
দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপের ট্রফি বিতর্ক নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা যতোই হোক, নিজ দেশে প্রায় বীরের মর্যাদা পাচ্ছেন মহসিন নাকভি। ‘শহীদ জুলফিকার আলি ভুট্টো এক্সিলেন্স গোল্ড মেডেল’ পুরস্কারে সম্মানিত করা হচ্ছে তাকে। “নৈতিক ও সাহসী’ পদক্ষেপের জন্য এই স্বীকৃতি পাচ্ছেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রধান।
পাকিস্তানের দা নেশন পত্রিকার খবর, নাকভিকে এই সম্মাননা জানানোর ঘোষণা দিয়েছেন সিন্ধ ও করাচি বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান অ্যাডভোকেট গুলাম আব্বাস জামাল। ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক ও ক্রীড়া সম্পর্কের তীব্র সঙ্কটের সময়ে নাকভির শক্ত অবস্থান পাকিস্তানের জন্য গর্ব এনে দিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন গুলাম আব্বাস জামাল। তার মতে, ক্রিকেটের সীমানা ছাড়িয়ে দেশবাসীর মাথা উঁচু করে দিয়েছেন নাকভি। “এটা স্রেফ ক্রিকেটের ব্যাপার নয়। এটা মর্যাদা, সার্বভৌমত্ব ও চাপের কাছে মাথা নত না করার ব্যাপার।”
করাচিতে জমকালো আয়োজনে নাকভিকে এই স্বর্ণপদক দেওয়া হবে। এজন্য একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করা হয়েছে, যে কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সিন্ধ বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান খালিদ জামিল শামসি ও সচিব হিসেবে থাকছেন ডিরেক্টর স্পোর্টস, কমিশনার করাচি গুলাম মুহাম্মাদ খান।
প্রধান অতিথি হিসেবে থেকে এই পুরস্কার প্রদান করবেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রধান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। তার সময় অনুযায়ী চূড়ান্ত করা হবে পুরস্কার বিতরণের তারিখ।
এশিয়া কাপে ভারতীয় দলের নানা পদক্ষেপের জের ধরে তুমুল আলোচনায় ছিলেন নাকভিও। পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের সঙ্গে ভারতীয়দের হাত না মেলানোর ঘটনায় ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটের বিরুদ্ধে আইসিসিতে অভিযোগ জানায় পিসিবি। সুরিয়াকুমার ইয়াদাভের বিরুদ্ধেও অভিযোগ জানায় তারা, যেটির প্রেক্ষিতে জরিমানা গুনতে হয় ভারতীয় অধিনায়ককে।
সবচেয়ে বড় বিতর্ক হয় টুর্নামেন্টের ফাইনাল শেষে। চ্যাম্পিয়ন ভারতীয় দলের দাবি ছিল, নাকভির কাছ থেকে নয়, অন্য কারও কাছ থেকে ট্রফি ও মেডেল নেবে তারা। এই টানাপোড়েনে পুরস্কার বিতরণী আয়োজন শুরু হতে দেরি হয় অনেক। শেষ পর্যন্ত ভারতীয় দলকে ট্রফি ও মেডেল দেওয়া হয়নি। ভারতের অভিযোগ, ট্রফি ও মেডেল নিজের সঙ্গে নিয়ে গেছেন নাকভি। ট্রফি না পেয়ে কাল্পনিক ট্রফি হাতে নিয়ে ও উঁচিয়ে ধরার ভঙ্গিতে উদযাপন করে ভারতীয় দল। কাল্পনিক ট্রফি পাশে নিজে পোজ দেয়। সংবাদ সস্মেলনে সুরিয়ারকুমার বলেন, ট্রফি না পাওয়ার ঘটনা প্রথম দেখলেন তিনি।
ভারতীয় বোর্ডের পক্ষ থেকে পরে বলা হয়, আইসিসির নভেম্বরের সভায় এসিসি সভাপতির আচরণ নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলবেন। যত দ্রুত সম্ভব ট্রফি ও মেডেল ভারতকে বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিও জানানো হয়। পরে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, নাকভি ট্রফি ও মেডেল দিতে প্রস্তুত, তবে এসিসির সদর দপ্তরে একটি অনুষ্ঠানে এসে তার হাত থেকে ওসব নিতে হবে ভারতীয় দলকে।
সব মিলিয়ে এসব ঘটনায় ভারতীয় বোর্ড প্রচণ্ড চটে গেলেও নাকভি সামাজিকমাধ্যমে বলেন, “আমি কোনো ভুল করিনি, ভারতীয় বোর্ডের কাছে ক্ষমাও চাইনি এবং কখনও চাইব না।”
পূর্বকোণ/ইবনুর