
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ চলছে। রবিবার (৩১ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকায় জোবরা গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল হোসেনসহ অন্তত ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এক প্রান্তে কয়েকশ শিক্ষার্থী অবস্থান নেন। বিপরীত দিকে ছিলেন এলাকাবাসী। দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ শিক্ষকেরা দুই পক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। ইটের আঘাতে আহত অবস্থায় অন্তত ১০ শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের দিকে নিয়ে যেতে দেখা যায়। তাদের মাথা থেকে রক্ত ঝরছিল।
এর আগে গতকাল রাত সাড়ে ১১টায় ভাড়া বাসায় ফিরতে দেরি হওয়ায় এক নারী শিক্ষার্থীকে ওই বাড়ির দারোয়ান হেনস্তা ও মারধর করেন। খবর পেয়ে সহপাঠীরা গিয়ে দারোয়ানকে ধরার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা মাইকিং করে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। বাচামিয়ার দোকানসংলগ্ন এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর চারদিক থেকে হামলা হয়, পরে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে পুরো ২ নম্বর গেট এলাকা থেকে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক পর্যন্ত।
হামলাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির গাড়িবহর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়িতেও ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিন প্লাটুন সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
চবি মেডিকেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মুহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, আহতদের সংখ্যাটা ৫০-এর বেশি হবে। এদের মধ্যে প্রথমে তিন ধাপে মোট ১২ জনকে গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠায়েছি। পরে আরও কয়েকজনকে পাঠানো হয়। কারও মাথায় আঘাত, কারো হাতে বা পায়ে ফ্র্যাকচার, লাঠি দিয়ে পেটানোর চিহ্ন, কারো মাথায় পাথরের আঘত, কারো শরীরে কোপের দাগ দৃশ্যমান। এছাড়াও বহু শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন। আমরা তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, ‘আমরা রাত ১২টাতেই আমাদের একাধিক নিরাপত্তা টিম ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকায় তাদেরকে এক জায়গায় এনে দিক নির্দেশনা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। সময়মতো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতিও ছিল না। পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়। রাতে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।’
পূর্বকোণ/পিআর