে।

একাধিক দুগ্ধ খামারির সাথে আলাপকালে তারা জানান, ২০১৯ সালের পর থেকে ব্যাপকহারে বাড়তে থাকে গো-খাদ্যের দাম। কোন কারণ ছাড়াই কিছুদিন অন্তর দাম বাড়ে। খাদ্যের বাড়তি দাম মেটাতে না পেরে অনেক খামারি নিঃস্ব হয়ে গেছে। কেউ কেউ খামার বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ খামারে একদিনের উৎপাদিত দুধ বিক্রি করে ওই দিনের গরুর খাবার এবং শ্রমিকের বেতন দেয়া যায় না। বাড়তি খরচ মেটানোর জন্য গরু বিক্রির কোন বিকল্প তাদের হাতে নেই। এই শিল্পকে বাঁচাতে সরকারের উচিত ভর্তুকি মূল্যে গো-খাদ্য বিক্রি করা, একইসাথে যারা সিন্ডিকেট করে মূল্য বাড়িয়েছে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা। নতুবা একসময় অধিকাংশ খামার বন্ধ হয়ে যাবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৯ সালে ৫০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা সয়াবিনের খৈলের দাম ছিল ১৭০০ টাকা। অর্থাৎ কেজি ৩৪ টাকা। ২০২১ সালে তা বেড়ে হয় প্রতি বস্তা ২২০০ টাকা (কেজি ৪৪ টাকা)। ২০২২ সালে তা বিক্রি হচ্ছে প্রতি বস্তা ৩২০০ টাকা (কেজি ৬৪ টাকা)। এই সময়ের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ১৮৮.২৩ শতাংশ। একইভাবে তিন বছরের ব্যবধানে গমের ভূষির দাম বেড়েছে ১৮৫.৮৯ শতাংশ। ২০১৯ সালে ৩৫ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা গমের ভূষি বিক্রি হয় ৭৮০ টাকায়। বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ১৪৫০ টাকায়। রাইস পলিশ বা আটা কুঁড়োর দাম বেড়েছে ১৮৮.৫৭ শতাংশ। ২০১৯ সালে এই কুঁড়োর ৫০ কেজি বস্তার দাম ছিল ৭০০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩২০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি কেজি কুঁড়োর দাম ১৪ টাকা থেকে বেড়ে ২৬.৪০ টাকা হয়েছে। ৪০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা মসুর ডালের ভূষির দাম ৪৩০ টাকা থেকে বেড়ে এক হাজার টাকা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি কেজির দাম ১০.৭৫ টাকা হতে বেড়ে ২৫ টাকা হয়েছে। একই সময়ে সরিষার খৈলের দাম প্রতি কেজি ২৫ টাকা থেকে বেড়ে ৪০ টাকা হয়েছে এবং ভূট্টার কেজি ১৬.৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৪ টাকা হয়েছে। তিন বছরের ব্যবধানে এই ৬টি আইটেমের গড় মূল্য বেড়েছে ১৯৩.৭৫ শতাংশ।

পতেঙ্গা এলাকার মোল্লা ডেইরির সত্ত্বাধিকারী মো. হানিফ পূর্বকোণকে বলেন, গত জানুয়ারিতে এক বস্তা পাতা ভূষির দাম ছিল ১২৫০ টাকা। তিন মাসের ব্যবধানে এপ্রিলে এসে তা ১৫৫০ টাকায় ঠেকেছে। ভূট্টার গুঁড়ার বস্তা ১৩২০ টাকা থেকে বেড়ে ১৮৫০ টাকা হয়েছে। মুগ পাউডার প্রতি বস্তা ১৪৪০ টাকা থেকে বেড়ে ১৮২০ টাকা হয়েছে। কাজী ফিড ৭৭৫ টাকা থেকে বেড়ে ৮৯০ টাকা হয়েছে। মটর ভূষি ৭৮৯ টাকা থেকে বেড়ে ৯০০ টাকা হয়েছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোন কারণ ছাড়াই গো-খাদ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে। তা নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোন উদ্যোগ নেই।

 

পূর্বকোণ/এস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট