
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ৮ বাংলাদেশি প্রবাসী নিহত হয়েছেন। নিহত সবার বাড়ি চট্টগ্রামেই বলে জানা গেছে। নিহতদের মধ্যে ৭ জনের বাড়ি সন্দ্বীপের সারিকাইত ইউনিয়নে ও একজনের বাড়ি রাউজানে।
গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় দেশটির দুকুম সিদরা এলাকায় দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তারা। দুর্ঘটনার পর পরিবারগুলোতে চলছে শোকের মাতম। এই দুর্ঘটনায় মোট ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
নিহত চট্টগ্রামের ৮ জন হলেন- সন্দ্বীপের আমিন সওদাগর, আরজু, রকি, বাবলু, শাহাবউদ্দিন, জুয়েল, রনি এবং রাউজানের আলাউদ্দিন।
সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মংচিংনু মারমা বলেন, ‘হতাহতরা সবাই সাগরে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে তাদের বহনকারী গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, গাড়িটিতে ১১ জন ছিলেন, তাদের মধ্যে ১০ জন ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে ৭ জনের বাড়ি সন্দ্বীপে, একজনের বাড়ি রাউজানে।’
প্রত্যক্ষদর্শী ও সন্দ্বীপের প্রবাসী সজীব চৌধুরী বলেন, আমরা সবাই একই এলাকায় থাকতাম। প্রতিদিনের মতো তারা সাগর থেকে মাছ ধরে প্রাইভেটকারে ফিরছিলেন। বাসা থেকে প্রায় এক ঘণ্টার দূরত্বে বিপরীত দিক থেকে আসা মাছবাহী গাড়ি তাদের গাড়িকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। অনেকের শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। নিহতদের মরদেহ বর্তমানে দুকুম হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, সন্দ্বীপের বাসিন্দা দুর্ঘটনায় নিহত প্রবাসী শাহাবুদ্দীন, বাবলু ও রকি। তিনজনের বাড়ি পাশাপাশি। একই সমাজে বসবাস ছিল তাদের। তাদের হারানোর বেদনায় স্বজনদের কান্নার রোল এলাকার আকাশ ভারী করে তুলেছে। দেড় বছর আগে বিয়ে করা শাহাবুদ্দীনের ৪ মাসের ফুটফুটে বাচ্চা আছিয়া বাবা ডাকার আগেই এতিম হয়ে গেল। আছিয়াকে কোলে নিয়ে অঝোরে কাঁদছিলেন তার দাদা ছিদ্দিক।
তিনি বলেন, ‘মাত্র ২১ দিন আগে ছুটি শেষ করে ওমানে যায় আমার ছেলে শাহাবুদ্দীন। ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছি সংসারের সুখের জন্য, আর আজ সে চলে গিয়ে সংসার শূন্য করে দিল।’
পূর্বকোণ/এএইচ