শরৎ এর পড়ন্ত বিকেলে বিস্তীর্ণ প্রতিটি গাছের পাতা যেন হলুদ বর্ণে ঘেরা সপ্নিল পৃথিবী। প্রান্তর জুড়ে উঁকি দিচ্ছে ম্যাপেল গাছের হলুদ পাতা শীতের সোনাঝরা রোদে ঝিকিমিকি করছে। এ এক অপরূপ সৌন্দর্য। যেন প্রকৃতি কন্যা সেজেছে ‘গায়ে হলুদ বরণ সাজে’।
যতদূর চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। দূর আকাশ ঠেকে গেছে সেই হলুদে। চারিদিকে হলুদের সমারোহ আর প্রকৃতির মিষ্টি গন্ধ।
ঝরে পড়া শুকনো পাতা ঝরা রাস্তা নিরিবিলি কোন পার্ক, এই ছোট্ট বিষয়টাকেও কেমন একটা সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে!
ঝরা পাতার এই নির্জন রাস্তার মধ্যে অনেক সময় জীবনের একাকীত্ব, নিজর্নতা, প্রকৃতির উপেক্ষার স্বাদ পাওয়া যায়। ইচ্ছে কিংবা অনিচ্ছায় মাঝে মধ্যে এই ভয়ংকর সৌন্দর্য উপভোগ করার সময়গুলো অন্যরকম ভালো লাগে!
সূর্যটা আস্তে আস্তে ঢলে পড়ছে পশ্চিমে, হুড় হুড় করে বয়ে চলা বাতাস একটু জোড়েই বইতে শুরু করেছে। খুব করে ভাবছিলাম এই বাতাসটার নাম কি দেব, ‘উইন্ড’ নাকি ‘ব্রিজ’।
চারদিকে ঝরাপাতার মাতাল একটা গন্ধ, অদ্ভুত রকমের ভাল লাগার মত একটা বিকেল, উদাস করে দেবার মত একটা বিকেল, মনের সবটুকু জড়তা কেড়ে নেবার একটা বিকেল, প্রফুল্লতায় মন ভরে দেয়া একটা বিকেল।
অনেকদিন দেখি না ঝরা পাতা আর সূর্য ডোবার আশ্চর্য সেই গন্ধ। আমি বসে আছি, বসেই আছি সেই ঝরা পাতার উপরে! খুব কথা বলতে ইচ্ছে করছে প্রিয় কোন মানুষের সাথে, ঠিক আমার পাশে বসা, ছোট্ট লেকের পাড়ে, হলুদ ম্যাপল গাছের নিচে, শরৎ-হেমন্তের ঠিক সংযোগ বেলায়, হলুদ কাপড়ে বেষ্টিত হয়ে!
লেখক: মোহাম্মদ আলম সানু, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, মন্ট্রিল, কানাডা।
পূর্বকোণ/জেইউ