ইফতার মাহফিল ও ঈদ পুনর্মিলনীর মাধ্যমে দলের ঝিমিয়ে পড়া নেতাকর্মীদের চাঙা করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। রমজানে ইফতার মাহফিল নিয়ে ব্যস্ত থাকার পর এবার তাঁরা নেতাকর্মীদের নিয়ে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঈদের পর মাঠে ঘুরে দাঁড়াতে চায় বিএনপি। দলের সিনিয়ন নেতাদের বেশিভাগ এবারও ঈদ করবেন স্ব-স্ব এলাকায়। এরমধ্যে বেশিরভাগ ঈদের নামাজ আদায় করবেন নগরীর জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদে। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর অনেকটা হতাশায় মুষড়ে পড়েন বিএনপি নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীদের অনেকে রাজনীতিতে তেমন সক্রিয় ছিল না। এ অবস্থায় দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচিগুলো এতদিন কোনোভাবে শেষ করা হতো। কিন্তু চলতি রমজান মাসে অনেকটা ঘুরে দাঁড়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিএনপির অধিকাংশ সিনিয়র নেতা আসনওয়ারি, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দোয়া ও ইফতার মাহফিল করে দলের নেতাকর্মীদের অনেকটা সক্রিয় করে তুলেন। এরপর তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর বিএনপি বড় ধরণের ইফতার মাহফিল আয়োজন করে। এতে দলের নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। ইফতারের পর অন্যান্য বছরের মতো এবারও ঈদ পুনর্মিলনী করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিএনপির নেতারা। এতে নেতাকর্মীদের উপস্থিত হওয়ার জন্য স্ব-স্ব নেতার পক্ষ থেকে দাওয়া দেওয়া হচ্ছে। চট্টগ্রামে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য কয়েকজন হলেন, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান, দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী আলহাজ জাফরুল ইসলাম
চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, নগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, সহ সভাপতি আলহাজ আবু সুফিয়ান প্রমুখ। বিএনপির সিনিয়র নেতা ও তাঁদের অনুসারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নেতাদের বেশিভাগ এবার স্ব-স্ব এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ঈদের নামাজ পড়বেন নগরীর উত্তর কাট্টলীস্থ বাড়িতে। ঈদের পরদিন তিনি নগরীর মেহেদীবাগস্থ বাসায় গরু মেজবানি দিয়ে ঈদ পুনর্মিলনী করে নেতাকর্মীদের খাওয়াবেন বলে জানিয়েছেন দৈনিক পূর্বকোণকে তাঁর একান্ত সচিব মোহাম্মদ সেলিম কবির। তবে এ বছর ঈদের পরদিন মেজবান আয়োজন করছেন না দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান। মেজবানের অর্থ দিয়ে হামলা-মামলার শিকার দলের অসহায় নেতাকর্মীদের সহযোগিতা দিবেন বলে জানিয়েছেন তাঁর একান্ত সচিব নুরুল আজিম হিরু। দলের অপর ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করে হাটহাজারীস্থ গ্রামের বাড়ি যাবেন। পরদিন নগরীর চট্টেশ্বরী রোডস্থ ‘ডালিয়া কুঞ্জে’ গরু মেজবানি দিয়ে দলের নেতাকর্মীদের আপ্যায়ন করবেন। ঈদের পরদিন নগরীর রীমা কমিউনিটি সেন্টারে মেজবান আয়োজন করছেন মহানগর বিএনপির সভাপতি ও দলের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন।
দৈনিক পূর্বকোণকে তিনি বলেন, ‘ঈদের দিন তিনি পশ্চিম বাকলিয়া বাসায় থাকবেন। পরদিন তিনি নগরীর জামাল খানস্থ রীমা কমিউনিটি সেন্টারে দলীয় নেতাকর্মীদের জন্য ঈদ পুনর্মিলনী আয়োজন করবেন। এতে গরু মেজবানি দিয়ে নেতাকর্মীদের আপ্যায়ন করবেন।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম ঈদের দিন থাকবেন গ্রামের নোয়াখালীর মাইজদী উপজেলায়। পরদিন তিনি চট্টগ্রামে এসে নেতাকর্মীদের নিয়ে ঈদ পুনর্মিলনী করবেন।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী আলহাজ জাফরুল ইসলাম চৌধুরী নগরীর জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করে গ্রামের বাড়ি বাঁশখালী যাবেন। পরদিন তিনি নগরীর বাসায় দলের নেতাকর্মীদের সাথে ঈদ পুনর্মিলনী করবেন। তবে এবার শারীরিক অসুস্থতার কারণে চট্টগ্রামে ঈদ করছেন না বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার। তিনি ঢাকায় ঈদের নামাজ আদায় করবেন। মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর ও সিনিয়র সহ সভাপতি আলহাজ আবু সুফিয়ান অন্যান্য বারের মতো এবারও নগরীস্থ বাসায় ঈদ উদযাপন করবেন বলে জানা গেছে। পরদিন তাঁরা বাসায় দলের নেতাকর্মীদের সাথে ঈদ পুনর্মিলনী করবেন।