আমরা নিজেদের কাজগুলো সবসময় নির্ভুল মনে করি। আমরা যখন ভাবি বা কোনো কিছু বলি, এটা ভেবেই বলি যে, আমরা সঠিক। নিজেদের দোষত্র“টি খুঁজে বের করে নিজেই সমাধান করা সহজ কাজ নয়। যারা আত্মকর্মে অন্ধ-মুগ্ধ নন, তারা কাজে সফল হবেন। কর্মক্ষেত্রে নিজের ভুল বের করে দ্রুত সমাধান করবেন কীভাবে জেনে নিন।
সমালোচককে শ্রদ্ধা করুন, যা আমরা সহজে করতে পারি না। বরং উল্টোটাই করি। আমাদের দোষত্র“টি আড়ালে রেখে যে তোষামোদ করে তাকে হৃদয়ে স্থান দিই। যে সমালোচনা করে উপকার করে সে হয় চক্ষুশূল। প্রেক্ষাপট পাল্টাতে হবে।
আপনার কাজের প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করুন। ভালো, মন্দ, কেন ভালো, কেন মন্দ, আজ ভালো, কাল মন্দ হবে না তো? ভাবুন, বোঝার চেষ্টা করুন। সমালোচনা যাচাই করুন। ভুল হলে শুধরে নিন। সঠিক হলে নিজের অবস্থান অনড় রাখুন। তোষামোদি যেমন সঠিক নয়, সমালোচনাও বেঠিক নয়। বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিন।
আপনি যা করছেন তা ভুল হতেই পারে না, এমন ব্রত থেকে বেরিয়ে আসুন। নেতিবাচক দিকগুলোকেও ইতিবাচকভাবে নিন এবং ভেবে দেখুন, যাচাই করুন, আসলেই ভুল ছিল কি না।
আপনার বিশ্বস্ত সহকর্মী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে কাজের পদ্ধতির, আচরণের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করুন। মতামত ও প্রতিক্রিয়াগুলো শুনুন। নোট নিন।
আপনি যখন কাজ দ্বিধাদ্বন্দ্বে থেকে করেন সে কাজগুলোই ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ ধরনের জটিল কাজগুলোর তালিকা করুন। পরবর্তী সময়ে কর্মফল দেখে সিদ্ধান্ত ভুল ছিল কি না দেখুন এবং লিখে রাখুন। কিছুদিন পরেই দেখবেন, বিশ্লেষণ করার জন্য আপনার হাতে যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত জমা হয়েছে। কাগজ-কলম নিয়ে আটঘাট বেঁধে বসার অভ্যেসটাই নেই ফলে অনেক কিছু চাইলেও করতে পারেন না।
আপনি অভ্যাস তৈরি করুন তারপর অভ্যাস আপনাকে তৈরি করবে। অভ্যাসবশত যেমন অন্যের সমালোচনায় মুখর হই। এর পরিবর্তে নিভৃতে আত্মসমালোচনা বা নিজের দোষত্র“টি খোঁজার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। আত্মসমালোচনা আত্মশুদ্ধির বড় অস্ত্র।
ইতিবাচক মনোভাব ধরে রাখুন। আত্মসমালোচনা বা নিজের ভুলগুলো খুঁজতে গিয়ে যা করেন তাকেই ‘ঠিক হচ্ছে না’, ‘সব ভুল’, ‘আমাকে দিয়ে হবে না’ এই ধরনের নেতিবাচক ধারণায় আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়েন। যা বড় ক্ষতি। কোনোভাবেই মনোবল হারাবেন না। মানুষের মতো নিজের ভুলগুলো খোঁজার চেষ্টা করছেন, তার মানে এই নয় যে আপনি যা করছেন সবই ভুল বা আপনাকে দিয়ে কিছুই হবে না। এই ব্যাপারটার দিকে খেয়াল রাখুন।
নিজের কৃতকর্মের পাশাপাশি সহকর্মী ও ঊর্ধ্বতনদের কার্যক্রমের দিকেও নজর রাখুন। এমন কি কিছু আছে যা অন্যে সঠিক করছে কিন্তু আপনি ভুল করছেন?
যে কাজগুলোকে আপনি সঠিক বলে প্রমাণ পেয়েছেন সে কাজগুলো অভ্যাসে পরিণত করুন। সঠিক কাজের অভ্যাস অনেক ভুল কাজ থেকে রক্ষা করবে।
স্মৃতিচারণ করুন। দেখবেন, কত ভুল চোখের সামনে জ্বলজ্বল করছে। সময় অভিজ্ঞ করে তোলে। ধরিয়ে দেবে কী কী আপনি ভুল করেছিলেন। যদি সচেতন হন, তাহলে আপনি নিজেকে শুধরাবেন। সদিচ্ছা অন্যতম বড় ভূমিকা পালন করবে। নিজের দোষত্র“টি খোঁজা এবং সমাধান করা সম্পূর্ণ আপনার ব্যাপার। নিজের সঙ্গে নিজের সংঘর্ষ, সংঘাত, দ্বন্দ্ব, বোঝাপড়া আর সমঝোতার ব্যাপার।
পূর্বকোণ/পিআর