চট্টগ্রাম জেলায় ৩৭৩ ইটভাটা রয়েছে। এসব ইটভাটা থেকে ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৮ লাখ ৯৫ হাজার ৪২৮ টাকা। এর বিপরীতে গত নভেম্বর মাসে খাজনা আদায় হয়েছে ৭ লাখ ৯১ হাজার ৫৫৭ টাকা।
সবমিলে বছরে আদায় হয়েছে ১৫ লাখ ৬৮ হাজার ৫৪ টাকা। যা খাজনা আদায় লক্ষ্যমাত্রার ২৭ শতাংশ। এখন পর্যন্ত ৭৩ শতাংশ খাজনা বকেয়া রয়েছে। গত ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত জেলা সমন্বয় সভার তথ্য পর্যালোচনা করে এই তথ্য পাওয়া যায়। দ্রুত বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর আদায় ও অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা-ভূমি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম জেলায় ৩৭৩ ইটভাটা রয়েছে। এরমধ্যে নগর ও জেলার পটিয়া উপজেলায় কোনো ইটভাটা নেই। জেলায় সবচেয়ে বেশি ইটভাটা রয়েছে রাঙ্গুনিয়া, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, রাউজান, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও চন্দনাইশ উপজেলায়। রাঙ্গুনিয়ায় ৭০টি, সাতকানিয়ায় ৫৩টি, রাউজানে ৪৭টি, ফটিকছড়িতে ৪৩টি, লোহাগাড়ায় ৪২টি এবং হাটহাজারী ও চন্দনাইশে ৩২টি করে। এছাড়াও মিরসরাইয়ে ১৪টি, সন্দ্বীপে ১৬টি, সীতাকুণ্ডে ৮টি, বোয়ালখালীতে দুটি, কর্ণফুলীতে ৮টি, আনোয়ারায় দুটি ও বাঁশখালীতে চারটি।
খাজনা আদায় ও বকেয়া: জেলা প্রশাসনের হিসাবে চলতি মৌসুমে (২০২৪-২০২৫) জেলার ৩৭৩টি ইটভাটা থেকে ভূমি উন্নয়ন কর দাবি করা হয় ৫৮ লাখ ৯৫ হাজার ৪২৮ টাকা। এরমধ্যে শুধু গত বছরের নভেম্বর মাসে আদায় হয়েছে ৭ লাখ ৯১ হাজার ৫৫৭ টাকা। চলতি মৌসুমে সর্বমোট আদায় হয়েছে ১৫ লাখ ৬৮ হাজার ৫৪ টাকা। সেই তথ্যে দেখা যায়, জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলায় শতভাগ খাজনা আদায় করা হয়েছে। তবে রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী, আনোয়ারা, সাতকানিয়া ও বাঁশখালী উপজেলায় কোনো অর্থ আদায় হয়নি।
জেলা প্রশাসনের হিসাবের তথ্য বলছে, মিরসরাই উপজেলায় ১৪ ইটভাটা থেকে দুই লাখ ১১ হাজার ৬৮০ টাকার খাজনা দাবি করা হয়। এর বিপরীতে গত নভেম্বর মাস পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আদায় হয়েছে ১৩ হাজার ৩০০ টাকা। সীতাকুণ্ড উপজেলায় আটটি ইটভাটায় ছয় লাখ ৩৯ হাজার ২৭৯ টাকার খাজনা দাবি করা হয়। দাবির বিপরীতে শতভাগ খাজনা আদায় হয়েছে। সন্দ্বীপ উপজেলায় ১৬ ইটভাটা থেকে দুই লাখ ৪৪ হাজার ৬৪০ টাকার খাজনা দাবি করা হয়। আদায় হয়েছে এক লাখ ৮৫ হাজার ৪৩৩ টাকা।
ফটিকছড়িতে ৪৩ ইটভাটায় ১০ লাখ ৪৫ হাজার ৪ টাকার খাজনা দাবি করা হয়। আদায় হয়েছে ৫৪ হাজার ৯৩২ টাকা। হাটহাজারী উপজেলায় ৩২ ইটভাটায় ৬ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকার খাজনা দাবি করা হয়। আদায় হয়েছে ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা। রাউজান উপজেলায় ৪৭ ইটভাটায় দুই লাখ ৬০ হাজার ৩০০ টাকার খাজনা দাবি করা হয়। আদায় হয়েছে ৩৪ হাজার ২০০ টাকা। রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ৭০ ইটভাটায় ৫ লাখ ৩৯ হাজার ২০০ টাকার খাজনা দাবি করা হয়। দাবির বিপরীতে কোনো টাকাই আদায় হয়নি।
বোয়ালখালী উপজেলায় ২ ইটভাটায় ২২ হাজার ১৭৯ টাকার খাজনা দাবির প্রেক্ষিতে কোনো টাকা আদায় হয়নি। কর্ণফুলী উপজেলায় ৮ ইটভাটায় ৬৮ হাজার টাকার খাজনা দাবি করা হয়। আদায় হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। আনোয়ারা উপজেলায় দুই ইটভাটায় ১৮ হাজার ৪৮০ টাকার খাজনা দাবির বিপরীতে কোন অর্থই আদায় হয়নি। চন্দনাইশ উপজেলায় ৩২ ইটভাটায় চার লাখ ৭০ হাজার ৭৬৪ টাকার খাজনা দাবি করা হয়। আদায় হয়েছে ৩৪ হাজার এক টাকা। সাতকানিয়া উপজেলায় ৫৩ ইটভাটায় ১০ লাখ ৭৪ হাজার ৫৬৭ টাকার খাজনা দাবি করা হয়। এর বিপরীতে কোনো অর্থ আদায় হয়নি।
লোহাগাড়া উপজেলায় ৪২ ইটভাটায় ৫ লাখ ৫ হাজার ৪৪০ টাকার খাজনা দাবি করা হয়। আদায় হয়েছে ৪৩ হাজার ৪০৯ টাকা। বাঁশখালী উপজেলায় চার ইটভাটায় এক লাখ ২৮ হাজার ৩৯৫ টাকার খাজনা দাবির প্রেক্ষিতে এক টাকাও আদায় হয়নি।
পূর্বকোণ/ইব