দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের বেড়ে চলা পরিবেশগত হুমকি মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও দ্বীপের সৌন্দর্য ধরে রাখার লক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় একটি ৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ তথ্য জানা যায়।
কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন কক্সবাজার সদর এবং টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ), বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার প্রতিনিধিরা কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
সেন্টমার্টিনের পরিবেশ ও পর্যটন ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেওয়া কমিটি বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অ্যাপের মাধ্যমে পর্যটকদের নিবন্ধন, পলিথিন নিষেধাজ্ঞা, নির্দেশনা মূলক বিলবোর্ড স্থাপন এবং পর্যটকদের অবস্থান তথ্য সংরক্ষণের মতো বিভিন্ন উদ্যোগ হাতে নিয়েছে।
সেন্টমার্টিনের পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে সরকার নতুন কিছু নির্দেশনা জারি করেছে। নভেম্বর মাসে দ্বীপে পর্যটকদের রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ করা হলেও, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটককে রাত্রিযাপনের অনুমতি দেওয়া হবে। তবে এই সময়কালে দ্বীপে রাতে আলো ব্যবহার, শব্দ দূষণ এবং বারবিকিউ পার্টি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য হলো সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধরে রাখা এবং টেকসই পর্যটন নিশ্চিত করা।
এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা দাবি করছেন, এই বিধিনিষেধের ফলে তাদের জীবিকা হরণ হবে।
পরিবেশ বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সেন্টমার্টিনের পরিবেশ সুরক্ষার জন্য এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি। অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনের ফলে দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধ্বংস হচ্ছে। এই কমিটির মাধ্যমে পরিবেশ ও পর্যটনের মধ্যে একটি সুষমতা বজায় রাখা সম্ভব হবে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ বাঁচাতে গৃহীত এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকে। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবিকা ও পর্যটন শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। সরকারকে এখন এই দুইয়ের মধ্যে একটি সুষমতা বজায় রাখতে হবে বলে জানান পর্যটকরা।
পূর্বকোণ/এরফান/জেইউ/পারভেজ