
রুইজাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র ও গাঙ্গেয় ডলফিনের আবাসস্থল হালদা নদীকে মৎস্য হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার।
বুধবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ‘হালদা নদী মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণা করে যে গেজেট প্রকাশ করে তাতে এদিন থেকে এ নদীতে মাছ শিকার ও বর্জ্য নির্গমণে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হল।
একইসঙ্গে এ নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ১৭টি খালে ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
গেজেট অনুযায়ী, খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় ও মানিকছড়ি উপজেলা, চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি, রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলা এবং শহরের পাঁচলাইশ থানার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হালদা নদীর দৈর্ঘ্য ৯৪ কিলোমিটার।
এর উৎস রামগড়ের হাসুক পাড়া পাহাড় থেকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর মিলনস্থল মোহরা পর্যন্ত এবং নদী তীরবর্তী ৯৩ হাজার ৬১২টি দাগের প্রায় সাড়ে ২৩ হাজার একর এলাকা ‘হালদা নদী ও মৎস্য হেরিটেজ’।
‘উন্নততর পরিবেশগত এবং প্রতিবেশগত ব্যবস্থাপনার’ লক্ষ্যে এবং নদীর গতিপথ পরিবর্তনের কারণে এলাকার সীমা-পরিসীমা নির্ধারণসহ অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সময়ে সময়ে বিধি-নিষেধ আরোপসহ প্রজ্ঞাপনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করতে পারবে বলেও এতে বলা হয়েছে।
>> এ নদী থেকে কোনো প্রকার মাছ ও জলজ প্রাণি ধরা বা শিকার করা যাবে না। তবে মৎস্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে প্রতি বছর প্রজনন মৌসুমে নির্দিষ্ট সময়ে মাছের নিষিক্ত ডিম আহরণ করা যাবে।
>> ভূমি ও পানির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট বা পরিবর্তন করতে পারে এমন কোনো কাজ করা যাবে না।
>> মাছ, ডলফিন ও অন্যান্য জলজ প্রাণির জন্য ক্ষতিকারক কোনো প্রকার কাজ করা যাবে না।
>> নদীর চারপাশের বসতবাড়ি, শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পয়ঃপ্রণালী সৃষ্ট বর্জ্য ও তরল বর্জ্য নির্গমন করা যাবে না।
>> কোনো অবস্থাতেই নদীর বাঁক কেটে সোজা করা যাবে না।
>> হালদা নদীর সাথে সংযুক্ত ১৭টি খালে প্রজনন মৌসুমে (ফেব্রুয়ারি-জুলাই) মৎস্য আহরণ করা যাবে না।
>> হালদা নদী এবং এর সংযোগ খালের উপর নতুন করে কোনো রাবার ড্যাম এবং কংক্রিট ড্যাম নির্মাণ করা যাবে না।
>> ‘হালদা নদী মৎস্য হেরিটেজ তদারকি কমিটি’-এর অনুমতি ছাড়া হালদা নদীতে নতুন পানি শোধানাগার, সেচ প্রকল্প স্থাপনের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করা যাবে না।
>> পানি ও মৎস্যসহ জলজ প্রাণির গবেষণার ক্ষেত্রে ‘হালদা নদী মৎস্য হেরিটেজ তদারকি কমিটি’-এর অনুমতি ছাড়া কোনো দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি হালদা নদী ব্যবহার করে কোনো গবেষণা কাজ করতে পারবে না।
>> মাছের প্রাক-প্রজনন পরিভ্রমণ সচল রাখার স্বার্থে হালদা নদী এবং সংযোগ খালের পানির প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
>> হালদা এবং তার শাখা নদীর বালুমহাল ইজারা বন্ধ করা এবং ড্রেজার দিয়ে ক্ষতিকর পদ্ধতিতে বালু উত্তোলন করা যাবে না।
>> নদীর অববাহিকা অঞ্চলে কোনো প্রকার তামাক চাষ করা যাবে না।
>> নদীর অববাহিকা অঞ্চলে কৃষি জমিতে ক্ষতিকর কোনো কীটনাশক বা বালাইনাশক ব্যবহার করা যাবে না।
> নদীর পাড় সংলগ্ন এলাকায় কোনো প্রকার ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ
পূর্বকোণ/আরআর/পারভেজ