চট্টগ্রাম রবিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫

দৃশ্যপট পাল্টাচ্ছে প্রার্থী তালিকায়

চট্টগ্রামে বিএনপির মনোনয়ন

দৃশ্যপট পাল্টাচ্ছে প্রার্থী তালিকায়

মোহাম্মদ আলী

২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে চট্টগ্রামে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা নিয়ে একের পর এক দৃশ্যপট পাল্টাচ্ছে। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ডআকবরশাহ) আসনে বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী কাজী সালাউদ্দিনের পরিবর্তে লায়ন মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরীর নাম উঠে এসেছে।

 

গতকাল শনিবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে শেষদিনের বৈঠকে এ আসনে বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী কাজী সালাউদ্দিনের পরিবর্তে ডাকা হয়েছে লায়ন মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরীকে। বৈঠকে ডাকার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ডআকবরশাহ) আসনে বিএনপির লায়ন আসলাম চৌধুরীর মনোনয়ন চ‚ড়ান্ত হলো। এখন আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয়া অপেক্ষামাত্র।

 

বিএনপির একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ডআকবরশাহ) আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তন হচ্ছে। এ আসনে গত ৩ নভেম্বর প্রথম দফায় ঘোষিত বিএনপির প্রার্থী কাজী সালাউদ্দিনের পরিবর্তে এবার লায়ন মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরীকে চ‚ড়ান্ত মনোনয়ন দিচ্ছে দল। এজন্য শনিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রার্থীদের বৈঠকে কাজী সালাউদ্দিনের পরিবর্তে লায়ন মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরীকে ডাকা হয়েছে।

 

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম পূর্বকোণকে বলেন, রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে বিএনপি প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করেছে। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে ভার্চুয়ালি দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নানা দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।

 

প্রসঙ্গত, গত ৩ নভেম্বর প্রথম দফায় ২৩৬টি আসনে এবং ৪ ডিসেম্বর আরও ৩৬টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি। ফলে মোট ২৭২টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দলটি। গত বুধবার থেকে ধারাবাহিকভাবে তিনদিন সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নানা দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। গতকাল শনিবার ছিল এই বৈঠকের শেষদিন।

 

এদিকে, চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর, পতেঙ্গা, ডবলমুরিং, ইপিজেড ও সদরঘাট) এবং চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া-আংশিক) আসন দুটিতে এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিএনপি। দুই দফায় চট্টগ্রামের ১৬ আসনের মধ্যে ১৪টিতে প্রার্থী ঘোষণা করলেও এ দুই আসনে প্রার্থী ঘোষণা দেয়নি দলটি। এ দুই আসনের প্রার্থিতা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। তাতে সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ঘুম হারাম অবস্থা এখন। এ দুই নির্বাচনী আসনে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা হতে পারে। তাতেই অপেক্ষা করছে চমকের। এ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। হিসাব মেলাতে ব্যস্তসময় পার করছেন রাজনৈতিক বোদ্ধারাও।

 

বিএনপির একাধিক নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর, পতেঙ্গা, ডবলমুরিং, ইপিজেড ও সদরঘাট) আসনটি দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নিজ আসন। তবে তিনি এবার মনোনয়ন পান চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী-হালিশহর-খুলশী) আসনে। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ছাড়াও চট্টগ্রাম-১০ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের পুত্র তরুণ রাজনীতিবিদ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পাট শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাঈদ আল নোমান এবং মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী।

 

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম-১০ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়ায় বর্তমানে চট্টগ্রাম-১১ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী হলেন দুই বিএনপি নেতা। তারা হলেন- বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু ও নগর বিএনপির সদস্যসচিব নাজিমুর রহমান। তাছাড়া চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া-আংশিক) আসনটি নিজেদের শরিক এলডিপিকে ছেড়ে দিতে পারে বিএনপি। এক্ষেত্রে এলডিপি’র প্রার্থী হতে পারেন দলটির সভাপতি ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রমের পুত্র অধ্যাপক ওমর ফারুক। তিনি এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য। এর আগে ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম নিজে আর নির্বাচন করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাই বিএনপি আসনটি এলডিপিকে ছেড়ে দিলে সেখানে অধ্যাপক ওমর ফারুকের নির্বাচন করার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। তবে এ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন বেশ কয়েকজন। তারা হলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ডা. মহসিন জিল্লুর করিম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও চন্দনাইশ উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আনোয়ার চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট নাজিম উদ্দিন চৌধুরী এবং বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলাম রাহী সিআইপি।

 

চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুই দফায় ইতোপূর্বে বিএনপির ১৪ আসনের ঘোষিত প্রার্থীরা হলেন- চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) সরোয়ার আলমগীর, চট্টগ্রাম-৩ (সদ্বীপ) মোস্তফা কামাল পাশা, চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড-আকবরশাহ) কাজী সালাউদ্দিন, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী ও বায়েজিদ) ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) হুম্মাম কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও, বোয়ালখালী ও পাঁচলাইশ-আংশিক) এরশাদ উল্লাহ, চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী-হালিশহর-খুলশী) আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) এনামুল হক এনাম, চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) সরওয়ার জামাল নিজাম, চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) নাজমুল মোস্তাফা আমিন এবং চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা।

 

পূর্বকোণ/ইবনুর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট