
ডিম স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তবে অনেকেই দৈনিক ডিম খেতে ভয় পান, যদি ওজন বেড়ে যায় কিংবা হৃদরোগের আশঙ্কা বাড়ে এই ভেবে। তবে পুষ্টিবিদদের মতে, সকালের নাস্তায় একটি করে ডিম খাওয়া শারীরিক বিভিন্ন রোগের সমাধান করতে পারে। তবে এটি নির্ভর করে কে কীভাবে ডিম খাচ্ছেন। অনেকেই ডিমের কুসুম ফেলে দিয়ে সাদা অংশটা খান।
পুষ্টিবিদদের মতে, দিনে একটি নয় অন্তত ২টি ডিম কুসুমসহ খেতে পারবেন। আর যদি এর চেয়েও বেশি ডিম খেতে চান তাহলে সাদা অংশ খেতে পারেন। অন্যদিকে ডিম যত বেশি ভাজা হয় এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই ডিমের পোচ বা হাফ বয়েল খান। দরকার হলে ফুল বয়েল ডিমও খেতে পারেন।
ডিম খেলে সারবে যেসব রোগ : ডিম খেলে শরীরে দ্রুত এনার্জি আসে। ডিমে থাকা ভিটামিন থেকেই মূলত এই এনার্জি বা শক্তি মেলে। এতে থাকা ভিটামিন বি খাদ্যকে এনার্জি বা শক্তিতে রূপান্তরিত করে। তাই প্রতিদিন সকালে একটি সেদ্ধ খেলে সারাদিন ক্লান্তহীন থাকবেন।
ডিমে থাকা ভিটামিন ই কোষ আর ত্বকে থাকা ফ্রি র্যাডিকেল ধ্বংস করে। তাই ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। এছাড়াও নতুন কোষ তৈরি হতেও সাহায্য করে থাকে। নিয়মিত ডিম খেলে ব্রেস্ট ক্যানসারের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। পেশী ব্যথায় অনেকেই ভোগেন। ডিমে থাকা ভিটামিন ডি পেশী মজবুত করে। নারী স্বাস্থ্যের উন্নতিতে প্রতিদিন ৫০-৬০ শতাংশ প্রোটিন দরকার হয়। যা ডিম থেকেই পাওয়া যায়। একটি ডিম থেকে ৬.৫ গ্রাম প্রোটিন মেলে।
এক সমীক্ষায় জানা গেছে, ডিম খেলে হার্টে রক্ত জমাট বাঁধে না। তাই হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে। পাশাপাশি সারা শরীরেই রক্ত চলাচল সচল থাকে। ডিম লিপিড প্রোফাইলও নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাছাড়া ডিম লোহিত রক্তকণিকা বাড়াতেও সাহায্য করে। তাই রোজ নিয়ম করে ডিম খান। শরীরের সার্বিক সুস্থতায় কোলাইন খুবই প্রয়োজন। ডিমে প্রায় ৩০০-৩৫০ মাইক্রোগ্রাম কোলাইন থাকে। তাই ডিম খেলে লিভার ও স্নায়ু ভালো থাকে। নখ ভেঙে যাওয়ার সমস্যায় অনেকই ভোগেন। নখ মজবুত করে সালফার। আর ডিম হলো এই সালফারের উৎস। নখকে সুন্দর ও সাদা রাখতেও সাহায্য করে সালফার। তাই নিশ্চিন্তে ডিম খান।
শরীরে পর্যাপ্ত আয়রন থাকলে অ্যানিমিয়া হয় না। আর ডিমে থাকে আয়রন। তাই নিয়মিত ডিম খেলে রক্তস্বল্পতার সমস্যার সমাধান হয়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ডিম দুর্দান্ত কার্যকরী। ডিমে থাকা জিংক ইমিউনিটি সিস্টেমকে অনেকটাই শক্তিশালী করে। হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্য উন্নত করে ডিম। হাড় ও দাঁত মজবুত রাখতে ডিম খান প্রতিদিন। অনেকেই মনে করেন ডিম বোধ হয় ওজন বাড়ায়। তবে এ ধারণা ভুল। বরং ডিম খেলে ওজন কমে। একটি ডিম শরীর থেকে ৪০০ ক্যালোরি কমাতে পারে। তাই ওজন কমাতে ডিম খান।
পূর্বকোণ/ইবনুর