চট্টগ্রাম শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলন প্রত্যাহার

অনলাইন ডেস্ক

২১ অক্টোবর, ২০২৫ | ৩:৪০ অপরাহ্ণ

আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারের সম্মতির পর আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন তারা।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন আজিজী মঙ্গলবার দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রজ্ঞাপন হাতে নিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেওয়া হলো। আমরা আগামীকাল থেকেই ক্লাসে ফিরে যাব।’

দীর্ঘ ১০ দিনের আন্দোলনের পর অবশেষে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ মঙ্গলবার এ বিষয়ে সম্মতি জানিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

এতে বলা হয়েছে, আগামী নভেম্বর মাস থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের মূল বেতনের সাড়ে ৭ শতাংশ (৭.৫ শতাংশ) বা ন্যূনতম ২ হাজার টাকা এবং আগামী জুলাই থেকে মূল বেতনের ১৫ শতাংশ বা ন্যূনতম ২ হাজার টাকা হারে বাড়ি ভাড়া ভাতা দেওয়া হবে। তবে তাদের চিকিৎসা ভাতা (১,৫০০ টাকা) ও উৎসব ভাতা (মূল বেতনের ৫০ শতাংশ) আগের মতোই অপরিবর্তিত থাকবে।

এই সিদ্ধান্ত হাতে পেয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের নেতারা মঙ্গলবার দুপুরে আন্দোলন প্রত্যাহার ও বুধবার থেকে শ্রেণিকক্ষে ফেরার ঘোষণা দেন।

অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, বাড়ি ভাড়া ভাতা বৃদ্ধির ফলে কোনো বকেয়া সুবিধা প্রযোজ্য হবে না এবং ভবিষ্যতে অনিয়ম হলে বিল অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন। এছাড়া এমপিও নীতিমালা ও সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী নিয়োগের শর্তাবলি পূরণ করতে হবে।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে দুপুরে তিনি এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজীর হাতে অর্থ বিভাগের সম্মতিপত্র হস্তান্তর করেন।

এই সময় শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‌‘বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য এটি একটি বাস্তবসম্মত ও গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। শিক্ষকরা আমাদের সমাজ ও জাতি গঠনের মূল চালিকা শক্তি, অথচ তাদের বেতন-ভাতা অনেক ক্ষেত্রে অপ্রতুল ছিল।’

তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময় অর্থনৈতিক বাস্তবতা সীমিত হলেও আমরা শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে ছিলাম এবং আছি। ধীরে ধীরে তাদের সুবিধা আরও বাড়ানো হবে।’

অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘সরকার ও শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের কথা শুনেছেন, আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আশা করি, উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশে উন্নীত করা এবং বদলি প্রক্রিয়া চালুর বিষয়েও দ্রুত সিদ্ধান্ত হবে।’

উল্লেখ্য, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা আগে মাসে ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ভাতা পেতেন। ৩০ সেপ্টেম্বর তা বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়, পরে ১৬ অক্টোবর মূল বেতনের ৫ শতাংশ বা ন্যূনতম ২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। তবে শিক্ষক-কর্মচারীরা এ সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট হয়ে ১২ অক্টোবর থেকে রাজধানীতে অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি চালিয়ে আসছিলেন। তাদের দাবির মুখে এবার সরকার তৃতীয় দফায় বাড়ি ভাড়া ভাতা পুনর্নির্ধারণ করল।

২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়াসহ তিন দফা দাবিতে শহীদ মিনারে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের আমরণ অনশন কর্মসূচিতে গিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা শিক্ষকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট