চট্টগ্রাম শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আঘাতের পর শক্তি হারাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’

অনলাইন ডেস্ক

২৫ অক্টোবর, ২০২৪ | ১:৪৪ অপরাহ্ণ

ভারতের উড়িষ্যা ও পশ্চিমঙ্গের উপকূলে তাণ্ডব চালিয়ে ধীরে ধীরে শক্তি হারাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’।

 

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় স্থলভাগে ঢুকতে শুরু করেছিল ঘূর্ণিঝড়টি। শুক্রবার ভোরে স্থলভাগ অতিক্রম করেছে।

 

স্থলভাগে আঘাত হানার সময় উড়িষ্যা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। তবে শুক্রবার সকালে ঝড়ের তাণ্ডব শেষ হওয়ার পর গতি কিছুটা কমেছে। আবহাওয়া দপ্তরের তথ্যে আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, বর্তমানে উপকূল এলাকায় ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইছে। শক্তি হারিয়ে তা এখন ‘সাধারণ’ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। বিকালের মধ্যে আরও কিছুটা শক্তিক্ষয় করে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ‘দানা’।

 

এর আগে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডি টিভি জানায়, উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উপকূলে বেশ শক্তি নিয়েই আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় দানা। ফলে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কয়েকটি অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাত এবং প্রবল ঝোড়ো বাতাস বইছিল। তবে দুটি রাজ্য সরকারই সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা করার চেষ্টা করেছে।

 

ঘূর্ণিঝড়টি উড়িষ্যার কেন্দ্রাপাড়া জেলার ভিতরকণিকা এবং ভদ্রকের ধামরার মধ্যে ঘণ্টায় প্রায় ১১০ কিলোমিটার গতিবেগ নিয়ে আছড়ে পড়ে। উড়িষ্যার উপকূল অঞ্চল ভদ্রক, কেন্দ্রাপাড়া, বালেশ্বর এবং জগৎসিংহপুর জেলায় বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড় দানার তাণ্ডব শুরু হয়। আনন্দবাজার পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় দানা বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে সাড়ে তিনটার মধ্যে (স্থানীয় সময়) ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে উড়িষ্যার উত্তর উপকূল অতিক্রম করে।

 

ঝড়ের এই তাণ্ডব পরবর্তী ১-২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকবে বলে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)। কাতারের নামকরণ করা ‘দানা’ শুক্রবার দুপুরের মধ্যে ধীরে ধীরে দুর্বল হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া সংস্থা। এদিকে উড়িষ্যার রাজধানী ভুবনেশ্বরে স্পেশাল রিলিফ কমিশনারের অফিসে গাছ উপড়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। রাজ্যের প্রতিবেশী পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরেও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব দেখা গেছে।

 

সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসাবে ভুবনেশ্বরের বিজু পট্টনায়ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে পরিষেবা স্থগিত করা হয়। উড়িষ্যা থেকে ১০ লাখ ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রায় ৩ লাখ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দুই রাজ্যেই স্কুল ও কলেজ শনিবার বন্ধ থাকবে। এমনকি উভয় রাজ্যই দুর্ঘটনা এড়াতে ৪০০টিরও বেশি ট্রেন বাতিল করেছে এবং বিমান চলাচল স্থগিত করেছে।

 

উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝির নেতৃত্বাধীন সরকার জানিয়েছে, তারা প্রায় ৬ লাখ মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে। জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (এনডিআরএফ) দল, উড়িষ্যার দুর্যোগ র‍্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (ওডিআরএএফ) ৫১, দমকল পরিষেবা এবং বন কর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত ৩৮৫টি উদ্ধারকারী দল মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও উড়িষ্যা পুলিশের প্রায় ১৫০ প্লাটুন সদস্য উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, উপকূলীয় এলাকার ২,৪৩,৩৭৪ জন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে।

 

তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কলকাতায় তেমনভাবে পড়েনি। বলা হয়েছিল, কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে। রাতের দিকে ঝোড়ো হাওয়ার বেগ কিছুটা বেড়েছিল। বৃষ্টিও তুলনামূলক কম হয়েছে কলকাতায়।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন