‘আমার ছেলে মো. বেলাল হোসেন (২২) গরু চোর নয়। একটি মেয়ের সাথে প্রেম করার অপরাধে তাকে পরিকল্পিতভাবে গরু চোর সাজিয়ে হত্যা করা হয়। আমি এ হত্যাকা-ের বিচার চাই’। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বেলা ১২টায় সীতাকু- প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন কুমিরা কোটপাড়ার বাসিন্দা আবুল হাসেম। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার ছেলে বেলাল শিপইয়ার্ডের শ্রমিক। তার সাথে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামের ইব্রাহিমের বাড়ির ইসমাইল হোসেনের মেয়ে ঝিনুকের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। ঝিনুকের চাচাত ভাই রবিনের সাথে বন্ধুত্বের সূত্রে এই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠায় সেখানে যাতায়াত করত সে। গত ২৪ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে ঐ এলাকায় একটি মেহেদী অনুষ্ঠানে যাবার কথা বলে রবিন (২১) বেলালকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর দিন
সকালে খবর পাই গরু চোর অপবাদ দিয়ে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জেনেছি মৃত্যুর আগে আমার ছেলে পানি খেতে চাইলে তারা গোবর গুলিয়ে তার
মুখে দেয়। তার হাতে ও পায়ে পেরেক মেরে গেঁথে রাখা হয়েছিলো, শুধু একটি মেয়ের সাথে প্রেমের কারণে আমার ছেলেটাকে এমন করুণভাবে হত্যা করার পর পুলিশের সহযোগিতা পাইনি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি চায়ের দোকানে কাজ করি। অত্যন্ত দরিদ্র হওয়া সত্বেও সুরতহাল তৈরীকারী সীতাকু- থানার এস.আই ফারুক পোস্টমর্টেমের নামে ১৫ হাজার টাকা নেয়। কিন্তু আমাদেরকে ছেলের লাশের কাছে যেতে দেয়নি। পরে পুলিশ গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে বলে মামলা দায়ের করেছে। সেখানে হত্যাকারীদের বাঁচানোর জন্য আমার ছেলের নাম পরিচয় গোপন করে তাকে অজ্ঞাত হিসেবে দেখিয়েছে। যারা ‘দায়ী’ তাদেরকে করা হয়েছে গণপিটুনির সাক্ষী। এছাড়া আমরা হত্যা মামলা দায়ের করতে চাইলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। এই হত্যাকা-ের সুষ্ঠু বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বেলালের মা উলেমা খাতুন, নুরুচ্ছাপা, শাহআলম, আলী আক্কাস, সুমি আকতারসহ আত্নীয় স্বজন ও গ্রামবাসী।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে এস.আই ফারুকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখন মামলা রেকর্ড হচ্ছিল তখনো আমরা যুবকটির নাম পাইনি তাই অজ্ঞাত পরিচয়ে মামলা করেছি। আর তিনি পোস্টমর্টেমের জন্য ১৫ হাজার টাকা নেবার বিষয়টি অস্বীকার করেন।