চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫

সর্বশেষ:

স্বরাষ্ট্রে যাচ্ছে না এনআইডি, ২০২৩ সালের আইন বাতিল

অনলাইন ডেস্ক

১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৫:২৭ অপরাহ্ণ

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত রাখার জন্য জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০২৩ বাতিল করা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

 

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, এনআইডি কার্যক্রম ইসির কাছ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে ন্যস্ত করতে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ২০২৩ সালে একটি আইন করে। ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০২৩’ শীর্ষক ওই আইনে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে কার্যক্রম সুরক্ষা সেবা বিভাগে না নেওয়া পর্যন্ত ইসির অধীনেই পরিচালনার কথা বলা হয়। সেই মোতাবেক এখনও এনআইডি ইসির অধীনেই আছে।

 

এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারাসহ সুশীল সমাজ এবং দেশের সাধারণ মানুষ এই কার্যক্রমটি ইসির অধীনে রাখার দাবি জানিয়ে আসছে শুরু থেকেই। তারা ২০২৩ সালের নতুন আইনটি বাতিল করার দাবি জানান। এরপর বৃহস্পতিবার আইনটি বাতিল হলো।

 

এর আগে এনআইডি আইন-২০২৩ বাতিল করতে বুধবার নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে পাঠানো হয়। ইসি চিঠিতে উল্লেখ করেছে, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৯ (১) অনুসারে রাষ্ট্রপতি পদের ও সংসদের নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণের তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ এবং অনুরূপ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত।

 

পাশাপাশি ভোটার তালিকা আইন-২০০৯’র ধারা ১১ ও ভোটার তালিকা বিধিমালা, ২০১২’র বিধি ৩(গ) এবং এতদসংক্রান্ত বিষয়ে উচ্চ আদালতের আদেশ অনুসারে ভোটার তালিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তদনুযায়ী ধারাবাহিকভাবে প্রাথমিক স্তর থেকে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে ভোটার তালিকা প্রস্তুত, হালনাগাদসহ প্রাসঙ্গিক কার্যাদি নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত। বর্ণিত কার্যক্রম থেকে ফলাফল হিসেবে যে দুটি বিষয় পাওয়া যায় তা হচ্ছে- ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)।

 

ইসি আরও জানিয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও একই ভোটার তালিকা ব্যবহার করা হয়। ২০২১ সালের ১৭ মে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যস্ত করার বিষয়ে তৎকালীন সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এতদসূত্রে সেই বছরের ৭ জুন নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বরাবর পাঠানো চিঠির মাধ্যমে এনআইডি কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনে রাখার পক্ষে মতামত প্রেরণ করা হয়।

 

অতপর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আর কোন যোগাযোগ বা আলোচনা ব্যতিরেকেই ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০১০ বাতিলপূর্বক জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০২৩ প্রণয়ন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর রুলস অব বিজনেস-১৯৯৬’র বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর মধ্যে কার্যাবলী বণ্টনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের দায়িত্বসমূহের মধ্যে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

 

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০২৩ জারি করা হলেও আইনের ধারা ১(২) অনুযায়ী গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে আইনটি কার্যকর করার শর্ত থাকলেও অদ্যাবধি তা করা হয়নি বিধায় ধারা ৩০(৩)’র উপধারা ১(খ) অনুযায়ী জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন হতে পরিচালিত হচ্ছে।

 

পূর্বকোণ/মাহমুদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট