হাটহাজারীর বাসিন্দা রফিক আহমেদ। শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে গতকাল ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসক ওষুধের পাশাপাশি শিরায় দেওয়ার জন্য রোগীকে নরমাল স্যালাইন দিতে বলেন স্বাস্থ্যকর্মীদের। কিন্তু সরকারি ওষুধ বরাদ্দ থাকলেও রফিকের ভাগ্যে মিলেনি স্যালাইন। অগত্যা বাইরে থেকে কিনে এনে শরীরে পুশ করতে হয় রফিকের।
শুধু রফিক নন। গত দুই সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ভর্তি হওয়া সাধারণ রোগীদের জন্য সরবরাহ নেই এই নরমাল স্যালাইন। ডেঙ্গুর মৌসুমে গেল দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে নরমাল স্যালাইনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে সরকারি এ হাসপাতালে। যদিও হাসপাতালে মজুদ অল্প কিছু স্যালাইন অগ্রাধিকারভিত্তিতে ডেঙ্গু রোগীদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, টার্সিয়ারি পর্যায়ের ২২শ শয্যার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালটিতে প্রতিদিন রোগীদের জন্য নরমাল স্যালাইনের চাহিদা থাকে গড়ে ৮শ থেকে ১ হাজার পিস। অথচ গতকাল শনিবার হাসপাতালটিতে স্যালাইনের মজুদ ছিল মাত্র ৩শ। অর্থাৎ প্রতিদিন রোগীদের যে পরিমাণ স্যালাইনের প্রয়োজন রয়েছে, তার মাত্র এক তৃতীয়াংশ মজুদ আছে হাসপাতালটিতে। এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মজুদ স্যালাইন বণ্টনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ডেঙ্গু রোগী এবং জরুরি রোগীদের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সরকারি হাসপাতালগুলোতে স্যালাইন সরবরাহ করে থাকে সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল)। কিন্তু মাসখানেক ধরে প্রতিষ্ঠানটি চাহিদার পর্যাপ্ত স্যালাইন সরবরাহ করতে পারছে না। সর্বশেষ গত ১৬ নভেম্বর চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১০ হাজার নরমাল স্যালাইনের চাহিদা পাঠানো হয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সিনিয়র স্টোর অফিসার ডা. দিলিপ চৌধুরী বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে নরমাল স্যালাইনের সংকট রয়েছে। যে পরিমাণ চাহিদা দেওয়া হচ্ছে, তা পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে মজুদও খুবই কম। তাই শুধুমাত্র ডেঙ্গু রোগী এবং খুবই জরুরি রোগী ছাড়া অন্যদের সরবরাহ করা যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ইডিসিএলেও চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে।
পূর্বকোণ/ইব