চট্টগ্রাম শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

দাম বাড়ল শুকনো মরিচ-কিশমিশের
ফাইল ছবি

দাম বাড়ল শুকনো মরিচ-কিশমিশের

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে দেশটির বেশিরভাগ কিশমিশ উৎপাদন হয়। সেই কিশমিশে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন দেশেও রপ্তানি করে তারা। তবে গত আগস্টে বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে প্রদেশটি। এতে মারা যান শত শত মানুষ। ধ্বংস হয়ে যায় কিশমিশ উৎপাদন হওয়া আঙ্গুরের বাগানসহ নানা কৃষি ক্ষেত ও পণ্য। আর সেটিরই প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে। এক মাসের ব্যবধানে পণ্যটির দাম প্রতিকেজিতে বেড়েছে প্রায় ১০০ টাকা। এটিকে অস্বাভাবিক বলছেন পাইকারি ব্যবসায়ী আর ক্রেতারা।

 

অনেকে বলছেন, বাংলাদেশে পাকিস্তান ছাড়াও ইরানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে কিশমিশ আসে। সেসব দেশে সম্প্রতি কোন দুর্যোগ ঘটেনি। কিন্তু শুধু পাকিস্তানের বন্যার অজুহাতে একটি সিন্ডিকেট বাজারে কিশমিশের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

 

গতকাল খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের দোকানে কথা বলে জানা গেছে, এক মাস আগে প্রতিকেজি কিশমিশ বিক্রি হয়েছে ৫৫০ থেকে ৫৬০ টাকায়। এখন সেই কিশমিশ বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৬৫৫ টাকায়।

 

মেসার্স হাজী মোহাম্মদ ইসহাক সওদাগরের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ সেকান্দর দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, এক মাসের ব্যবধানে কিশমিশের দাম ১০০ টাকার কাছাকাছি বেড়ে গেছে। পাকিস্তানে বন্যার কারণে এই দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকেরা।

 

শুধু কিশমিশ নয়, বাজারে বেড়েছে শুকনো মরিচের দামও। ভারত থেকে আমদানি করা মরিচের পাশাপাশি দেশে উৎপাদিত মরিচেই চাহিদা মেটায়। তবে এখন দেশে মরিচ উৎপাদনের মৌসুম নয়। যে কারণে বেড়েছে কাঁচামরিচের দামও। ফলে কাঁচামরিচের পাশাপাশি শুকনো মরিচও আমদানিনির্ভর হয়ে পড়েছে। তবে ভারত থেকে আমদানি আগের মতো সচল না থাকায় ভারতনির্ভর পণ্যগুলোর দাম বেড়েছে। কিছুদিন আগে যে মিষ্টি শুকনো মরিচ বিক্রি হয়েছিল কেজিপ্রতি ২৯০ টাকা, সেটি এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকার উপরে। আর জ্বাল শুকনো মরিচ বিক্রি হয়েছিল ৩০০ টাকায়, সেটিও কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। এছাড়া জিরার দামও প্রতিকেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। এক মাস আগে প্রতিকেজি জিরা বিক্রি হয়েছিল ৫২৫-৫৩০ টাকায়, এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৪০ টাকায়। এছাড়া তেলের দামও প্রতি মণে ১০০ টাকার আশপাশে বেড়েছে।

 

নাম প্রকাশ না করে এক মুদি ব্যবসায়ী দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, খাতুনগঞ্জে পণ্যের সরবরাহ ঠিক আছে। এরপরও কিছু পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। সিন্ডিকেট করে একটি পক্ষ নানা অজুহাতে এই দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এমনিতে এখন বেচাকেনা কম, এর ওপর নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় বিক্রি আরও কমে গেছে।

 

পণ্যের দাম বাড়ায় বিপাকে আছেন খুচরা ব্যবসায়ীরাও। গতকাল খাতুনগঞ্জে বিভিন্ন নিত্যপণ্য কিনতে গিয়েছিলেন বহদ্দারহাটের ব্যবসায়ী শাহাব উদ্দিন। তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, নানা অজুহাতে সিন্ডিকেট করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনিতেই ব্যবসার যা অবস্থা, আমরা দিশেহারা। এখন যদি ক্রমাগত দাম বাড়তেই থাকে, আমাদের পুঁজিতে টান পড়বে। এক বছর আগে যদি এক লাখ টাকায় ১০ ধরনের পণ্য কিনতে পারতাম, সেখানে এখন পাঁচ ধরনের পণ্যও নিতে পারছি না। সরকারের উচিত নজরদারি বাড়ানো।

 

পূর্বকোণ/ইবনুর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট