চট্টগ্রাম সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বশেষ:

উড়ন্ত পাখিদের মৃত্যু তরঙ্গ বিকিরণ করছে উচ্চগতির নেটওয়ার্ক টাওয়ার

পূর্বকোণ ডেস্ক

৯ মে, ২০১৯ | ৫:৫৩ অপরাহ্ণ

আকাশে উড়ার সময় পাখি পৃথিবীর প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড ব্যবহার করে দিক নির্ণয় করে। মোবাইল টাওয়ারের নেটওয়ার্কের বিকিরিত তরঙ্গের ফলে কীটপতঙ্গ ও পাখিরা উড়ার সময় দিক হারিয়ে ফেলে।

ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের ফলে প্রাণীদেহের কোষগুলোর মধ্যে আন্তঃকোষীয় যোগাযোগ ব্যাহত হয়। ফলে পশু-পাখির দেহের যোজককলা গুলো দুর্বল হয়ে যায়। এতে দেহের বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্রম ব্যাহত হয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হয় অধিকাংশ পাখি ও উপকারী কীটপতঙ্গ।

সম্প্রতি নেদারল্যান্ডে উচ্চগতির ইন্টারনেটের ফাইভ জি নেটওয়ার্ক পরীক্ষার সময় অনেক বন্যপ্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। উচ্চগতির ইন্টারনেটের পরীক্ষা করতে গিয়ে শত শত পাখি মারা যায়। অন্যান্য প্রাণীর আচরণে  পরিলক্ষিত হয় অস্বাভাবিকতা।

যে এলাকায় এ পরীক্ষাটি করা হয় তার পাশেই পার্কে অবস্থানরত প্রাণীদের অদ্ভুত আচরণ করতে দেখা যায়। হঠাৎ গাছের ডালে থাকা পাখিগুলো মরে নিচে পড়তে থাকে। এভাবে প্রায় তিনশত পাখি মারা গেছে বলে দাবি করেছে পরিবেশবাদীরা। ফাইভ জি নেটওয়ার্ক থেকে নির্গত মাইওক্রোওয়েভ পাখির হৃদপিন্ডে আঘাত হানে। এর ফলে হৃদযন্ত্র অকেজো হয়ে মারা গেছে পাখিগুলো। অনেকেই মনে করেন কম শক্তির মাইক্রোওয়েভ মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারে না। তবে এই তরঙ্গ মানবদেহের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর।

শুধু পাখি নয়, কাছাকাছি পুকুরে সাঁতার কাটতে থাকা হাঁসগুলোও অদ্ভুত আচরণ শুরু করে নেটওয়ার্ক তরঙ্গের কারণে। পানিতে ডুব দিয়ে হঠাৎ পালানোর চেষ্টা শুরু করে হাঁসগুলো। সমস্ত পশুপাখিই এ উচ্চগতির তরঙ্গকে বিপদ হিসেবে বিবেচনা করে বলে প্রিন্সিপিয়া সায়েন্টিফিক ইন্টারন্যাশনাল নামক এক সাময়িকীতে বলা হয়।

এছাড়াও বন্যপ্রাণীদের জন্য সংরক্ষিত এলাকায় নেটওয়ার্ক টাওয়ার স্থাপনের ফলে জেনারেটরের শব্দ ও কম্পনের কারণে বন্যপ্রাণীদের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়। টাওয়ার পরিচালনায় নিয়মিত যানবাহন আসা যাওয়ার ফলে বন্য পরিবেশও বিনষ্ট হয়। েএমনকি ফসলেরও ক্ষতি করে এ তরঙ্গ। দুর্গম এলাকাগুলোতে সক্রিয় মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্যপ্রাণী পাচারকারীদের জন্য বিশেষ উপহার বলা চলে।

পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণই একে অপরের সাথে নিবিড়ভাবে যুক্ত। তাই পাখি কিংবা কীট পতঙ্গের জীবন বিপন্ন হলে নিরাপদ থাকবে না মানুষের অস্তিত্বও। বন্যপ্রাণীদের স্বাভাবিক জীবন এবং মানুষের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে সংরক্ষিত এলাকায় নেটওয়ার্ক টাওয়ার স্থাপন থেকে বিরত থাকা উচিৎ।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট