
চিহ্নিত মাদককারবারি ওয়াজ উদ্দিন ও মিনহাজ উদ্দিন সিন্ডিকেটের মাদকপাচার বন্ধসহ মাদককারবারিদের গ্রেপ্তার ও মাদক বিক্রির আস্তানা উচ্ছেদের দাবিতে কক্সবাজারের মহেশখালী-পেকুয়া নৌ চ্যানেলের উজানটিয়ায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুর ১টায় বদরখালী এবং পেকুয়ার উজানটিয়ার টেকপাড়া চিংড়ি ঘের মালিক ও সচেতন এলাকাবাসীর ব্যানারে টেকপাড়ায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত মানববন্ধনে মাদককারবারিদের হয়রানির শিকার ভুক্তভোগী চিংড়ি ঘের মালিক শহিদুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিগত ২০২১ সালে উজানটিয়া রূপালী বাজার পাড়ার ওয়াজ উদ্দিন (চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক) এবং তার ভগ্নিপতি বদরখালীর রমিজকে এক লাখ ২০ হাজার ইয়াবাসহ ওয়াজ উদ্দিননের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিফ্রিংয়ে ইয়াবাগুলো রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পাচার হয়ে চট্টগ্রাম যাচ্ছিল বলে জানায়। সাগর পথ জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধের পাশে হওয়ায় মাদক বেচাকেনার মিড়ল পয়েন্ট হিসেবে বেচে নেয় কারবারিরা। গ্ৰেপ্তার হওয়ার পর উক্ত মামলায় যাবজ্জীবন সাজা হয় তাদের। চার বছর জেল খাটার পর জামিনে মুক্ত হয়। আগে থেকে ওয়াজ উদ্দিনের আপন ভাতিজা মিনহাজ উদ্দিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরি করে। সে সুবাদে মাদক পাচারকারীদের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে।
‘মিনহাজ উদ্দিন তার পরিবারের সদস্যদের দিয়ে মাদকগুলো চট্টগ্রামসহ ঢাকা পাচার করত। ঢাকায় তার একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট নেটওয়ার্ক গড়ে উঠে।’
‘পাঁচ আগস্টের পূর্বে তারা ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে রমরমা মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। আবার ৫ আগস্ট পরবর্তী ছাত্রলীগের ক্যাডার মিনহাজ উদ্দিন ধরাকে সরা জ্ঞান করে আবার সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে পুনরায় মাদক ব্যবসা চালু করে। প্রতিরাতে মিনহাজের চালান সাগর পথে মহেশখালী-পেকুয়া নৌ -চ্যানেল হয়ে টেকপাড়া এসে পৌঁছায় সেখান থেকে রূপালি বাজার নিয়ে যাওয়া হয়। তখন মাদকের গডফাদার মিনহাজ উদ্দিনের সশস্ত্র মাদক কারবারিরা সে মাদকের চালান পাহাড়ায় থাকে। যার কারণে এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে চিংড়ি প্রজেক্টে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে এর আগে ভুক্তভোগী ও শহিদুল ইসলাম ইয়াবা পাচারে বাঁধা দিলে হামলা করে তার চোখ নষ্ট করে মাদক কারবারিরা। এবং সেই সময় আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে তাদের হেফাজতে থাকা অস্ত্র দিয়ে তাকে পুলিশের কাছে জমা দিয়ে দিয়ে স্বৈরাচারী আচারণ করে। তাই অবিলম্বে দুর্ধর্ষ মাদককারবারি মিনহাজ উদ্দিনকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এনজিও সংস্থা থেকে নিষিদ্ধের পাশাপাশি দ্রুত গ্ৰেপ্তার করে বিশাল ইয়াবা ও অস্ত্র ভাণ্ডার উদ্ধারের দাবি জানায় দুই এলাকার সচেতন জনতা।’
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সিন্ডিকেটের সদস্য মোহাম্মদ কাইয়ুম, ইসমাইল, নুরনবী, আবু নাঈম, নেজাম উদ্দিন, জয়নাল আবেদীন। এলাকার মাদকের আস্তানার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এ কারণে টেকপাড়ায় উঠতি বয়সী যুবকসহ বিভিন্ন স্তরের লোকজনের আনাগোনায় প্রতিনিয়ত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। এতে উক্ত এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও অবনতি হচ্ছে। অবিলম্বে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও মাদক আস্তানা উচ্ছেদ করার দাবি জানান তারা।
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এদিকে মিনহাজ উদ্দিনের নামে একাধিক মামলায় ওয়ারেন্ট থাকলেও সে প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছে। অদৃশ্য কারণে গ্রেপ্তার করেছে না পুলিশ।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইছার হামিদ বলেন, সাগর পথে ইয়াবা পাচার হয় বলে শুনেছি। তবে সঠিক তথ্য পেলে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
একই কথা জানিয়ে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল মোস্তফা বলেন, দুর্গম এলাকায় অপরাধীরা আছে অবগত, যদি এলাকার মানুষ সঠিক তথ্য দিলে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
পূর্বকোণ/হুবাইব/জেইউ