পিলখানায় ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫৮ জনকে আসামি করে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) পিলখানা হত্যাকাণ্ডের শিকার সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ অভিযোগ দায়ের করেন।
এ অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এ সময় তৎকালীন বিডিআরের ডিজি মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে ব্যারিস্টার রাকিন আহমেদ, শহীদ কর্নেল মুজিবুল হকের স্ত্রী ফেরদৌসী, কর্নেল কুদরত এলাহীর ছেলে সাকিব রহমানসহ ১৫-২০ জন শহীদ পরিবারের সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর পিলখানায় পিলখানা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, এই কমিটিতে থাকবেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, সশস্ত্র বিভাগ ও পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলে ওই ঘটনা। সেই বিদ্রোহের পর সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআরের নাম বদলে যায়, পরিবর্তন আসে পোশাকেও। এ বাহিনীর নাম এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি।
বিদ্রোহের বিচার বিজিবির আদালতে হলেও হত্যাকাণ্ডের মামলা বিচারের জন্য আসে প্রচলিত আদালতে। এই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে মুক্তি আটকে আছে ৪৬৮ বিডিআর সদস্যের।
হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাইকোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরও ২২৮ জনকে দেয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান ২৮৩ জন।
পূর্বকোণ/মাহমুদ