চট্টগ্রাম বুধবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৪

ইসরায়েল-ইরান মুখোমুখি : সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে মধ্যপ্রাচ্য

মুহাম্মদ মোরশেদ আলম

৭ অক্টোবর, ২০২৪ | ২:০০ অপরাহ্ণ

পুরো বিশ্বের নজর এখন মধ্যপ্রাচ্যের দিকে। ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে মধ্যপ্রাচ্য। বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি ইসরায়েলের বিমানবন্দর ও ডিমোনা এলাকার পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রের মতো স্পর্শকাতর কৌশলগত স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ১৮০টির মতো ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইরান। এ অবস্থায় এক কোটি ইসরায়েলিকে বোমা থেকে বাঁচানোর জন্য সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আশ্রয়কেন্দ্রে দ্রুত পাঠানো হয়। দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে ইসরায়েল সরকার। বন্ধ করে দেওয়া হয় দেশটির আকাশসীমা। বাংকারে আশ্রয় নেন ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার সদস্যরা। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র আটকে দিতে পেরেছে, তবে অল্পসংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে আছড়ে পড়েছে। তবে এ হামলার কৌশলগত দিক বিশ্লেষণ করে আমেরিকার ইনস্টিটিউট ফর দ্যা স্টাডি অফ ওয়ার বলছে, এত বেশিসংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র এমনভাবে ছোড়া হয়েছে যেটি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে চাপে ফেলেছে। আয়রন ডোমসহ শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকলেও ইরানের হামলা পুরোপুরি ঠেকাতে পারেনি ইসরায়েল।

 

 

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সামরিক সক্ষমতায় শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে র‌্যাঙ্কিংয়ে ইরানের অবস্থান ১৪তম আর ইসরায়েলের অবস্থান ১৭তম। ইরানের অস্ত্র সরঞ্জামের বড় যোগানদাতা রাশিয়া হলেও ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকেই নিজেদের তৈরি ড্রোন দিয়েছে ইরান। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের মতে, ইসরায়েলের আনুমানিক ৯০টি পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র রয়েছে। এদিকে ধারণা করা হয়, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র নেই। তবে তার রয়েছে খুবই সমৃদ্ধ পারমাণবিক কর্মসূচি। দেশটি বেশকিছু পারমাণবিক স্থাপনা ও গবেষণাকেন্দ্র পরিচালনা করছে।

 

 

এই ঘটনার পর ইরান-ইসরায়েল একে অন্যের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন ‘ইরান বড় ভুল করেছে এবং এজন্য তাকে মূল্য দিতে হবে’। দুই দেশের এই পাল্টাপাল্টি হুমকির ঘটনায় দীর্ঘদিন ধরেই মধ্যপ্রাচ্যে যে আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তা বাড়িয়ে তুলেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে তেহরান হুশিয়ারি দিয়ে বলেছে, তাদের অভিযান আপাতত শেষ। কিন্তু ইসরায়েল হামলা চালালে তারাও পাল্টা আঘাত হানবে এবং পরিণতি হবে ভয়াবহ। ইসরায়েলি ভূখণ্ডের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণ হিসেবে দেশটি বলছে, তারা গাজা ও লেবাননে হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি হামাস, হিজবুল্লাহ এবং আইআরজিসি নেতাদের হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এপ্রেক্ষিতে ৫ বছর পর প্রথমবারের মতো গত জুমার খুৎবায় ইরানের সর্বচ্চো ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, আমাদের সবার শত্রু একটাই। আর সেটা হলো ইসরায়েল। তিনি ইসরায়েলে ইরানের হামলার প্রশংসা এবং এ হামলাকে সম্পূর্ণ ‘বৈধ’ বলে অভিহিত করে বলেন, ইরান যা করেছে, তা ইসরায়েলের করা ‘বিরাট অপরাধের’ ‘ন্যূনতম শাস্তি’ মাত্র। খুৎবায় আয়াতুল্লাহ খামেনি মুসলিমবিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ থেকে প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে ইসরায়েলের আগ্রাসন প্রতিরোধকারী আরব গোষ্ঠীগুলোর প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। ইসরায়েলের সহযোগীরা বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ইসরায়েলের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন অব্যাহত থাকবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, ইরানের আক্রমণের জবাব ইসরায়েল কীভাবে দেবে তা নিয়ে আলোচনা করছে ওয়াশিংটন-তেল আবিব। তারা এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, কানাডাসহ তাদের মিত্র দেশগুলোর সাথে কথা বলেছে। ইরানি হামলার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলছি, ওই হামলার পরিণাম সইতে হবে আর তা হবে মারাত্মক এবং আমরা ইসরায়েলের সঙ্গে কাজ করব।’

 

 

ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরানের ‘প্রতিশোধমূলক’ হামলায় সমর্থন জানিয়েছে রাশিয়া। তেহরানের এ হামলা নেতানিয়াহু সরকারের ক্রমাগত অপরাধ ও ইসমাইল হানিয়া এবং নাসরাল্লাহ হত্যার প্রতিক্রিয়া ছিল বলে উল্লেখ করেছে মস্কো। ইসরায়েল এ হামলার জবাব দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল দানিয়েল হাগারি। তিনি বলেন, ‘এ হামলার জন্য পরিণতি ভোগ করতে হবে। এ নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। আমরা যথাস্থানে ও যথাসময়ে হামলার সিদ্ধান্ত নেব।’ মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের তেল স্থাপনাগুলোকে নিশানা করার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। এদিকে, বাহরাইন, ওমান, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কুয়েত- এই ছয়টা উপসাগরীয় রাষ্ট্রের সমন্বয়ে তৈরি ‘গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল’ বা জিসিসি লেবাননের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার প্রতি সমর্থন জানিয়ে একটা বিবৃতি জারি করেছে। এতে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে। উপসাগরীয় দেশগুলো নিজেদের তেল সরবরাহ ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য কোনও ধরনের সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি এড়াতে সচেষ্ট। এদিকে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার তাৎক্ষণিক নিন্দা না করায় ইসরাইল জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা করার পর বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ তার প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেছে।

 

 

শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরুল্লাহ। এর তিনদিন পর সোমবার রাতে লেবাননে সেনা পাঠিয়ে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। তবে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের কঠোর প্রতিরোধের মুখে লেবাননে ১ অক্টোবর শুরু করা স্থল অভিযান বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে ইসরায়েল। কিন্তু তারা বৈরুতে মুহুর্মুহু বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে। লেবাননের ক্রাইসিস ইউনিটের মতে, যুদ্ধের কারণে এখন পর্যন্ত লেবাননের প্রায় ১২ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত হয়েছে। এতে অন্তত আটজন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় লেবাননে এ পর্যন্ত ২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ১২৭ শিশু এবং ২৬১ জন নারী রয়েছে। বর্তমানে ইসরায়েলি সৈন্যরা গাজা ও লেবানন দুটি স্থানে একই সাথে অভিযান পরিচালনা করছে। যা গত কয়েক দশকে দেখা যায়নি। হেজবুল্লাহর ভয়াবহ ক্ষতি হওয়া সত্তে¡ও তারা লেবাননে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইয়েমেনর হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠীও হামলা চালাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ইরাক থেকে উত্তর ইসরায়েলে চালানো ড্রোন হামলায় তাদের দুই সেনা নিহত হয়েছেন। এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ২৪ জন। ইরাকে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স এই হামলার দায় স্বীকার করেছে, তাদের দাবি উত্তর ইসরায়েলে তিনটি লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে তারা। ১৯৭৩ সালের পর এই প্রথম কোনো ইরাকি হামলায় ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এদিকে ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের বার্ষিকী। গতবছর এই দিনে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ৩০০ সেনাসহ প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। ২৫১ জনকে গাজায় নিয়ে বন্দী করা হয়। ওই দিন থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। হামাসের হামলার জবাবে শুরু হওয়া আভিযানে এক বছরে প্রাণ হারিয়েছেন ৪১ হাজার ৬৮৯ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ৯৬ হাজার ৬২৫ জন। ইসরায়েলের নির্বিচার বিমান ও স্থল হামলায় নিহত ও আহতদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। জাতিসংঘের তথ্যানুসারে, ইসরায়েলি বোমা বর্ষণের ফলে গাজা উপত্যকায় প্রায় ১৯ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ফলে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 

হিজবুল্লাহ ছাড়াও ইয়েমেনের হুথি এবং সিরিয়া ও ইরাকে বিভিন্ন গোষ্ঠীকে সমর্থন দিচ্ছে ইরান। দেশটি গোষ্ঠীগুলোকে ইসরায়েল এবং অঞ্চলের মার্কিন ঘাঁটিগুলোর ওপর আক্রমণ বাড়ানোর আহ্বান জানাতে পারে। তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলেছন, ইরান যে প্রক্রিয়াই পছন্দ করুক না কেন, সেটি একটি যুদ্ধ শুরু করার জন্য যথেষ্ট নয়। তবে তারা এও বলছেন, রাশিয়া, চীন, উত্তর কোরিয়ার মতো দেশগুলো ইরানের পাশে দাঁড়ালে যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী রূপ নিতে পারে। যেমন আমেরিকা ও তাদের মিত্রদের সহযোগিতার কারণে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখনও চলছে। মার্কিন মদদপুষ্ট ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে টিকে থাকতে হলে উপসাগরীয় দেশগুলোসহ মুসলিমবিশ্বের সমর্থনের প্রয়োজন হবে ইরানের। ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর সবচেয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্য। ইরানের এই হামলার পর ইসরায়েল কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে তা নিয়ে পুরো মধ্যপ্রাচ্য, এমন কী গোটা বিশ্ব মঙ্গলবার (২ অক্টোবর ) থেকে ব্যাপক উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা দীর্ঘদিন ধরেই ইসরায়েলের জন্য ভয়ের কারণ হয়ে আছে। তাদের লক্ষ্যবস্তু হতে পারে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা থেকে শুরু করে মঙ্গলবারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা যেখান থেকে হয়েছে কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ রাখা ও যেখান থেকে নিক্ষেপ করা হয়েছে রিভল্যুশনারি গার্ডের ঘাঁটি পর্যন্ত। ইসরায়েলের পাল্টা আক্রমণ নিশ্চিতভাবেই ইরানের পক্ষ থেকে আরেক দফা প্রতিক্রিয়া ডেকে আনবে। ফলে তা উত্তরোত্তর বেড়েই যাবে। ফলে ইসরায়েল আর ইরানের মধ্যে সরাসরি এই সংঘাত সহজে থামবে না। এভাবে যুদ্ধ বেড়েই যেতে থাকলে এর শেষ কোথায় তা বলা কঠিন।

 

 

এমনিতেই করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের বহু দেশকে অর্থনৈতিক মন্দার সাথে লড়তে হচ্ছে। এখন ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হলে বৈশ্বিক অর্থনীতি যে মারাত্মক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে তাতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। মধ্যপ্রাচ্য এখন একটি সর্বাত্মক আঞ্চলিক যুদ্ধের মধ্যে রয়েছে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ডনের অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর রাইদ জারার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি তাদের অবস্থান থেকে সরে না আসে, তাহলে এর সমাপ্তি ঘটবে না। বিশ্লেষকদের মতে, মধ্যপ্রাচ্য তো বটেই দুয়ারে কড়া নাড়তে থাকা মার্কিন নির্বাচনে পর্যন্ত দুই দেশের সংঘাতের আঁচ লাগতে পারে।

 

লেখক : যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সাংবাদিক

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট