দীর্ঘ বছর ধরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে যুক্ত তরুণ চিকিৎসক ওমর ফয়সাল। বহু বছর ধরেই নিয়মিত স্বেচ্ছায় রক্তদান করে যাচ্ছেন তিনি। এবার অঙ্গীকার করেছেন মরণোত্তর চক্ষুদানও করবেন এ চিকিৎসক। তবে এ চিকিৎসকের স্বেচ্ছায় মরণোত্তর চক্ষুদানে আগ্রহী হলেও দেশের অধিকাংশ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে আগ্রহ খুবই কম।
স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান নিয়ে যারা কাজ করেন, তারা বলছেন, স্বেচ্ছায় রক্তদানে দেশ অনেকটা এগিয়ে গেলেও মরণোত্তর চক্ষুদান পরিস্থিতি নাজুক পর্যায়ে। এখনো দেশের মানুষের মধ্যে মরণোত্তর চক্ষুদান নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দ কাজ করে। তাই এ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ তাদের।
সন্ধানী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেন, রক্তদানের ক্ষেত্রে মানুষের যেমন আগ্রহ আছে, মরণোত্তর চক্ষুদানের ক্ষেত্রে সেই আগ্রহটা কম। যদিও আগের চেয়ে মানুষের মন-মানসিকতায় কিছুটা পরিবর্তন এসেছে, কিন্তু সেটা এখনো সমাজের একটা শ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ। অনেকের মধ্যেই এ নিয়ে সামাজিক ও ধর্মীয় দ্বিধা কাজ করে। দীর্ঘদিন ধরে সন্ধানী ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে এ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, মানুষের চোখের ওপর কালচে গোলাকার স্বচ্ছ ও প্রতিস্থাপনযোগ্য পর্দাকে কর্নিয়া বলা হয়। এই কর্নিয়া সংক্রমিত হলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে দৃষ্টিশক্তি লোপ পেয়ে মানুষ অন্ধ হয়ে যায়। অন্য কারও কর্নিয়া নিয়ে তা প্রতিস্থাপন করার মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেতে পারে। বাংলাদেশে অন্ধ মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ। এর মধ্যে কর্নিয়াজনিত সমস্যায় পাঁচ লাখের বেশি মানুষ দৃষ্টিহীন।
এমন বাস্তবতার মধ্যেই দেশে আজ ২ নভেম্বর (শনিবার) পালিত হচ্ছে জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘এসো প্রাণের ছোঁয়ায় গড়ি রক্তের বন্ধন, চোখের জ্যোতি হয়ে উঠুক প্রাণের স্পন্দন’। মৃত্যুর পূর্বে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত চক্ষুদানের ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করে থাকে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এই চক্ষু ব্যবহার করতে পারেন এবং স্বেচ্ছায় রক্তদান করতে পারেন সে ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করতেই প্রতিবছর এ দিবসটি পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে চট্টগ্রামসহ সারাদেশেই সরকারি বেসরকারি ও বিভিন্ন সংস্থার উদ্যোগে দিবসটি পালন করা হয়। চট্টগ্রামেও দিবস উপলক্ষে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, আলোচনা সভা ও র্যালির আয়োজন করেছে সন্ধানীসহ বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে।
পূর্বকোণ/এএইচ