
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি গুছিয়ে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ভোটার তালিকা, ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষ নির্ধারণ আগে-ভাগেই শেষ করেছে। ইতিমধ্যে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল তালিকাও প্রস্তুত করা হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পরই শুরু হবে প্যানেল কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এবার আগে-ভাগেই ভোটের মাঠে নেমে পড়েছেন দলীয় প্রার্থী ও রাজনৈতিক নেতারা। শুরু করেছেন অনানুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা। পোস্টার-ব্যানার ও বিলবোডে টাঙিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন প্রার্থীরা। শহর ও গ্রামে সমানতালে চলছে জনসভা-জনসংযোগ।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে ভোটের প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন জামায়াত প্রার্থীরা। নভেম্বর মাসে প্রথম ধাপে প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি। দ্বিতীয় ধাপে আরও চার আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দলটি। দুই দফায় ১৪ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি। বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে অনানুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছেন প্রার্থীরা। এছাড়া ইসলামী ঘরানার আরও একাধিক দলের প্রার্থী ভোটের মাঠে রয়েছেন।
এবার নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগেই ভোটের মাঠে নেমে পড়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থী ও দলীয় নেতাকর্মী-সমর্থকেরা। জাতীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের প্রতীক নির্ধারিত থাকায় আগে-ভাগেই প্রচার-প্রচারণা করার সুবিধা রয়েছে দলীয় প্রার্থীদের। চলতি সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা বলেছেন নির্বাচন কমিশন।
গত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে। প্রতিটি নির্বাচন নিয়ে দেশ-বিদেশে বিতর্ক রয়েছে। কোনটি একতরফা, কোনটি নিশিরাতের ভোট এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচিতি পেয়েছে ‘আমি আর ডামি’ ভোট হিসেবে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে। সরকার ও নির্বাচন কমিশন একটি মডেল নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে। এতে ভোটারদের মধ্যেও অনেকটা স্বস্তি ফিরে আসতে শুরু করেছে। ভোটারদের মধ্যে দীর্ঘদিন পর ভোটপ্রদানের আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।
প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন: আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬ আসনে ভোটের প্রস্তুতি অনেকটা গুছিয়ে নিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। ভোটগ্রহণে অর্ধ লক্ষাধিক কর্মকর্তার তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর প্যানেল কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বশির আহমেদ।
চট্টগ্রাম জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বশির আহমদ বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সংস্থা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জমা দেওয়া তালিকা যাচাই-বাছাই করে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হবে।’
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছে সরকার ও নির্বাচন কমিশনার। চলতি সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। সেই লক্ষ্য নিয়েই ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়।
ইসির কর্মকর্তারা বলেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটার, ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। চট্টগ্রামের ১৬ আসনে ভোটার সংখ্যা ৬৬ লাখ ১৬ হাজার ৭১২ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৯৬৫টি। ভোটকক্ষের সংখ্যা ১২ হাজার ৩৯৮টি।
নির্বাচন কর্মকর্তারা বলেন, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া নির্বাচনী কার্যক্রমে বড় কর্মযজ্ঞ। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকেরা এই দায়িত্ব পালন করেন। নির্বাচনের কয়েক মাস আগে থেকেই কর্মকর্তাদের তালিকা প্রস্তুত করার কার্যক্রম শুরু হয়।
পূর্বকোণ/ইবনুর