
কক্সবাজারের প্রাণ বাঁকখালী নদী দখলমুক্ত করার অভিযান ঘিরে কস্তুরাঘাট এলাকায় ২য় দিনের উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চালাতে গিয়ে দখলদারের হামলায় পুলিশ ও সাংবাদিক মিলে প্রায় ১০ জন আহত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে এ হামলার শিকার হন তারা। অভিযান চলাকালে স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে এবং ৭ পুলিশ সদস্য ও ৩ সংবাদকর্মী আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৩ জন সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হওয়া এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের অভিযানে কস্তুরাঘাট এলাকার অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যা প্রায় তিন বছর আগে নির্মিত ব্রিজের নিচের অংশে গড়ে উঠেছিল।
বিআইডব্লিউটিএ’র বন্দর বিভাগের পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন বলেন, “এতিমখানার নামে জায়গাটি দখল করে রেখেছিলেন। অভিযানে আমাদের কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে এবং হাতাহাতিও হয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় আমরা নির্ভীক ছিলাম।” তিনি আরও বলেন, নদী রক্ষায় বিআইডব্লিউটিএ কখনও আপোষ করে না এবং নির্বিঘ্নে অভিযান শেষ করতে পারলে আজ ৫০-৬০ একর জমি অবমুক্ত করা সম্ভব হবে।
আরিফ উদ্দিন আরও জানান, দখলদাররা নদী ভরাট করে পাথর ও বৃক্ষরোপণ করে ঢাল তৈরির চেষ্টা করছে। কস্তুরাঘাট এলাকায় আতিকুর রহমান নামের এক ব্যক্তি প্রায় ৫০ একর নদীর জায়গা ভরাট করে দখল করেছেন। তার পক্ষে কিছু লোক শিশুদের গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে এবং কাফনের কাপড় পরিয়ে প্রতিবাদ করার চেষ্টা করেছে। এমনকি বড় বড় গাড়ি ও নির্মাণ সামগ্রী ছড়িয়ে প্রশাসনের প্রবেশে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি ইলিয়াস খান জানান, মঙ্গলবার সকাল ১০টার পর অভিযান শুরু হলে উকিল পাড়ার বাসিন্দারা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন সুলতানার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। তারা উচ্ছেদ কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয় এবং সেখান থেকে তিনজনকে আটক করে।এই ঘটনায় ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন সুলতানা জানান, অভিযান চলাকালে অনেকে না বুঝে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করলেও পরে তাদের বুঝিয়ে বলা হলে তারা সহযোগিতা করছেন। তিনি বলেন, “আমরা শতভাগ আশাবাদী যে বাঁকখালী নদীকে আমরা তার জায়গা ফিরিয়ে দিতে পারব।”
উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, গত ২৪ আগস্ট হাইকোর্ট বাঁকখালী নদীর সীমানায় থাকা সব দখলদারের তালিকা তৈরি করে চার মাসের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশের পরপরই জেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ এই বৃহৎ অভিযান শুরু করেছে।
পূর্বকোণ/এরফান/আরআর/পারভেজ