জার্মানিতে ক্রিসমাসের মার্কেটে ভিড়ের মধ্যে এক ব্যক্তি গাড়ি উঠিয়ে দিলে দুইজন নিহত এবং আহত হয়েছে ৬৮ জন। নিহত দুইজনের মধ্যে একটি শিশু। মাগডেবুর্গের শহর প্রশাসন জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, ৩৭ জন গুরুতরভাবে আহত এবং ১৬ জন সামান্য আঘাত পেয়েছেন।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাক্সেন আনহাল্ট অঙ্গরাজ্যের মাগডেবুর্গের একটি ব্যস্ততম বাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে। মাগডেবুর্গ শহরটি বার্লিন থেকে ১৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এএফপি এই খবর জানিয়েছে।
ঘটনার সময় স্থানীয় লোকজন বড়দিনের কেনাকাটায় ব্যস্ত ছিলেন। হামলার পরপরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযানে নামে এবং ঘটনাস্থল থেকে সামান্য দূরে গাড়ি থামিয়ে গাড়িসহ হামলাকারীকে আটক করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যার সময় এলাকার ব্যস্ততম মার্কেটে পথচারীদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দেয় এক ব্যক্তি। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন প্রাণ হারান। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মাগডেবুর্গ শহরে ক্রিসমাস মার্কেট জমজমাট হয়ে উঠেছিল। সন্ধ্যা ৭টার কিছু পরেই একজন গাড়িচালক অসংখ্য মানুষের মধ্য দিয়ে মার্কেটের ভেতরে প্রায় ৪০০ মিটার পথ গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যান। এরপর জার্মানির নানা শহরে ক্রিসমাস মার্কেটগুলো আতঙ্কে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, এই হামলাকারী জঙ্গিবাদী কি না, সে বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে তদন্ত চলছে। হামলার ঘটনার পর ম্যাগডেবুর্গ পুলিশ এলাকাটি ঘেরাও করে রাখে। কারণ, পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ওই গাড়িতে বিস্ফোরক রয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়ছে।
জানা গেছে, হামলাকারী একজন সৌদি নাগরিক। জার্মানির সংবাদমাধ্যম হামলাকারীর নাম তালেব এ (৫০) বলে জানিয়েছে। তিনি একজন চিকিৎসক। ২০০৬ সাল থেকে জার্মানির স্থানীয় একটি ক্লিনিকে মানসিক চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত আছেন। কালো রঙের বিএমডব্লিউ গাড়িটিতে তিনি একাই ছিলেন। পুলিশ তাকে পেছনে দুই হাত বেঁধে নিয়ে যায়।
এদিকে এই হামলার ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর, দেশটির স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীসহ অঙ্গরাজ্যেটির মিনিস্টার প্রেসিডেন্ট রাইনার হাজেলফ এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
ঘামলার ঘটনায় এলাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুলিশ এলাকাটি ঘিরে রেখেছে। হামলায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের কেউ হতাহত হননি বলে জানিয়েছেন কমিউনিটির নেতারা।
এর আগে ২০১৬ সালে তিউনিসিয়ার বংশোদ্ভূত এক রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী জার্মানির রাজধানী বার্লিনের একটি বড়দিনের মার্কেটে জনতার ভিড়ের মধ্যে লরি হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ১২ জনকে হত্যা করে।
পূর্বকোণ/এএইচ