
বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলকে নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই সমালোচনা হচ্ছিল। বিশেষ করে অধিনায়ক লিটন দাসের ফর্ম নিয়ে প্রশ্ন ছিল প্রবল। তবুও বোর্ড তার ওপর আস্থা রাখে। আর সিলেটের মাঠে সেই আস্থার জবাব দিয়েছেন লিটন- ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ফিফটি ও নেতৃত্বে আক্রমণাত্মক সিদ্ধান্তে। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৮ উইকেটের জয় তাই কেবল একটি জয় নয়, বরং নতুন করে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার ইঙ্গিতও।
টি-টোয়েন্টিতে শুরুটা অনেক সময়েই ম্যাচের গতি নির্ধারণ করে দেয়। লিটন সেই জায়গাটিতেই সাহসী সিদ্ধান্ত নেন—প্রথম ওভারেই নতুন বল দেন স্পিনার মেহেদীকে। যদিও শরিফুল কিছুটা ব্যর্থ হলেও দ্রুতই তাসকিনকে আক্রমণে এনে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন অধিনায়ক।
তাসকিনের প্রথম ওভারেই ব্রেকথ্রু, পরে আরও তিনটি উইকেট—এতে বোঝা গেল, নতুন বলে সঠিক জায়গায় বল ফেলতে পারলে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখা যায়। তাছাড়া, প্রায় দুই বছর পর দলে ফেরা সাইফ হাসান বল হাতে তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলেন। এক ওভারেই দুই উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচ পুরোপুরি বাংলাদেশের দিকেই সরিয়ে দেন তিনি।
সাদা বলের ক্রিকেটে অনেকদিন ধরেই ব্যাট হাতে রান পাচ্ছিলেন না লিটন। অধিনায়কত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও সমালোচনা হয়েছে যথেষ্ট। কিন্তু চাপের মুহূর্তেই তিনি দেখালেন অভিজ্ঞতার ছাপ। মাত্র ২৬ বলে ফিফটি করে খোলেন রানক্ষরা ব্যাট। ব্যাটিংয়ের ধরনে দেখা গেল আত্মবিশ্বাস, সেই সঙ্গে দায়িত্ব নেওয়ার মানসিকতা।
যেখানে অন্যরা আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলেন, সেখানে লিটন ইনিংসকে স্থিতি দিয়ে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ম্যাচ জেতালেন। এটি শুধু একটি ইনিংস নয়—অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করার দৃঢ় বার্তাও।
প্রায় দুই বছর পর দলে ফিরে প্রথম ম্যাচেই সাইফ হাসান বল হাতে দুই উইকেটের পাশাপাশি ব্যাট হাতে ১৯ বলে ৩৬ রান করেছেন। এই পারফরম্যান্স একদিকে দলের জন্য বাড়তি বিকল্প তৈরি করেছে, অন্যদিকে তাকে নতুন করে টি-টোয়েন্টি পরিকল্পনায় ভাবতে বাধ্য করবে টিম ম্যানেজমেন্টকে।
১৩৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে বাংলাদেশ মাত্র ৮১ বল ব্যয় করেছে। হাতে রেখেছে ৮ উইকেট। এর চেয়েও বড় বিষয় হলো, ব্যাটিং-বোলিং উভয় বিভাগ থেকেই ইতিবাচক পারফরম্যান্স এসেছে। লিটনের নেতৃত্বে যে দলটি মাঠে নেমেছিল, তাদের মধ্যে আস্থা ও শৃঙ্খলা দুটোই স্পষ্ট ছিল।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ