চট্টগ্রাম শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

শুরু হয়েও হল না সেন্টমার্টিন যাত্রা
দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন

শুরু হয়েও হল না সেন্টমার্টিন যাত্রা

হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ

২ নভেম্বর, ২০২৫ | ১১:২১ পূর্বাহ্ণ

দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন ভ্রমণের জন্য দীর্ঘ নয় মাস পর ১ নভেম্বর খুলে দেওয়া হলেও দ্বীপে কোনো পর্যটক যাননি। কোনো জাহাজ মালিক অনুমতি না নেওয়ায় প্রথম দিন পর্যটকশূন্যই ছিল দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র সেন্টমার্টিন। সরকারের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী নভেম্বর মাসে পর্যটকদের কেবল দিনে গিয়ে দিনে ফেরার শর্তে দ্বীপ ভ্রমণের সুযোগ থাকবে। গত বছরের মতো এবারও দ্বীপটি ভ্রমণে পর্যটকদের মানতে হবে সরকারের ১২টি নির্দেশনা। আর এতেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

 

এছাড়া দ্বীপে উঠতে ব্যবহৃত একমাত্র জেটিঘাটের সংস্কারকাজ শেষ না হওয়ায় পর্যটকবাহী জাহাজ ঘাটে ভিড়তে পারার কোনো সুযোগ নেই। সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান, প্রাথমিকভাবে কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে ‘কর্ণফুলী এক্সপ্রেস’ ও ‘বার-আউলিয়া’ নামের দুটি জাহাজ সেন্টমার্টিনে চলার কথা ছিল। তবে জাহাজ মালিকরা এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসায় শনিবার কোনো জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছাড়েনি। একইদিনে যাওয়া-আসা প্রায় অসম্ভব। আর এটি বাস্তবসম্মতও নয়। তবে ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে জাহাজ চালানোর প্রস্ততি চলছে।

 

সেন্টমার্টিন হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির আহ্বায়ক আবদুর রহমান বলেন, দ্বীপে পর্যটন সেবায় ছোট-বড় আড়াই শতাধিক হোটেল-রেস্ট হাউজ রয়েছে। গত বছর দেখেছি, কক্সবাজার থেকে ৮ ঘণ্টা যাত্রা করে দ্বীপের আবাসনে রেস্ট নিতে কোনো পর্যটক আসেন না। তাই এবার আমাদের কোনো প্রস্তুতি নেই। হয়তো পরের দুই মাসে আমরা হোটেল-মোটেল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নের কাজ করতে পারি। তখন স্বল্প পর্যটক হলেও রাত্রীযাপন করবে।

 

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সেন্টমার্টিন যাতায়াতের জন্য কোনো জাহাজ অনুমতি নেয়নি। সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২ নির্দেশনা অতীতের মতো কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন। এ লক্ষ্যে টেকনাফের পরিবর্তে কক্সবাজার শহর থেকেই পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিনে যাতায়াতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

এদিকে ১ নভেম্বর থেকে খুলে দিয়ে ভ্রমণের সুযোগ সৃষ্টি হলেও চলতি পর্যটন মৌসুমে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দ্বীপে উঠতে ব্যবহৃত একমাত্র জেটিঘাটের সংস্কারকাজ শেষ না হওয়ায় এ অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। পহেলা নভেম্বর পর্যটক যাওয়ার ঘোষণা এলেও জেটির সংস্কারকাজ বেশ কয়েকদিন ধরে বন্ধ। সাব-কন্ট্রাকে কাজ চলায় হেলেদুলে চলেছে নির্মাণকাজ, যার মানও নিম্ন। ফলে পর্যটকবাহী জাহাজ ঘাটে ভিড়তে পারার কোনো সুযোগ এখনো সেখানে নেই।

 

জেটি নির্মাণের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস এস রহমান ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের প্রতিনিধি মো. আলী হায়দার সাংবাদিকদের বলেন, সাত কোটি টাকার প্রকল্পে ৭০টি পাইলিংয়ের কাজ প্রায় শেষ। রোলিং ও সিঁড়ির কাজ বাকি আছে। মালামাল আনার কাজ চলছে। চেষ্টা চলছে মৌসুমেই কাজ শেষ করতে আমরা আশাবাদী।

 

পূর্বকোণ/ইবনুর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট