
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলপন্থী দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহীদ তারেক হুদা হলের পেছনে ও ড. কুদরত-ই-খুদা হলের সামনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তুমুল হট্টগোল দেখা যায়।
শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রদলপন্থী দুটি গ্রুপের অন্তঃকোন্দল থেকেই এ ঘটনার সূত্রপাত। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হলে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের মধ্যে পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সিয়াম এবং পুরকৌশল বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জাওয়াদুল করিম জামি রয়েছেন।
আহত সিয়াম অভিযোগ করেন- আমি শহীদ তারেক হুদা হলের ক্যান্টিনে বসে খাচ্ছিলাম। হোসাইন শহীদ আবির (মেকাট্রনিক্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ) ফোন দিলে তার সঙ্গে দেখা করতে যাই। সেখানে গিয়ে কয়েকজন আমাকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করতে থাকে। এক পর্যায়ে আবির আমার গায়ে হাত তোলে। আমি চলে আসতে চাইলে পেছন থেকে তারা আক্রমণ করে। তখন জামি আমাকে বাঁচাতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়।
অন্যদিকে, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, আমরা হলের সামনে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ করে সিয়াম রাগ করে চলে গেলে তার হল থেকে কয়েকজন শিক্ষার্থী আমাদের দিকে ছুটে আসে। আমরা কোনোভাবে কুদরত ই খুদা হলে ঢুকে পড়ি। একই বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল রাফি তানিমও একই বক্তব্য দেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, সিয়াম ও আবির একসময় ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। কিন্তু ছাত্রদলপন্থী দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ায় তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। সিয়ামের অভিযোগ, আমরা সংগঠনের কাজে বেশি সক্রিয় থাকায় অন্য পক্ষ ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে চুয়েট ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি ওয়াসিফ রাশেদের ইন্ধন থাকতে পারে।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে চুয়েট ছাত্রদলের সভাপতি ওয়াসিফ রাশেদ বলেন, ঘটনাটির সঙ্গে ছাত্রদলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটি কেবল দুই বন্ধুর ব্যক্তিগত ভুল বোঝাবুঝি। ছাত্রদলে এখনো এমন গ্রুপিংয়ের সুযোগ নেই।
চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মাসুম রানা বলেন, ঘটনার সময় আমরা দ্রুত সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। উভয় পক্ষের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, চুয়েটে ছাত্ররাজনীতি আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ থাকলেও, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অঘোষিত সক্রিয়তা ক্যাম্পাসে রয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
তারা মনে করেন- প্রশাসন যদি কঠোর না হয়, ভবিষ্যতে এমন সংঘর্ষ আরও বাড়তে পারে।
পূর্বকোণ/জাহেদ/এএইচ