চট্টগ্রাম শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বশেষ:

হাটহাজারী-কর্ণফুলীতে হচ্ছে দুই জেনারেল হাসপাতাল

হাটহাজারী-কর্ণফুলীতে হচ্ছে দুই জেনারেল হাসপাতাল

ইমাম হোসাইন রাজু

৮ নভেম্বর, ২০২৫ | ১০:৪৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম হাটহাজারী ও কর্ণফুলী উপজেলায় দুটি আধুনিক জেনারেল হাসপাতাল নির্মাণের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শহরের দুইপ্রান্তে হাসপাতাল দুটি নির্মাণের প্রাক-সমীক্ষা (ফিজিবিলিটি স্টাডি) কার্যক্রম সম্পন্নে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে (চুয়েট)। এ নিয়ে গত সোমবার চুয়েটের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি দলের সাথে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, খুব শীঘ্রই ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ শুরু করবে চুয়েট। এ জন্য আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চুয়েটকে আলোচ্য কাজ সম্পন্নে বাজেট উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।

 

জানা যায়, চিকিৎসাসেবা বিকেন্দ্রীকরণ ও নগরের দুই প্রান্তের মানুষের সহজপ্রাপ্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এই দুটি বড় হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সোমবার (৩ নভেম্বর) হাটহাজারীর ফটিকা এলাকায় প্রস্তাবিত ৬০০ শয্যার হাসপাতাল এবং কর্ণফুলীতে ২৫০ শয্যার হাসপাতালের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমদ চৌধুরী ও পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এবিএম আবু হানিফ। পরিদর্শন টিমে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

 

পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূঁইয়ার দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি দল। এ সময় চুয়েটের বিআরটিসি বিভাগের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে হাসপাতাল নির্মাণের ফিজিবিলিটি স্টাডি দ্রæত সম্পন্নের বিষয়ে উভয় পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছান। সভায় চুয়েটের বিআরটিসি বিভাগকে ফিজিবিলিটি স্টাডির দায়িত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে সভা সূত্রে জানা গেছে।

 

সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম, ডেপুটি সিভিল সার্জন, এনডিএফ চট্টগ্রাম মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক ডা. ইরফান চৌধুরীসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

 

এর আগে হাটহাজারীর ফটিকা এলাকায় বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) মালিকানাধীন ২০ একর খালি জায়গা ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে বরাদ্দ দিয়েছে বিটিসিএল। সংস্থার ২৩৬তম পর্ষদ সভায় এই বরাদ্দের অনুমোদন দেওয়া হয়। আর বহু আগেই কর্ণফুলীতে স্বাস্থ্য বিভাগের খালি জায়গায় হাসপাতাল নির্মাণের জন্য নির্ধারিত করা হয়।

 

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর থেকে বাইরে এই দুটি হাসপাতাল হলে নগরের চাপ অনেকটা কমবে। হাটহাজারী ও কর্ণফুলীর মানুষ স্থানীয়ভাবে উন্নত চিকিৎসা সেবা পাবেন। ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পন্ন হলেই আমরা পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হবো।

 

চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, এই দুটি হাসপাতাল শুধু অবকাঠামো নয়, বরং আধুনিক স্বাস্থ্যসেবার মডেল হবে। চুয়েটের সহযোগিতায় প্রাথমিক সমীক্ষা দ্রুত শেষ করে প্রকল্প প্রস্তাবনা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রাম মহানগর ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও চিকিৎসাসেবার চাপ বিবেচনায় শহরের বাইরে এই দুটি হাসপাতাল স্থাপনের পরিকল্পনা নেয় সরকার। বিশেষ করে উত্তর চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ অঞ্চলের রোগীরা বর্তমানে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। নতুন হাসপাতালগুলো চালু হলে এসব অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আসবে বলে মনে করেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা।

 

পূর্বকোণ/ইবনুর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট