চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

বিএফআইইউর প্রধান ও চবির সাবেক উপাচার্যের দুর্নীতির অনুসন্ধানে দুদক

অনলাইন ডেস্ক

২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৪:২৯ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সাবেক প্রধান কর্মকর্তা মাসুদ বিশ্বাস এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শিরীন আখতারের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

 

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ।

 

দুদকের গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, মাসুদ বিশ্বাস বিএফআইইউর প্রধান কর্মকর্তা পদে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ক্ষমতার চরম অপব্যবহার করেছেন। নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন। ঘুষের বিনিময়ে স্কাই ক্যাপিটাল এয়ারলাইন্স লিমিটেডের বিমান ক্রয়ে সন্দেহজনক অনিয়মের অভিযোগ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে পাঠাননি। এনআরবি কমার্সিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান তমাল পারভেজ ব্যাংক থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। তার সেই আর্থিক অনিয়মের রিপোর্টকে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা, ২০১৯ এর আওতায় গোয়েন্দা প্রতিবেদন না পাঠিয়ে মাসুদ বিশ্বাস সাধারণ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন হিসেবে সংশ্লিষ্টদের পাঠানোর অনুমতি দেন।

 

অনিয়ম ও অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে শেয়ার বাজারের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিমিদ্রী লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়। ওই স্থতিগাদেশকে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন মাসুদ বিশ্বাস। তানাকা গ্রুপ, এস এ গ্রুপ এবং আনোয়ার গ্রুপের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং, অর্থপাচার সংক্রান্ত সুনিশ্চিত তথ্য থাকা সত্ত্বেও ওসব কেস আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে না পাঠিয়ে ব্যক্তিগত সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে নথিভুক্ত করেন তিনি। এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম মাসুদের সঙ্গে যোগসাজশে ইসলামী ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন মাসুদ বিশ্বাস। আবদুল কাদির মোল্লার থার্মেক্স গ্রুপ থেকে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে বিদেশে অর্থ পাচারসহ ঘুষের বিনিময়ে জিনাত এন্টারপ্রাইজের বিদেশে অর্থ পাচারের কেস ধামাচাপা দিয়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন তিনি। অবৈধভাবে অর্জিত তার জ্ঞাত-আয় বর্হিভূত বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে সঠিক প্রমাণিত হয়েছে।

 

অন্যদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শিরীণ আখতার ক্ষমতার অপব্যবহার করে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি ঘুষ গ্রহণ ও অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যসহ দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। প্রতিটি পদে নিয়োগের জন্য ১৬ থেকে ২০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ, বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ, সংবিধি ও শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালার তোয়াক্কা না করে বিধি বহির্ভূতভাবে শতাধিক শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। ২০২৩ সালের ৪ জুন ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন সাবেক এই উপাচার্য। তিনি চবির মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদের অ্যাকাডেমিক ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৪৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা এবং একই দিনে অন্য একটি সভায় ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ দেখিয়ে আত্মসাৎ করেন। স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়ে নিজস্ব সিন্ডিকেট তৈরি করে ঘুষ গ্রহণ ও অবৈধভাবে আর্থিক সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে দুদকের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। তার অবৈধভাবে অর্জিত জ্ঞাত-আয় বর্হিভূত সম্পদ রয়েছে। এসব কারণে সাবেক বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শিরীন আখতারের দুর্নীতির অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট