চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

খাজনা বাকি ২৩০ কোটি টাকা

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম জেলায় সাধারণ ও সংস্থা খাতে ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) বকেয়া রয়েছে প্রায় ২৩০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের বকেয়া রয়েছে প্রায় ১৯৪ কোটি ৭৮ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। আর সাধারণ খাতে বকেয়া আছে ৩৫ কোটি ৮৬ লাখ ৫৮ হাজার টাকা।

ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) আদায় করে সরকারের ভূমি অধিদপ্তর। দুই ভাগে ভাগ করে নগরে ভূমি সার্কেল ও উপজেলায় ভূমি কার্যালয় খাজনা আদায় করে। শিল্প প্রতিষ্ঠানের জায়গা-জমির খাজনা আদায় হয় সংস্থা খাতে নামে। আর ব্যক্তিগত জমি-জমার খাজনা আদায় হয় সাধারণ খাতে।

 

জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, গত অর্থবছরে (২০২৩-২০২৪) চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার বিভিন্ন উপজেলা মিলে ভূমি উন্নয়ন করের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ২০২ কোটি ৫২ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪২ টাকা। এরমধ্যে আদায় হয়েছে ৭ কোটি ৭৩ লাখ ৪৯ হাজার ৬২৫ টাকা। আদায়ের হার তিন দশমিক ৮২ শতাংশ। আর বকেয়া রয়েছে ১৯৪ কোটি ৭৮ লাখ ৯৫ হাজার ৯১৭ টাকা।

 

সাধারণ খাতে খাজনা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৫৬ কোটি ৪৫ লাখ ২৯ হাজার ৫৩৪ টাকা। সব মিলিয়ে আদায় হয়েছে ২০ কোটি ৫৮ লাখ ৭১ হাজার ১৬৭ টাকা। আদায়ের হার ৩৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ। বকেয়া রয়েছে ৩৫ কোটি ৮৬ লাখ ৫৮ হাজার ৩৬৭ টাকা।

 

সংস্থা ও সাধারণ- দুই খাতে মিলে খাজনা আদায়ের দাবি ধরা হয় ২৫৮ কোটি ৯৭ লাখ ৭৫ হাজার ৭৬ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে গত বছরের (২০২৪ সাল) নভেম্বর মাস পর্যন্ত সময়ে আদায় হয়েছে ২৮ কোটি ৩২ লাখ ২০ হাজার ৭৯২ টাকা। বকেয়া রয়েছে ২৩০ কোটি ৬৫ লাখ ৫৪ হাজার ২৮৪ টাকা।

 

গত ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জেলা সমন্বয় কমিটির সভার কার্যবিবরণী পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া যায়। বকেয়া খাজনা পরিশোধে বিভিন্ন সংস্থার প্রধানদের কাছে চিঠি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও সার্কেল ভূমি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক। এছাড়াও ক্ষেত্রবিশেষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েও জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের অফিস থেকে সব চিঠি একীভূত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।

 

এছাড়াও সাধারণ খাতে হোল্ডিং অনুযায়ী শ্রেণি মোতাবেক খাজনা আদায় নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক। চলতি অর্থ বছরে খাজনা শতভাগ আদায় নিশ্চিতকল্পে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেন তিনি।

 

সংস্থা খাত: চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলায় মিলে ২১ উপজেলা-থানায় খাজনা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ২০২ কোটি ৫২ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪২ টাকা। এরমধ্যে আদায় হয়েছে ৭ কোটি ৭৩ লাখ ৪৯ হাজার ৬২৫ টাকা। আদায়ের হার তিন দশমিক ৮২ শতাংশ। এরমধ্যে সীতাকু-ে ২৯ কোটি ৩৮ লাখ ৮৫ হাজার ৯৯৩ টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে কোনো টাকাই আদায় হয়নি। নগরের বাকলিয়া সার্কেল ও কর্ণফুলী উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে কোনো টাকা আদায় হয়নি। বাকলিয়া সার্কেলে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১০ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার ৮০৫ টাকা। আর কর্ণফুলী উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩৬ লাখ ৪৯ হাজার ১৭ টাকা।

 

এছাড়াও খাজনা আদায়ের হার এক শতাংশের নিচে রয়েছে আগ্রাবাদ, সদর ও কাট্টলী সার্কেল, জেলার রাঙ্গুনিয়া, পটিয়া, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলা।

 

খাজনা আদায়ের শীর্ষে রয়েছে জেলার বাঁশখালী, ফটিকছড়ি ও রাউজান উপজেলায়। বাঁশখালীতে ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৮৮৩ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৫১ লাখ ২২ হাজার ৭৫৬ টাকা। যা ৬৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এরপর ফটিকছড়িতে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৬ হাজার ৫৫০ টাকার বিপরীতে খাজনা আদায় হয়েছে এক কোটি ৮১ লাখ ৮৮ হাজার ৭১২ টাকা। ৬৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ। রাউজানে ৫৯ লাখ ৭৯ হাজার ৫৭১ টাকার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩১ লাখ ৫৬ হাজার ৯১ টাকা। যা ৫২ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

 

সাধারণ খাত: ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) পরিশোধে সংস্থা খাতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে সাধারণ খাত। আদায়ের হার ৩৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এই খাতে খাজনা পরিশোধে এগিয়ে রয়েছে সাতকানিয়া ৬৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ। আনোয়ারা ৫৯ দশমিক ৪২, বোয়ালখালী ৪৮ দশমিক ৮৬, রাঙ্গুনিয়া ৪৮ দশমিক ৩২ ও রাউজানে ৪৬ শতাংশ। পিছিয়ে রয়েছে পটিয়া ২৩ দশমিক ৭৯, আগ্রাবাদ সার্কেলে ২৪ দশমিক ১৭, পতেঙ্গায় ২৫ এবং বাঁশখালীতে ২৫ দশমিক ৮১ শতাংশ।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট