
ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মারা যাওয়া উক্যচিং মারমার মরদেহ রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া কলেজ পাড়া এলাকার বাড়িতে পৌঁছেছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সন্ধ্যায় মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। তাদের সান্ত্বনা দিতে গিয়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি প্রতিবেশীরা।
উক্যচিং মারমা মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল। তার বাবা উসাইমং মারমা রাজস্থলী উপজাতীয় আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় উসাইমং মারমা বলেন, সকাল ৯টায় ছেলের মরদেহ বুঝে পাই। এরপর এম্বুলেন্সে ছেলের মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে রওনা হই। সন্ধ্যা নাগাদ গ্রামে পৌঁছাই। আগামীকাল বুধবার সকাল ৯টায় পারিবারিক শ্মশানে ছেলের সৎকার হবে।
তিনি বলেন, কত স্বপ্ন নিয়ে ছেলেকে ঢাকায় পাঠালাম। আজ আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।
উক্যচিং মারমার দাদু কংহলাপ্রু মারমা বলেন, নাতিকে এভাবে হারাবো কখনো ভাবিনি। অত্যন্ত ভদ্র ও সুর্দশন ছিল আমার নাতি। সে অনেক মেধাবী ছাত্র ছিল। উচ্চ শিক্ষার জন্য ঢাকায় যায়। লাশ হয়ে ফিরছে আমার নাতি। ওর সঙ্গে কত স্মৃতি, সব চোখের সামনে ভেসে উঠছে।
নাতির পুরানো ছবি দেখে বারবার বিলাপ করছিলেন দাদি ক্রাপ্রুমা মারমা (৬৫) কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, নাতিকে কোলে-পিঠে আদর করে বড় করেছি। তারা বান্দরবান থাকলেও ছুটিতে বাড়িতে আসতো। কত দুষ্টুমি করতো আমার নাতিটা। নাতির এই মৃত্যু আমরা কোনোভাবেই মানতে পারছি না।
তিনি বলেন, আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো সে সামান্য আঘাত পেয়েছে। যখন অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ার কথা শুনি, তখন নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারছিলাম না। সে পড়ালেখায় খুব ভালো ছিল। নাতিটার এইভাবে মৃত্যু হবে, তা আমরা কখনো কল্পনা করিনি।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের একটি ভবনে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হলে দগ্ধ হয় উক্যচিং মারমা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
চিকিৎসকরা সব চেষ্টা করেও তাকে বাঁচাতে পারেননি। সোমবার (২১ জুলাই) রাত ২টার দিকে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে উক্যচিং মারমার মৃত্যু হয়।
পূর্বকোণ/আজগর/জেইউ/পারভেজ