
হামাস গাজায় অবশিষ্ট সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনায় উল্লিখিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আরও আলোচনা চায়।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে সংগঠনটি জানায়, তারা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত বন্দী বিনিময় সূত্র অনুযায়ী ‘সব ইসরায়েলি বন্দীকে—জীবিত ও মৃত উভয়কেই—মুক্তি দিতে রাজি’, যদি বিনিময়ের জন্য যথাযথ শর্ত পূরণ হয়।
হামাসের জানিয়েছে, গাজার ভবিষ্যৎ ও ফিলিস্তিনিদের অধিকারের মতো অন্যান্য বিষয় নিয়ে তারা এখনও আলোচনা করছে এবং এসব নিয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন আছে।
এই ঘোষণা আসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেই হুঁশিয়ারির কয়েক ঘণ্টা পর, যখন তিনি রবিবারের মধ্যে হামাসকে শান্তি পরিকল্পনা গ্রহণ না করলে ‘গাজায় নরক নেমে আসবে’ বলে সতর্ক করেন।
হামাস তাদের প্রতিক্রিয়া জমা দেওয়ার পর, ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যালে লিখেন, আমি বিশ্বাস করি, তারা এখন স্থায়ী শান্তির জন্য প্রস্তুত।
ট্রাম্প ইসরায়েলকে অবিলম্বে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যাতে জিম্মিদের দ্রুত ও নিরাপদে বের করে আনতে পারি! তিনি আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই বিস্তারিত আলোচনা শুরু করেছি।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরো প্রধানের মিডিয়া উপদেষ্টা তাহির আল-নৌনৌ বিবিসিকে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য উৎসাহব্যঞ্জক এবং আমরা অবিলম্বে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত—যাতে বন্দিবিনিময়, যুদ্ধের অবসান এবং দখলদার বাহিনীর প্রত্যাহার নিশ্চিত করা যায়।’
হামাসের বিবৃতিতে ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনাকে সরাসরি উল্লেখ বা গ্রহণ করা হয়নি। তবে বলা হয়েছে, সংগঠনটি ‘গাজা উপত্যকার প্রশাসন একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি সংস্থার কাছে হস্তান্তর করার সম্মতি পুনর্ব্যক্ত করছে, যা ফিলিস্তিনি জাতীয় ঐকমত্য এবং আরব ও ইসলামিক সমর্থনের ভিত্তিতে গঠিত হবে।’
তবে বিবৃতিতে পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত—হামাসের নিরস্ত্রীকরণ ও গাজার শাসনব্যবস্থায় আর কোনো ভূমিকা না রাখার সম্মতির—কোনও উল্লেখ নেই।
শান্তি পরিকল্পনায় প্রস্তাব করা হয়েছে, লড়াই অবিলম্বে বন্ধ হবে এবং হামাসের হাতে আটক ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মি ও মৃত বলে ধারণা করা জিম্মিদের দেহাবশেষ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দেওয়া হবে, বিনিময়ে শত শত বন্দি ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল।
ধারণা করা হয়, বর্তমানে গাজায় সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হাতে ৪৮ জন জিম্মি রয়েছে, যাদের মধ্যে মাত্র ২০ জন জীবিত।
পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, উভয় পক্ষ প্রস্তাবে সম্মতি জানালে ‘গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে পূর্ণ মানবিক সহায়তা পাঠানো হবে’।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা অনুযায়ী, হামাসের গাজা শাসনে কোনও ভূমিকা থাকবে না এবং এই পরিকল্পনা ভবিষ্যতে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনাও উন্মুক্ত রাখে। সূত্র: বিবিসি
পূর্বকোণ/পারভেজ