চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর সংক্রমণ আগস্ট মাসের তুলনায় চলতি মাসের গেল ২৫ দিনেই বেড়েছে প্রায় চারগুণের বেশি। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী ছিল নগরীতে। যারা বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এডিস মশার কামড়ে চলতি মাসে যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল নগরীর তিন এলাকার বাসিন্দা। যাকে ‘হটস্পট’ হিসেবেই দেখছেন স্বাস্থ্য বিভাগ।
এদিকে, দিনদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বাড়তে থাকলেও নগরীতে মশক নিধন কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে। যদিও চসিকের মশক নিধন কর্মকর্তার দাবি, নিয়মিতই ওষুধ ছিটানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। তবে নগরবাসীর অভিযোগ, চসিকের মশক নিধন কার্যক্রম অনেকটাই ভাটা পড়েছে। যার কারণে মশার কামড় থেকে মুক্তি মিলছে না।
অন্যদিকে, মশার উৎপাত এবং হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় নগরীর চিহ্নিত এলাকাগুলোতে জরিপের কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন। যেখানে বেশ কিছু এলাকায় এডিস মশার লার্ভাও সংগ্রহ করা হয়েছে। খবর নিয়ে জানা যায়, চলতি মাসের শুরু থেকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের তথ্য পর্যালোচনা করে স্বাস্থ্য বিভাগ। এরমধ্যে নগরীর তিন এলাকা থেকে সর্বোচ্চ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। যা ইতোপূর্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সিটি কর্পোরেশনকে অবহিত করা হয়েছে। তিন এলাকা হলো- নগরীর বাকলিয়া, কোতোয়ালী এবং বায়েজিদ এলাকা। এ তিন এলাকা থেকেই সবচেয়ে বেশি রোগী মিলেছে। প্রাপ্ত তথ্যঅনুসারে, বাকলিয়া এলাকায় ৫৫ জন, কোতোয়ালী এলাকায় ৪৬ জন, বায়েজিদে ৩৬ জন, পাহাড়তলী এলাকায় ১৩ জন, খুলশী এলাকায় ১৩ জন, বন্দর এলাকায় ৯ জন, হালিশহর এলাকায় ৭ জন, পতেঙ্গা এলাকায় ৫ জন, চকবাজার এলাকায় ৫ জন ও চান্দগাঁও এলাকায় ৫ জন। এসব রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, চলতি মাসে ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার চিত্র উদ্বেগজনক। ইতোমধ্যে কারণ খুঁজতে কীটতত্ত্ববিদরা কাজ করছেন। কয়েকটি এলাকা থেকে রোগীর সংখ্যা বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত তিনটি এলাকায় সবচেয়ে বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ওই এলাকায় স্বাস্থ্য বিভাগের টিম সরেজমিনে গিয়ে বাসাবাড়িতে এডিসের লার্ভাও সংগ্রহ করেছেন। যদি এখনই আলোচ্য এলাকাগুলোতে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয়, তাহলে সামনে আরও ভয়াবহ হতে পারে।মানুষের সচেতনতা বাড়াতে হবে পরামর্শ দিয়ে সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, বাসা-বাড়ি ও আঙ্গিনা পরিষ্কার রাখতে হবে। পরিবারের কারও জ¦র হলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। এই সময়ে ডেঙ্গু পরীক্ষাও করা জরুরি। প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।
এদিকে, মশক নিধন কার্যক্রমের বিষয়ে জানতে চাইলে চসিকের ম্যালেরিয়া ও মশক নিধন কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম মাহি বলেন, আমাদের লোকবল ও যন্ত্রপাতির অনুপাতে আমরা নিয়মিত ওষুধ দিচ্ছি। তারপরও কিছু কিছু এলাকায় মশার উৎপাতের তথ্য আপনাদের মাধ্যমেও পাচ্ছি। নগরীর প্রতিটি এলাকায় ৩ থেকে ৫ দিন পর পর ফগিং করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
পূর্বকোণ/এএইচ