চট্টগ্রাম শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বশেষ:

চট্টগ্রামকে নিজের শহর ভাবুন

শপথ গ্রহণের বছর পূর্তিতে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত

চট্টগ্রামকে নিজের শহর ভাবুন

ইমরান বিন ছবুর

৩ নভেম্বর, ২০২৫ | ১০:৫৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, শতভাগ না পারলেও চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পেরেছি। স্মার্ট ও হেলদি সিটি গড়তে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণ ছাড়া কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছি। নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের প্রত্যেকটিতে অন্তত একটি করে মাঠ তৈরি করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। ইতোমধ্যে ১১টি মাঠের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি।

 

শপথ গ্রহণের এক বছরের প্রাক্কালে গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দৈনিক পূর্বকোণ অনলাইন স্টুডিওতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এসব কথা বলেন। গতবছরের ৩ নভেম্বর সিটি মেয়র শপথ নেন; দায়িত্ব গ্রহণ করেন ৫ নভেম্বর। পূর্বকোণের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি নগরীর উন্নয়ন, অর্জন, সাফল্য-ব্যর্থতা আর সরকারের অসহযোগিতার কথাসহ নানান ইস্যু নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন। জানান ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথাও। দীর্ঘ ৩৫ মিনিটের ওই সাক্ষাৎকারের উল্লেখযোগ্য অংশ নিচে প্রশ্ন-উত্তর আকারে তুলে ধরা হলো।

 

পূর্বকোণ: দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী চট্টগ্রামের মেয়র হিসেবে এক বছর পূর্ণ করলেন। দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা শুনতে চাই।

 

মেয়র: মাত্র এক বছরের মধ্যে চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতামুক্ত শহর হিসেবে গড়তে পেরেছি। এখনও শতভাগ জলাবদ্ধতামুক্ত করতে পারিনি। তবে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ জলাবদ্ধতামুক্ত করেছি। সব সংস্থার সমন্বয়ে আগামীতে পুরোপুরি জলাবদ্ধতামুক্ত নগরী হবে চট্টগ্রাম। আমি পার্সোনালি বলেছিলাম ৪১টি ওয়ার্ডে ৪১টি খেলার মাঠ করা। এর মধ্যে ১১টি খেলার মাঠের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি এবং বিভিন্ন স্কুল-কলেজের যে মাঠগুলো সংস্কার করার দরকার ছিল সেই জায়গায় আমি হাত দিয়েছি। আরেকটি কাজ আমি বাংলাদেশে প্রথম করেছি, সেটি হচ্ছে স্কুল হেলথ কার্ড। আমাদের বাচ্চাদের হেলথ চেকআপ করা। শিক্ষার্থীরা বর্জ্য কোথায় এবং কীভাবে ফেলবে সেটা শেখানো জরুরি। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছি; বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদন। দেশে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামে আমরা সেটা করতে পেরেছি। একটি কোরিয়ান কোম্পানি এটির ফিজিবিলিটি স্ট্যাডির কাজ করছে।

 

পূর্বকোণ: মেয়র নির্বাচনের আগে দেওয়া ইশতেহারে আপনি জলাবদ্ধতামুক্ত নগরীসহ নয় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিলেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর এগুলো কি বিবেচনায় এনেছেন? এসব প্রতিশ্রæতির কতটুকু পূরণ হলো?

 

মেয়র: জলাবদ্ধতার একটা পূর্ণাঙ্গ রেজাল্ট পেতে হলে আরও ২১টি খাল সংস্কার করতে হবে। ২১টি খালের ডিপিপি আমরা রেডি করছি। নগরীর ৩৬টি খালের বাইরে এই ২১টি খাল যদি সংস্কার করতে পারি তাহলে জলাবদ্ধতামুক্ত নগরী উপহার দিতে পারবো। বাচ্চাদের জন্য হেলথ স্কিম চালু করেছি। স্বল্পমূল্যে এনআইসিইউ সেবা এবং ডায়ালাইসিস সেন্টারের সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। পুরো অক্টোবর মাসব্যাপী ব্রেস্ট ক্যান্সার ও লিভার ক্যান্সার এওয়ারনেস প্রোগ্রাম করেছি। কাজেই এই ধরনের কিছু চিন্তাভাবনা আমার হেলদি সিটি নিয়ে ইতোমধ্যে আপনারা দেখেছেন।

 

পূর্বকোণ: সিটি মেয়রের কাজের ক্ষেত্রে ওয়ার্ড কমিশনারগণ হলেন মূল শক্তি। তাদের অনুপস্থিতিতে কাজ করতে গিয়ে কী কী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন? এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কী ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন?

 

মেয়র: ওয়ার্ড কমিশনারবিহীন কাজ করাটা আসলে খুব কঠিন। আপনারা দেখেছেন, আমি যখন শপথ গ্রহণ করেছি প্রত্যেকটা ওয়ার্ড ওয়ার্ডে যেতে হয়েছে। পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ঠিকমতো কাজ করছে কিনা আমি প্রত্যেকটা ওয়ার্ড ওয়ার্ডে গিয়ে সেটা চেক করেছি। ইভেন রাতের বেলা আমাকে অনেক সময় বের হতে হয় মহিলাগুলো ক্লিন করছে কিনা। কারণ আগে যেটা দিনের বেলায় পরিষ্কার করতো, আমি সেটা রাতের বেলায় নিয়ে এসেছি। কাজেই এটা ক্লিন সিটি করার জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমি মনে করি, এক্ষেত্রে তদারকি করা জরুরি এবং এই জায়গায় ওয়ার্ড কমিশনার না থাকার কারণে আমাকে একাই দৌড়াতে হচ্ছে। আমার পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তারাও যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করছেন। আমি মনে করি, যদি আমরা নিজের শহর ভাবতে পারি, তাহলে আমাদের এই ক্লিন সিটি গড়ার ক্ষেত্রে কাজটা খুব সহজ হয়ে যাবে।

 

পূর্বকোণ: গত এক বছরে বড় দাগে আপনার অর্জন কী কী? বিশেষ করে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগে পড়লে সবাই মেয়রকে দোষ দিয়ে থাকে; এটা কতটা যৌক্তিক? এক্ষেত্রে আপনার দায় কতটুকু?

 

মেয়র: একসময় তো বলা হতো, ‘পানির নিচে মুরাদপুর, চট্টগ্রাম হবে সিঙ্গাপুর।’ এই টাইপের কিছু স্লোগান ছিল। কিন্তু আজকে এই স্লোগানগুলো মানুষ ভুলতে বসেছে। কারণ মুরাদপুরের আগের সেই সিনারিও এবার মানুষ দেখেনি। কিংবা বহদ্দারহাটের যে সিনারিও আগে ছিল, সেটা দেখিনি। আপনারা জানেন বহদ্দারহাটে নালার উপরে একটা বড় মার্কেট আগের মেয়ররা করেছিলেন। সেটা আমরা ভেঙে দিয়ে নালাটাকে প্রশস্ত করেছি। এজন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ব্রিগেডকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের যে দৈনন্দিন কাজগুলো আছে, সে জায়গা থেকে জলাবদ্ধতা একটা শেপে নিতে পেরেছি। প্রায় তিন কোটি টাকা খরচ করে আগ্রাবাদের বক্স কালভার্ট আমরা ফার্স্ট টাইম ২৭ বছর পরে ক্লিন করে দিয়েছি। এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এ ড্রেনেজ মাস্টারপ্ল্যান করতে পারেনি। ইনশাআল্লাহ, আমি সেটাও করে দেবো। এ ড্রেনেজ মাস্টারপ্ল্যান যদি আমরা করতে পারি, তাহলে এটা বড় ধরনের জলাবদ্ধতা নিরসনের একটা পথ হবে বলে আমি মনে করি।

 

পূর্বকোণ: বর্তমান সরকারের কাছ থেকে কি আপনি পর্যাপ্ত সহায়তা পাচ্ছেন?

 

মেয়র: বর্তমান সরকারের কাছে তো আমরা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন প্রজেক্টের জন্য অর্থ চেয়েছি। বিশেষ করে ময়লা ক্লিন করা, বর্জ্য অপসারণ এবং খাল-নালাকে পরিষ্কার রাখার জন্য আমি কিছু ইন্সট্রুমেন্ট চেয়েছিলাম। সেখানে ৪০০ কোটি টাকার একটা প্রকল্প রেডি ছিল। দুর্ভাগ্যবশত সেটা ৩০০ কোটি টাকা হয়ে গেলো। এর মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বলছে ৩০০ কোটি টাকার মধ্যে ১৬২ কোটি টাকা লোন নিতে হবে এবং মাত্র ৬৪ কোটি টাকা তারা আমাদেরকে গ্র্যান্ট দেবে। দুঃখের বিষয়- তারা এটা যদি পুরো গ্র্যান্ট দিতে পারতো তাহলে আমাদের কাজ করতে সুবিধা হতো। এখনও কিন্তু আমরা টাকাটা পাইনি। আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে গিয়ে বলেছি; যেহেতু জলাবদ্ধতার একটা কমিটমেন্ট ছিল; বাট এই ইন্সট্রুমেন্টগুলো খুব দরকার ছিল আমাদের। কারণ আমাদের যে ইন্সট্রুমেন্ট আছে সেগুলো প্রায় ১২-১৪ বছর পুরনো। সেগুলো মাঝেমধ্যে ভেঙে গেলে ঠিক করতে প্রায় এক দেড় মাস লেগে যায়। বর্জ্য থেকে ইলেকট্রিসিটি একটি প্রকল্প ছিল। চট্টগ্রাম কমার্শিয়াল সিটি, চট্টগ্রামকে সেভাবেই ভাবতে হবে। চট্টগ্রাম বাঁচলেই বাংলাদেশ বাঁচবে। কাজেই চট্টগ্রামের জন্য প্রায়োরিটি বেসিস যথেষ্ট বরাদ্দ দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রামের এবং চট্টগ্রামের অনেক উপদেষ্টা আছেন। তারপরও আমি মনে করি এখানে কনসার্নিং কিছু মিনিস্ট্রি বিশেষ করে এলজিআরডি উপদেষ্টার দূরদর্শিতা এবং বিচক্ষণতার একটা ব্যাপার থাকে। চট্টগ্রামকে যথেষ্ট পরিমাণে বাজেট দিলে কী পরিমাণে তারা আউটপুট পাবে সেটাও তাদের চিন্তার মধ্যে থাকতে হবে।

 

পূর্বকোণ: চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এক শতাংশ সার্ভিস চার্জ দাবি করে আসছিল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। যতটুকু জানি সরকারের এতে সবুজ সংকেত ছিল। সেই সার্ভিস চার্জ কি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এখন পাচ্ছে?

 

মেয়র: আগে যেভাবে ৪৫ কোটি টাকা পেতাম সে জায়গায় আছে। ১৬২ কোটি টাকার একটা কমিটমেন্ট ছিল। সে জায়গা থেকে বন্দর আবার পিছনে চলে গেছে। এজন্য আমরা আবার জয়েন্ট সার্ভে করছি। এক শতাংশ মাশুল চট্টগ্রামবাসীর ন্যায্য দাবি। চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা আছে প্রায় এক কোটি ৯০ লাখ বর্গফুটের কাছাকাছি। আগে ছিল এক কোটি ৫৪ লাখ। সেই অর্থবছরের যে হিসাব, সেটাতেই ছিল প্রায় ১৬২ কোটি টাকা। তো এখন প্রায় এক কোটি ৯০ লাখ স্কয়ার ফিট হয়েছে। সেটাতে আগের যে রেট, এখন সাত বছর গিয়ে সেটাতে দাম অবশ্যই বাড়বে। সে তুলনায় আমরা যেটা হিসাব করেছি, প্রায় ৪৭৬ কোটি টাকা আমরা পাচ্ছি। আমরা মনে করি ৪৭৬ কোটি টাকা যদি তারা দিতে না পারে, এটলিস্ট আমাদেরকে ২০০ কোটি টাকা তারা দিতো। ২০০ কোটি টাকা দিলে আমরা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে ভর্তুকিটা দিতে পারতাম। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সবচেয়ে বেশি বাজেট প্রণয়ন করতে হয় শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যখাতে। সেখানে আমাদের মাসে ৩২ কোটি টাকা খরচ হয়। এর মধ্যে ছয় থেকে আট কোটি টাকা আমাদেরকে ভর্তুকি দিতে হয়। বন্দরের গাড়ি চলাচলের কারণে আমাদের রাস্তাঘাটগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একেকটা লরি এবং ট্রাকের ওজন দাঁড়ায় ৪০ থেকে ৫০ টন। কাজেই আমার সাত থেকে আট মেট্রিক টন রাস্তায় যদি সেটা চলে, অটোমেটিক্যালি যে রাস্তাটা ১০ বছর টেকার কথা সেটা এক বছরের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণেই আমি মনে করি বন্দরকে মিনিমাম ২০০-৩০০ কোটি টাকা আমাদের দেওয়া উচিত।

 

পূর্বকোণ: অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার পরও কোন কোন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা ভোগ করেছিলেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেদিক থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন; এটা কি আপনি স্বীকার করেন?

 

মেয়র: আমাকে একটা চিঠিও দেয়া হয়েছে। সেটা পরবর্তী ধাপে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অথবা পরবর্তীতে মন্ত্রিপরিষদে আছে বোধহয়। আসলে এটাই হচ্ছে বিমাতাসুলভ আচরণ। আমার চেয়ে জুনিয়ররা মন্ত্রীর পদমর্যাদা পেয়েছেন; কিন্তু আমি পাইনি। দায়িত্ব দেয়ার পর যে চিঠিটা তারা দিয়েছিল সেটা ইমপ্লিমেন্ট না করা তাদেরই দীনতা।

 

পূর্বকোণ: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়নে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

 

মেয়র: আমার তো অনেক স্বপ্ন চট্টগ্রামকে নিয়ে। যার কারণে আমি ক্লিন, গ্রিন, হেলদি এন্ড সেফ স্মার্ট সিটি করতে চাই। ইতোমধ্যে স্মার্ট সিটির আওতায় চট্টগ্রাম সিটিকে আনার জন্য ওয়াইফাই জোনসহ গ্রামীণফোনের সাথে আমাদের একটা এমওইউ হয়েছে। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি। মনোরেল করার জন্য কায়রোর একটা কোম্পানি আরব কন্ট্রাক্টরসের সাথে আমাদের একটা এগ্রিমেন্ট হয়েছে। যেটা প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প। বর্জ্য অপসারণে কোরিয়ান একটা কোম্পানির সাথে আমাদের এমওইউ হয়েছে। ইউকের একটা কোম্পানি এবং নিউজিল্যান্ডের আরেকটা কোম্পানির সাথে আমাদের কথা চলছে। আপনারা জানেন কালুরঘাট শিল্পাঞ্চলে আমাদের একটা আইসিটি ভবনের অলরেডি কিছু কাজ হয়েছে। সেটাও আমরা ফারদার কাজ করে একটা পরিপূর্ণ জায়গায় আনতে চাই। আমাদের ৪০ থেকে ৫০টা বড় বড় সড়কের টেন্ডার কিছু হয়েছে; আর কিছু টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন। এগুলো হলে চট্টগ্রাম শহরের রাস্তাঘাটের চেহারা অনেক পরিবর্তন হয়ে যাবে। লাইটের জন্য প্রায় আট থেকে ১০টা টেন্ডার হয়েছে। সড়কবাতির জন্য সেটা আমরা করে দিচ্ছি এবং এই যে উড়াল সড়কগুলোকে ক্যামেরার আওতায় আনা, সেগুলো আমরা করে দেবো ইনশাআল্লাহ। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সবচেয়ে বড় এচিভমেন্ট হচ্ছে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিকে দখলমুক্ত করা। ২০১৬ সালের পর থেকে একটা পরিবার সেটা কুক্ষিগত করে রেখেছিল। এই প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিটা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আবার ফিরে পেয়েছে। আমাদের অধীনে এখন চমৎকারভাবে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি পরিচালিত হচ্ছে।

 

পূর্বকোণ: কর্ণফুলী টানেল চালু হওয়ার আগে থেকে শুনতাম ওয়ান সিটি টু টাউন। সেক্ষেত্রে কি আপনার নগরীকে সম্প্রসারণের কোন চিন্তাভাবনা আছে কিনা?

 

মেয়র: নগরীকে সম্প্রসারণ করাটা খুব জরুরি। কারণ আমি যদি আমার শহরটাকে এক্সপান্ড করতে না পারি, তাহলে যে সুযোগ সুবিধাটা পাওয়ার কথা, জনগণ সেটা পাবে না। বিশেষ করে আজকে এই যে টানেল ব্যর্থতায় পর্যবসিত হচ্ছে, তার কারণ শহরটা এক্সপান্ড হয়নি। শহর যদি এক্সপান্ড হয়ে যেত মানুষ সহজে ওই এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের সুযোগ সুবিধাগুলো ভোগ করতে পারতো। বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস এগুলো যদি ব্যবসায়ীরা পেত তাহলে কিন্তু প্রচুর পরিমাণে সেখানে ইনভেস্টমেন্ট হতো।

 

পূর্বকোণ: অতি সম্প্রতি সিটি গভর্নমেন্টস মূল্যায়নে ১০০ নম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ৯০ নম্বর পেয়ে দেশসেরা হয়েছিল। মেয়র হিসেবে নিজের পারফরমেন্সে আপনি কতটা সন্তুষ্ট?

 

মেয়র: স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সেটা গ্রেডিং করে আমাকে প্রথম স্থান দিয়েছে। আমি মনে করি এটা আমার কৃতিত্ব নয়, এটা চট্টগ্রামবাসীর কৃতিত্ব। আমি চট্টগ্রামবাসীর জন্য সেটা উৎসর্গ করলাম। চট্টগ্রামবাসীকে আমি এটুকুই বলবো, সবাই আপনারা আমার সাথে থাকুন; এই শহরটাকে নিজের শহর ভাবুন। নিজের শহর যদি আমরা ভাবতে পারি তাহলে আমরা শহরটাকে ক্লিন রাখবো। যত্রতত্র প্লাস্টিক, পলিথিন, ককশিট, ময়লা আমরা ফেলবো না। ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া হচ্ছে এবং শহরটাকে অসুন্দর লাগছে। আমাদের নেক্সট জেনারেশন যাদের দিকে আমরা তাকিয়ে আছি, তাদের জন্য যেন একটা সুন্দর বাসযোগ্য শহর আমরা করে দিতে পারি।

 

পূর্বকোণ/ইবনুর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট