আগামী বছর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে ‘সাধারণ’ ও ‘বিশেষ’- দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন এজেন্সি মালিকরা।
খাবার খরচ যুক্ত করে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ঘোষিত সাধারণ হজ প্যাকেজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা এবং বিশেষ হজ প্যাকেজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।
বুধবার (৬ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘সাধারণ হজ এজেন্সির মালিকবৃন্দ’ ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়।
‘হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর বাতিল হওয়া কমিটি মূলত এই প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। প্যাকেজগুলো ঘোষণা করেন হাবের সদ্য সাবেক কমিটির সভাপতি ফারুক আহমেদ সরদার।
চলতি বছর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সর্বনিম্ন খরচ হবে পাঁচ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকায় প্যাকেজ দিয়েছিল হাব। সেই হিসাবে সর্বনিম্ন প্যাকেজে গতবারের চেয়ে খরচ কমছে ৬৬ হাজার ৮০০ টাকা।
তবে ঘোষিত দুটি প্যাকেজে খাবারের ব্যয় যুক্ত থাকলেও কোরবানির খরচ অন্তর্ভুক্ত নয়। কোরবানির জন্য হাজিদের আনুমানিক আরও ৭৫০ রিয়াল সঙ্গে নিতে হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান ফারুক আহমেদ সরদার।
তিনি বলেন, সাধারণ প্যাকেজে মক্কার অনুর্ধ্ব তিন কিলোমিটার দূরে হাজিদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। আর মদিনায় আবাসন হবে অনুর্ধ্ব দেড় কিলোমিটার দূরে।
আগামী বছরের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের দুটি প্যাকেজ কয়েকদিন আগে ঘোষণা করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
গত ৩০ অক্টোবর পবিত্র হজসংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভা শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে করে ‘হজ প্যাকেজ-২০২৫’ ঘোষণা করেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
উপদেষ্টা জানান, সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার জন্য দুটি প্যাকেজ রয়েছে। এর মধ্যে সাধারণ হজ প্যাকেজ-১-এর জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা, যা চলতি বছরের চেয়ে ১ লাখ ৯ হাজার ১৪৫ টাকা কম। আর প্যাকেজ ২-এর জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা, যা চলতি বছরের চেয়ে ১১ হাজার ৭০৭ টাকা কম।
এছাড়া সরকারি মাধ্যমে বিশেষ হজ প্যাকেজ ঘোষণা না করা হলেও বেসরকারি মাধ্যমে এজেন্সিগুলোর জন্য বিশেষ একটি হজ প্যাকেজ ঘোষণার সুযোগ রেখেছে মন্ত্রণালয়।
২০২৫ সালে বেসরকারি মাধ্যমে সাধারণ হজ প্যাকেজের খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৮৩ হাজার ১৫৬ টাকা, যা গতবারের চেয়ে ১ লাখ ৬ হাজার ৬৪৪ টাকা কম।
হজ এজেন্সি মালিকদের সংবাদ সম্মেলনে হাবের সাবেক কমিটির মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, সরকার যে হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে তাতে ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ রয়েছে। এতে হজযাত্রীদের খরচ কমবে না, বরং বাড়বে। সরকার ঘোষিত প্যাকেজে খাবারের খরচ ধরা হয়নি। তাই সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা হজ প্যাকেজ ঘোষণা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রত্যেক হজযাত্রী ন্যূনতম ৩ লাখ টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধিত হতে পারবেন। হজ প্যাকেজের অবশিষ্ট সমুদয় অর্থ আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি মধ্যে অবশ্যই স্ব স্ব এজেন্সির ব্যাংক হিসাবে অথবা এজেন্সির অফিসে জমা দিয়ে রসিদ গ্রহণ ও সংরক্ষণ করবেন।
হজে যেতে ইচ্ছুকদের কোনোভাবেই মধ্যস্বত্বভোগীদের সঙ্গে লেনদেন করতে বারণ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
আরও বলা হয়, প্রত্যেক হজযাত্রী হজ প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত সুযোগ সুবিধার বিষয়ে অবগত হয়ে এজেন্সির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবেন। এ বছর ৬৫ বা তদূর্ধ্ব বয়সীরাও হজে যেতে পারবেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ৫ জুন পবিত্র হজ পালিত হতে পারে।
এবার বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে পারবেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার জনকে নেওয়ার পরিকল্পনা আছে। বাকিরা যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।
পূর্বকোণ/পিআর