চট্টগ্রাম শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

তিক্ততা ভুলে হোয়াইট হাউসে হাস্যোজ্জ্বল ট্রাম্প-মামদানি

অনলাইন ডেস্ক

২২ নভেম্বর, ২০২৫ | ২:৪৮ অপরাহ্ণ

নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২১ নভেম্বর) হোয়াইট হাউসে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কয়েক মাস ধরে এই দুই নেতা প্রকাশ্যে পরস্পরকে বাক্যবাণে জর্জরিত করলেও তাদের প্রথম সরাসরি বৈঠকটি শেষ হয়েছে অত্যন্ত সফলতা ও সখ্যের মধ্য দিয়ে। খবর বার্তা সংস্থা এএফপির।

বৈঠকের পর উভয়েই ছিলেন হাস্যোজ্জ্বল এবং একে অপরের প্রশংসা করেছেন। তারা নিউইয়র্ক শহরের অপরাধ দমন ও জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ন্ত্রণে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও নবনির্বাচিত মেয়র মামদানি রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুর মানুষ। রিপাবলিকান পার্টির নেতা ট্রাম্প একজন ধনী ব্যবসায়ী, অন্যদিকে ডেমোক্র্যাট সোশ্যালিস্ট মামদানি মধ্যবিত্ত পরিবারের তরুণ সন্তান। নির্বাচনের আগে ট্রাম্প মামদানিকে ‘কমিউনিস্ট’ বলে আক্রমণ করেছিলেন, আর মামদানিও ট্রাম্পকে ‘খারাপ বাড়িওয়ালাদের’ সঙ্গে তুলনা করে সমালোচনা করেছিলেন। ফলে এই বৈঠক নিয়ে ব্যাপক জল্পনা ছিল।

ট্রাম্প সাধারণত যেকোনো সাক্ষাতে বিরোধীদের প্রতি কঠোর থাকেন। কিন্তু তিনি অপ্রত্যাশিতভাবে মামদানির প্রতি নমনীয় ছিলেন। মামদানির ঐতিহাসিক নির্বাচনি জয়ের প্রশংসা করে ট্রাম্প বলেন, তিনি নিউইয়র্কের জন্য ‘খুব ভালো কাজ’ করতে পারেন এবং তিনি এমন একজন যিনি ‘সত্যিই নিউইয়র্ককে আবার মহান দেখতে চান।’ ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দেন, তিনি নিউইয়র্ককে ‘শক্তিশালী ও খুবই নিরাপদ’ করতে মামদানিকে সাহায্য করবেন।

অন্যদিকে, মামদানি বৈঠকটিকে ‘খুবই ফলপ্রসূ’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, উভয় নেতারই নিউইয়র্কের প্রতি ‘একই ধরনের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা’ রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তিনি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে পারবেন।

রাতের খাবারের সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজের মালিকানাধীন ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ বৈঠকের একাধিক ছবি শেয়ার করে লেখেন, ‘নিউইয়র্ক সিটির নতুন মেয়র জোহরান মামদানির সঙ্গে সাক্ষাতটি ছিল বিরাট সম্মানের!’

বামপন্থি মামদানি ও রিপাবলিকান ট্রাম্প—উভয়েই নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স বরো থেকে উঠে এসেছেন। দুজনেই রাজনৈতিক নাটকে পারদর্শী। যদিও তাদের রাজনৈতিক দর্শন সম্পূর্ণ ভিন্ন, তবুও এই অপ্রত্যাশিত সখ্যতা দেখে কট্টর রক্ষণশীল মহলের কেউ কেউ হতাশা ব্যক্ত করেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মতো মামদানিকেও হয়তো ওভাল অফিসে প্রকাশ্যে অপমানের শিকার হতে হবে। ট্রাম্প বারবারই মামদানির প্রতি নিজের সমর্থন ব্যক্ত করেন। এমনকি মামদানি এর আগে তাকে ‘স্বৈরাচারী’ বলায় কোনো ক্ষোভ প্রকাশ না করে ট্রাম্প বলেন, ‘আমাকে এর চেয়েও খারাপ কিছু বলা হয়েছে। তাই এটি ততটা অপমানজনক নয়। হয়তো আমরা একসঙ্গে কাজ শুরু করার পর তিনি মন পরিবর্তন করবেন।’

উগান্ডায় জন্মগ্রহণকারী ৩৪ বছর বয়সী জোহরান মামদানি গত ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১০ লাখের বেশি ভোট পেয়ে নিউইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেন। তার এই বিজয় ছিল ১৯৪৯ সালের পর নিউইয়র্কের মেয়র প্রার্থীর জন্য রেকর্ড।

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন