চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

সীতাকুণ্ডে আউশের সোনালি ধানে কৃষকের মুখে হাসি   

সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকুণ্ড

১৫ অক্টোবর, ২০২৪ | ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ

প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘনঘটার মধ্যে সীতাকুণ্ডে আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে কৃষকরা ক্ষেত থেকে সোনালি ধান কেটে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। আর ক্ষেত থেকে ধান বাড়িতে আনার পর চলছে ধান মাড়াইয়ের উৎসব।

 

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধানক্ষেত ঘুরে দেখা যায়, সব আউশের জমি সোনালি ধানে পরিপূর্ণ। অনেক জমি থেকে কাটা হচ্ছে ধান। কৃষকরা জানান, অনেক কৃষক ইতিমধ্যে ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে মাড়াইয়ের কাজও শেষ করেছেন। ফলে কৃষককূলে আনন্দ বিরাজ করছে। সীতাকুণ্ড পন্থিছিলা এলাকার অজয় বড়–য়া বলেন, কৃষি অফিস থেকে ফ্রি আউশ-৭ জাতের সুগন্ধি হাইব্রিড বীজ ৩৪ শতক জমিতে রোপণ করেছি। সুগন্ধি ধানের উৎপাদন অনেক ভাল হয়েছে। এবার গতবারের চেয়ে আউশ ধানের উৎপাদন ভাল হয়েছে।

 

 

পৌরসদরে দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহ্ আলম বলেন, শুধু এই ব্লকে ৯৮০ জন কৃষক আউশের চাষ করেছেন। আমরা অনেককেই বিনামূল্যে বীজসহ অন্যান্য সাপোর্ট ও পরামর্শ দিয়েছি। ফলন খুব ভাল হয়েছে। পূর্ব সৈয়দপুর বাঁকখালী গ্রামের কৃষক মো. আলী জানান, এবার অতি বৃষ্টির কারণে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ও বাতাসে আউশ ধানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে জমি থেকে পানি সরে যাওয়ার পর শেষ পর্যন্ত আশানুরুপ ফলন পাওয়া গেছে।একই এলাকার চাষী মো. দিদারুল আলমও চলতি মৌসুমে তার ৩২ শতক জমিতে আউশ জাতের হাইব্রিড ধানের চাষ করেছেন। পাহাড়ি ঢলের কিছু চারা নষ্ট হলেও পরে ধান সংগ্রহ করে মাড়াই করার পর তা ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছেন এবং আশানুরূপ লাভবান হবেন বলে আশাবাদী।

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, তবে এবার মৌসুমের শুরুটা ভালো ছিলো না। প্রবল বর্ষণে জলাবদ্ধতায় বীজতলার প্রচুর চারা নষ্ট হয়। এক পর্যায়ে সৈয়দপুর এলাকায় হীরা টু-আউশ জাতের বীজ দিয়ে আবারও বীজতলা তৈরি করা হয়। তাতে কৃষকরা সফল হন। বর্তমানে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের পর গোলায় তোলা হচ্ছে।

 

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, রোপা আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর ৫০৩০ হেক্টর জমিতে ১৮৫৬০ জন কৃষক ব্রিধান-৪৮, ব্রিধান ৯৮ জাতের আউশ ধানের চাষ করেছেন। এছাড়া উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড-৭ জাতের ধান চাষ হয়েছে এবার। এতে করে হেক্টর প্রতি ধান উৎপাদন হয়েছে ৪.৫ মেট্রিক টন। তবে মৌসুমে বন্যায় অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্তও হয়েছেন। এতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত আবার কেউ লাভবান হওয়ায় গড়ে উৎপাদন গত বছরের থেকে কম হয়েছে। বন্যা না হলে ফসল আরো অনেক বেশি হতো।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট