
চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে কোন একক মাসে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে (এনসিটি) এতো বেশি সংখ্যক কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের রেকর্ড নেই। এবারই সদ্য বিদায়ী আগস্ট মাসে ১ লাখ ২২ হাজার ৫১৭ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করে। শুধু তাই নয়, একদিন সর্বোচ্চ সংখ্যক কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের রেকর্ডও এই আগস্ট মাসেই হয়েছে। গত ৩১ আগস্ট এনসিটির আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে একদিনে ৫ হাজার ৬১ টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের মাধ্যমে আবারও বন্দরের ইতিহাসে মাইলফলক গড়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আগস্ট মাসের মোট কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের হিসেব কষে নতুন রেকর্ডের এই তথ্য পেয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, এনসিটির দায়িত্ব চিটাগাং ড্রাই ডক লিমিটেড (সিডিডিএল) নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক অতীতের রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করছে।
বন্দরের হিসেব অনুযায়ী, ২৮ আগস্ট এনসিটিতে একদিনে ৫ হাজার ১৯ টিইইউস (কনটেইনারের মাপের একক) হ্যান্ডলিং করে সিডিডিএল একটি নতুন রেকর্ড স্থাপন করে। কিন্তু তার পরপরই মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে ৩১ আগস্ট আগের রেকর্ড ছাড়িয়ে একদিনে ৫ হাজার ৬১ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের মাধ্যমে আবারও মাইলফলক গড়ে।
পুরো আগস্ট মাসে এনসিটিতে মোট ৭৫ হাজার ৫৮৭টি কনটেইনার বক্স হ্যান্ডলিং হয়, যা টিইইউএস হিসেবে ১ লাখ ২২ হাজার ৫১৭। এটি চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের রেকর্ড।
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় চট্টগ্রাম ড্রাই ডক লিমিটেড (সিডিডিএল) একের পর এক নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছে। দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রমে দক্ষতা ও গতিশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি বন্দরের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য রেকর্ড গড়ে তুলেছে।
গত ৭ জুলাই থেকে এনসিটির ২, ৩, ৪ ও ৫ নম্বর বার্থের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই টার্মিনালের সার্বিক কার্যক্রমে দৃশ্যমান পরিবর্তন আসে। সিডিডিএল-এর আধুনিক ব্যবস্থাপনা কৌশল, অভিজ্ঞ জনবল ও সুশৃঙ্খল সমন্বয়ের ফলে জাহাজ আগমন থেকে শুরু করে কাস্টমস এপ্রাইজাল, কনটেইনার ডেলিভারি ও গেট অপারেশন, প্রতিটি ধাপে গতি ও দক্ষতা যোগ হয়েছে। এর ফলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমও আগের চেয়ে অনেক দ্রুত সম্পন্ন হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র। সিডিডিএল দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের কার্যক্রমে যে গতিশীলতা এসেছে, তা প্রশংসনীয়। নতুন এই রেকর্ড আমাদের সক্ষমতার প্রমাণ। ভবিষ্যতে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশকে আরও শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাবে।
বন্দরসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিডিডিএলের ধারাবাহিক সাফল্য শুধু চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতাই বাড়াচ্ছে না; বরং বাংলাদেশের সার্বিক আমদানি-রপ্তানি খাতকে গতি দিচ্ছে। একইসঙ্গে বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের কাছেও এটি দেশের ব্যবসাবান্ধব অবকাঠামো ও পরিচালন দক্ষতার একটি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে।
পূর্বকোণ/আরআর/পারভেজ